নাটকীয়তা শেষে হারল আর্জেন্টিনা
সমর্থকদের তোপের মুখে চার মিনিট আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল ম্যাচ। ফলাফল তখন ২-২ গোলে ড্র। কিন্তু ম্যাচ শেষ হওয়ার বেশ পরে ভিএআর যাচাই করে দেখা গেল অফসাইড ছিল ক্রিস্তিয়ান মেদিনার শেষ মুহূর্তের গোলটি। ফলে নাটকীয়ভাবে পূর্ণ পয়েন্ট পেয়ে যায় মরক্কো।
সেইন্ট-এতিয়েনের স্তাদে জিওফ্রয়-গুইচার্ডে বাংলাদেশ সময় আজ বুধবার সন্ধ্যায় আর্জেন্টিনাকে ২-১ গোলে হারিয়েছে আর্জেন্টিনা। আফ্রিকান দেশটির হয়ে দুটি গোলই করেন সোফিয়ানে রহিমি। আর্জেন্টিনার হয়ে গোলটি করেন জিওলিয়ানো সিমিওনে।
মরক্কোর উত্থানের গল্পটা কাতার বিশ্বকাপেই দেখেছিল দুনিয়া। আরব বিশ্ব তো বটেই, প্রথম আফ্রিকান দেশ হিসেবে তারা উঠেছিল সেমি-ফাইনালে। প্যারিস অলিম্পিকেও দলটি শুরু করল দাপটের সঙ্গেই। দুই গোলে লিড নিয়ে শেষ দিকে রক্ষণ জমাট রেখে জয় তুলে নেয় দলটি।
এদিন ম্যাচের প্রথমার্ধে লক্ষ্যে মোট শট হয় মাত্র একটি। আর সেই শটটি আসে একেবারে শেষ দিকে। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে সেই শট থেকে গোল পেয়ে এগিয়ে যায় মরক্কো। সতীর্থের কাছ থেকে বল পেয়ে ইলিয়াস আখোমাচকে পাস দেন বিলাল এল খানোস। অসাধারণ এক ব্যাকহিলে ভেতরে ঢুকতে থাকা খানোসকে ফের বল দেন ইলিয়াস। এরপর খানোসের দুর্দান্ত এক ক্রস থেকে গোলমুখে ডিফেন্ডারকে এড়িয়ে আলতো টোকায় বল জালে পাঠান সোফিয়ানে রহিমি।
এগিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমে শুরু থেকেই দারুণ গোছানো ফুটবল খেলতে থাকে মরক্কো। দুই মিনিট যেতে পেনাল্টিও পেয়ে যায় দলটি। ডি-বক্সে আখোমাচকে হুলিও সোলার ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। সফল স্পটকিকে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন রহিমি।
৬৮তম মিনিটে ব্যবধান কমান সিমিওনে। ডান প্রান্ত থেকে থিয়াগো আলমাদার ক্রসে ফাঁকায় বল পেয়ে যান সোলার। দূরের পোস্ট লক্ষ্য করে তার নেওয়া জোরালো শট বারপোস্ট ঘেঁষে বাইরে যাওয়ার পথে শেষ মুহূর্তে পা লাগিয়ে বল জালে পাঠান অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদের এই ফরোয়ার্ড।
৭২তম মিনিটে সমতায় ফিরতে পারত আর্জেন্টিনা। ডি-বক্সে একেবারে অরক্ষিত জায়গা থেকে নেওয়া ব্রুনো এমিওনের হেড অবিশ্বাস্য এক সেভ করেন মরক্কান গোলরক্ষক মুনির। ৮২তম মিনিটে আরও একবার ত্রাতা তিনি। এবার হুলিয়ান আলভারেজের প্রচেষ্টা ঠেকিয়ে দেন তিনি। গোলরক্ষককে একা পেয়ে গিয়েছিলেন এই ম্যানচেস্টার সিটি তারকা।
যোগ করা সময়ের ষষ্ঠ মিনিটে সমতায় ফেরার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন আমিওনে। গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান তিনি। কিন্তু বাইরে মারেন। তবে মুহুর্মুহু আক্রমণে সফলতা পেয়েও গিয়েছিল দলটি। কিন্তু মেদিনার গোল অফসাইডে বাতিল হয়।
তবে কিছুটা ভাগ্য বঞ্চিতও ছিল আর্জেন্টিনা। আলমাদার শট গোলরক্ষক ফেরালে আলগা বলে নিকোলাস ওতামেন্দির নেওয়া শট বারপোস্টে লেগে ফিরে না আসলে সমতায় ফিরতে পারতো তারা। এমনকি পরে সেই বলে হেড করেছিলেন আমিওনেও। তার হেডও ফিরে আসে। তবে ফিরতে বলে ফের হেড নিয়ে মেদিনা বল জালে পাঠালেও গোল মিলেনি।
তবে গোল বাতিলের আগে সমর্থকদের তোপে ম্যাচ শেষ করে দেন রেফারি। মাঠ ছাড়ার সময়ও আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়দের লক্ষ্য করে বিভিন্ন ছুঁড়ে মারেন সমর্থকরা। পরে পরিস্থিতি ঠিক হলে চার মিনিট মাঠে গড়ায় ম্যাচ। কিন্তু তখন আর গোল না হলে হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় আর্জেন্টিনাকে।
Comments