রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট

মিরাজের বিদায়ে ভাঙল ইতিহাস গড়া জুটি

ছবি: এএফপি

২৬ রানে নেই ৬ উইকেট। এমন মহাবিপর্যয়ে বাংলাদেশের অল্পতে গুটিয়ে যাওয়ার জোরালো সম্ভাবনা দেখা দিল। কিন্তু ভিন্ন ভাবনা নিয়ে হাজির হলেন লিটন দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজ। চাপ সামলে দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দুজনই তুলে নিলেন ফিফটি। পাশাপাশি টেস্ট ক্রিকেটে পঞ্চাশের আগে ৬ উইকেট হারানোর পর সর্বোচ্চ জুটির বিশ্ব রেকর্ড গড়লেন তারা।

রোববার রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের তৃতীয় দিনের সকালে পাকিস্তানের পেসাররা দাগেন তোপ। তাদের সুইংয়ে এলোমেলো হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। পর লিটন ও মিরাজের ব্যাটে আসে ঘুরে দাঁড়ানোর রসদ। প্রথম সেশনে ৪৯ রান যোগের পর দ্বিতীয় সেশনও নির্বিঘ্নেই পার করে দিচ্ছিলেন তারা। কিন্তু একদম শেষদিকে গিয়ে লাগে জোড়া ধাক্কা। নিজের পরপর দুই ওভারে মিরাজ ও তাসকিন আহমেদকে ফেরান খুররম শাহজাদ। ফলে ৮ উইকেটে ১৯৩ রানের নড়বড়ে অবস্থা নিয়ে চা বিরতিতে গেছে সফরকারীরা। প্রথম ইনিংসে এখনও তারা পিছিয়ে আছে ৮১ রানে।

প্রতিরোধ গড়ার পর পাল্টা আক্রমণ চালান লিটন ও মিরাজ। তাদের সপ্তম উইকেট জুটিতে আসে ১৬৫ রান। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে পঞ্চাশের নিচে ৬ উইকেট পড়ার পর এই প্রথম কোনো জুটির রান ছাড়াল দেড়শ। আগের কীর্তিতেও জড়িয়ে ছিল পাকিস্তানের নাম। ২০০৬ সালে করাচি টেস্টে ভারতের বিপক্ষে ৩৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়েছিল তারা। এরপর ১১৫ রানের জুটি গড়েছিলেন আব্দুর রাজ্জাক ও কামরান আকমল।

ব্যাট হাতে ক্রমেই ধারাবাহিক হয়ে ওঠা মিরাজের বিদায়ে ভাঙে ইতিহাসে ঠাঁই পাওয়া জুটি। ৫২তম ওভারের পঞ্চম বলে ফিরতি ক্যাচে তাকে আউট করেন খুররম শাহজাদ। টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ৫ উইকেটের স্বাদ নেন তিনি। মিরাজ থামেন ৭৮ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলে। ১২৪ বল মোকাবিলায় তিনি মারেন ১২ চার ও ১ ছক্কা। টেস্টে সবশেষ তিন ইনিংসে এটি মিরাজের তৃতীয় ফিফটি। এর আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ৮১ ও পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের একমাত্র ইনিংসে ৭৭ রান করেন তিনি।

আশার আলো হয়ে উইকেটরক্ষক-ব্যাটার লিটন ক্রিজে আছেন ১২৯ বলে ৮৩ রানে। এটি তার ক্যারিয়ারের ১৮তম হাফসেঞ্চুরি। তার ব্যাট থেকে এসেছে ৯ চার ও ২ ছক্কা। বাংলাদেশের পুঁজি কতদূর পৌঁছায় এখন তা নির্ভর করছে লিটনের ওপর। রান তোলায় তার চেয়ে শুরুতে বেশ এগিয়ে ছিলেন মিরাজ। এক পর্যায়ে, লিটনের সংগ্রহ ছিল ৪৫ বলে ১৩ রান। এরপর তিনি হাত খুলে চড়াও হন প্রতিপক্ষের ওপর। তারপর ফের সাবধানী ব্যাটিংয়ে ৮২ বলে পৌঁছান ফিফটিতে। পরে আবার সুযোগ পেলেই মেরেছেন চার-ছক্কা।

খুররমের বলে তাসকিন এলবিডব্লিউ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আসে চা বিরতির সিদ্ধান্ত। ৫ বলে খেলে তাসকিন করেন ১ রান। ডানহাতি পেসার খুররমের শিকার ৭৩ রানে ৬ উইকেট। বাঁহাতি পেসার মীর হামজা ২ উইকেট নিয়েছেন ৪৫ রানে।

আগের দিন টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা পাকিস্তান প্রথম ইনিংসে অলআউট হয় ২৭৪ রানে। এরপর বিনা উইকেটে ১০ রান তুলে দিন শেষ করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এদিনের প্রথম ঘণ্টায় খুররম ও হামজায় নাজেহাল হয় তারা। দ্রুত সাজঘরে ফেরেন জাকির হাসান, সাদমান ইসলাম, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান। একমাত্র সাদমান ছাড়া কেউই দুই অঙ্কে যেতে পারেননি।

Comments

The Daily Star  | English
Kudos for consensus in some vital areas

Kudos for consensus in some vital areas

If our political culture is to change, the functioning of our political parties must change dramatically.

2h ago