কোটা আন্দোলন: ‘সম্পদ কি জীবনের চেয়ে বেশি মূল্যবান’

প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশে করেছে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক-সামাজিক সংগঠন। ছবি: মো. আব্বাস/স্টার

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী সহিংসতায় প্রাণহানির পাশাপাশি মিথ্যা মামলা ও নির্বিচারে গ্রেপ্তারের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলো।

'প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের' ব্যানারে আজ শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তারা সমাবেশ করেন।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, 'এই সংখ্যক মৃত্যু দেখে কেউ চুপ করে থাকতে পারে না। চোখ বন্ধ করলেই ওই লাশগুলো দেখতে পাই।'

'আগের বিচারিক তদন্তে আমরা জজ মিয়ার নাটক দেখেছি। তাই আমরা জাতিসংঘের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত চাই', বলেন তিনি।

পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহতরা চিকিৎসার জন্য এক হাসপাতালে থেকে আরেক হাসপাতালে গিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'হাসপাতালগুলো তাদের চিকিৎসা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। আমরা এ ধরনের স্বাস্থ্যব্যবস্থার নিন্দা জানাই।'

তিনি হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী মন্ত্রীদের পদত্যাগ, ক্যাম্পাসে নোংরা রাজনীতি বন্ধ এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানান।

সমাবেশে দৈনিক সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ছিল ন্যায়সঙ্গত।

'কিন্তু সরকার আন্দোলন দমনের জন্য শক্তি প্রয়োগ করে, যার ফলে অসংখ্য লোক মারা যায়। এত বিপুলসংখ্যক মৃত্যুর পরও সরকার দুঃখ প্রকাশ করেনি', বলেন তিনি।

প্রতিবাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) সাম্মানিক নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার সারাহ হোসেন জানান, তারা নিহতের প্রকৃত সংখ্যা জানতে পারছেন না।

তিনি বলেন, নিহতের প্রকৃত সংখ্যা জানার অধিকার আমাদের আছে। সরকারের বক্তব্য দেখে মনে হচ্ছে, তারা জীবনের চেয়ে রাষ্ট্রীয় সম্পদ নিয়ে বেশি চিন্তিত।

'সম্পদ কি জীবনের চেয়ে বেশি মূল্যবান', যোগ করেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা বলেন, দেশ এখন স্বৈরাচারী শাসনের অধীনে।

তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে হাজারো মানুষ আহত হয়েছে। এতে দুই শতাধিক মানুষ নিহত হন। এসব হত্যাকাণ্ডের দায় সরকারকেই নিতে হবে।

নিহতরা যাতে ন্যায়বিচার পান, তা নিশ্চিতের দাবি জানান তিনি।

কর্মসূচিতে মোট ৩১টি সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন অংশ নেয়।

বক্তৃতার ফাঁকে ফাঁকে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো এসব হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে গান গেয়েছেন ও কবিতা আবৃত্তি করেছেন।

সমাবেশ শেষে তারা শোভাযাত্রা বের করেন, যা রাজধানীর পুরানা পল্টন এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।

Comments

The Daily Star  | English

65pc of suicide victims among students are teens: survey

Teenagers (aged 13-19) made up 65.7% of 310 students who died by suicide in 2024, according to a survey by Aachol Foundation.

1h ago