মিরাজের পাঁচ উইকেট, পাকিস্তানকে তিনশোর নিচে গুটিয়ে বাংলাদেশের দাপট
নতুন বলে শুরুতে ঝাঁজ দেখালেন তাসকিন আহমেদ। শান মাসুদ-সাঈম আইয়ুবের ব্যাটে পাকিস্তান ঘুরে দাঁড়ালেও পরে অফ স্পিনে হানা দিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ, অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসানও তৈরি করলেন চাপ। রাওয়ালপিন্ডিতে দ্বিতীয় টেস্টেও স্বাগতিকদের কোণঠাসা করে দাপট দেখিয়ে দিন পার করল বাংলাদেশ।
বৃষ্টিতে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিন ভেসে গিয়েছিলো। দ্বিতীয় দিনে দেখা গেল ব্যাটে-বলের তুমুল লড়াই। তাতে এগিয়ে থাকল বাংলাদেশ। পাকিস্তানকে ২৭৪ রানে অলআউট করে দিয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। ৬১ রানে ৫ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সফলতম বোলার মিরাজ। স্বাগতিকদের হয়ে ফিফটি করেছেন সাঈম (৫৮), শান (৫৭) আর সালমান আগা (৫৪)।
শেষ বিকেলে ব্যাট করতে নেমে শুরতেই বিপদে পড়তে পারত বাংলাদেশ। প্রথম বলেই সাদমান ইসলামের ক্যাচ ছেড়ে দেন সাউদ শাকিল। মির হামজার বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছিলেন সাদমান। ভালো উচ্চতায় সহজে হাতে এলেও তা জমাতে পারেননি তিনি। ফলে বিনা উইকেটে ১০ রান নিয়ে দিন শেষ করে সফরকারীরা।
টস জিতে বোলিং বেছে দিনের একদম প্রথম ওভারেই সাফল্য এনে দেন তাসকিন। তার ভেতরে ঢোকা বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন আব্দুল্লাহ শফিক। দ্বিতীয় উইকেটে এরপর শান-সাঈমের ১০৭ রানের জুটি। প্রথম সেশনে আর কোন উইকেটই হারায়নি পাকিস্তান।
দ্বিতীয় সেশনেই নিজেদের ফিরে পায় সফরকারীরা। শুরুটা করেন মিরাজ। থিতু হয়ে বিপদজনক হয়ে উঠার আভাস দেয়া দুই ব্যাটার শান-সাঈম দুজনকেই ফেরান তিনি। ফিফটির পর মিরাজের বলে এলবিডব্লিউ হন শান। ফিফটি স্পর্শ করে অধৈর্য হয়ে ক্রিজ ছেড়ে স্টাম্পিং হন সাঈম।
নাহিদ রানার বলে ১ রানেই ফিরতে পারতেন সাউদ শাকিল। এবার স্লিপে তার ক্যাচ ছেড়ে দেন মিরাজ। জীবনটা অবশ্য কাজে লাগাতে পারেননি আগের টেস্টে সেঞ্চুরি করা শাকিল। অ্যারাউন্ড দ্য উইকেটে এসে অ্যাঙ্গেল তৈরি করে তাকে কাবু করেন তাসকিন। তাসকিনের ভেতরে ঢোকা বল স্টাম্পে টেনে ১৬ রান করে বিদায় নেন তিনি।
শাকিলের বিদায়ের পর প্রতিরোধ গড়ার আভাস দিয়েছিলেন দুই অভিজ্ঞ বাবর আজম আর মোহাম্মদ রিজওয়ান। আগের টেস্টে রান না পাওয়া বাবর এবারও থিতু হয়ে যান, তার সামনে ছিলো নিজেকে মেলে ধরা, দলকে ভালো জায়গায় নিয়ে যাওয়া। কিন্তু সাকিবের আর্ম ডেলিভারি পড়তে পারেননি তিনি।
সাকিব ওই ওভারেই তুলে নিতে পারতেন সালমান আগাকেও। ফরোয়ার্ড শর্ট লেগে শূন্য রানে থাকা সালমানের ক্যাচ মুঠোয় জমাতে পারেননি জাকির হাসান।
চা-বিরতির পর ফিরে জমে যাচ্ছিল রিজওয়ান আর সালমান আগার জুটি। তাদের আলগা করতে মরিয়া হয়ে একাধিক রিভিউ নষ্ট করেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
নাহিদ রানা অবশেষে ভাঙেন জুটি। এই তরুণ বেশ ভালো বল করছিলেন, তার বলে পড়ে ক্যাচও। রিজওয়ানের ক্যাচ আর পড়েনি। স্লিপে অধিনায়ক শান্তর হাতে জমা পড়েন পাকিস্তানের কিপার ব্যাটার। আগের টেস্টে সেঞ্চুরি ও ফিফটি করা রিজওয়ান এবার থামেন ২৯ রান করে।
সালমান একা হয়ে পড়েন। টেল এন্ডারকে নিয়ে শুরু হয় তার লড়াই। খুররম শাহজাদকে যোগ করেন ২৫ রান। খুররমকে মনে হচ্ছিল আরও কিছুটা সময় সঙ্গ দিতে পারবেন। তিনি মিরাজের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড অফে সাকিবের অসাধারণ ক্যাচে পরিণত হন।
সাকিব খানিক পর ফেরাতে পারতেন আরেক টেল এন্ডার মোহাম্মদ আলিকে। লেগ স্লিপে তার ক্যাচ ফেলে দেন মুমিনুল হক, পরের ওভারে আলিকে আউট করে ৮ম উইকেট ফেলেন মিরাজ।
নতুন বল নিয়ে শেষ স্বীকৃত ব্যাটার সালমানকে আউট করেন তাসকিন। আম্পায়ারের ভুলে ফিফটির আগে জীবন পেয়েছিলেন তিনি। টেল এন্ডার নিয়ে দ্রুত রান বাড়নোর চিন্তায় থাকা ৫৪ রান করে ফেরেন ছক্কার চেষ্টায়। তাসকিনের শর্ট বল উড়াতে গিয়ে ফাইন লেগে ধরা দেন তিনি।
Comments