শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর গণভবনে যা ঘটল
প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে শেখ হাসিনা তার বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে বাংলাদেশ ছাড়ার পর গণভবনে ঢুকে পড়ে অসংখ্য মানুষ।
আজ সোমবার বিকেল তিনটার দিকে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে গিয়ে গণভবনে ঢুকতে শুরু করে জনতার মিছিল। এরপর সময় যত গড়িয়েছে, ততই বেড়েছে মানুষের ঢল।
সরেজমিনে গণভবনে গিয়ে দেখা গেছে, পুরো এলাকা ছাত্র, ক্ষুদে শিশুসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের দখলে ছিল। তাদেরকে বিভিন্ন স্লোগান দিতে শোনা গেছে। সেসব স্লোগানে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ক্ষোভ যেমন প্রকাশ পেয়েছে, তেমনি ছিল বিজয়ের আনন্দও। হয়েছে লুটপাটও।
সাধারণত গণভবন ও এর চারিদিকে থাকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা। তবে আজ এর ভেতরে-বাইরে কোনো নিরাপত্তা দেখা যায়নি।
বিকেল থেকে অনেক মানুষকে গণভবনে ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে বাইরে বের হয়ে আসতে দেখা গেছে। যে যা পারছেন, সেটাই সঙ্গে নিয়ে যান। টেলিভিশন, ফ্রিজ, শাড়ি, সোফা, এসি, মাছ, ফ্যান, হাঁস, মিষ্টি, ফুলের টব কোনো কিছুই বাদ যায়নি।
গণভবনের ভেতরে ও বাইরে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। তছনছ করে ফেলা হয়েছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন। কোথাও কোথাও ধোঁয়ার কুণ্ডলীও দেখা গেছে।
সেই সময় অনেককে এসব কাজের বিরোধিতা করতে দেখা গেছে। তাদের মন্তব্য ছিল, জনগণের সম্পদ যেন নষ্ট করা না হয়।
গণভবনের মাঠে উল্লাস করতে দেখা গেছে অনেককে। মোবাইল ফোনে সেলফি তুলছিলেন, আবার কেউ কেউ ভিডিও করছিলেন সার্বিক চিত্র।
গণভবনের সামনের রাস্তায় দেখা গেছে, ভেতর থেকে নিয়ে আসা সোফায় বসে আছেন অনেকে। কেউ রিকশায় চড়ে আবার কেউ মাথায় করে নিয়ে যাচ্ছেন গণভবনে ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র।
সন্ধ্যার দিকেও পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। বরং বিভিন্ন দিক থেকে জনতার মিছিল ছিল গণভবনমুখী। অনেককে 'গণভবন কোন দিকে' জানতে চাইতে শোনা গেছে।
গণভবন থেকে বেরিয়ে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনের রাস্তা ধরে ফার্মগেটের দিকে এগোলে দেখা গেছে, ধোঁয়ায় ঢেকে আছে অনেকটা এলাকা। সংসদ ভবনের প্রাঙ্গণেও ছিল জনতার ঢল।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে আজ পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন সাড়ে ১৫ বছর বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
Comments