ইংলিশদের কাঁদিয়ে রেকর্ড চ্যাম্পিয়ন স্পেন

পুরো আসর জুড়ে যে খেলা উপহার দিয়ে ফাইনালে উঠেছে স্পেন, কিন্তু শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের প্রথমার্ধে দেখা গেল না তার ছিটেফোঁটাও। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই থেকেই ফিরে আসে পুরনো স্পেন হয়েই। লিড নিতে সময় নেয়নি দুই মিনিটও। এরপর ইংলিশরা সমতায় ফিরলেও শেষ দিকের আরও একটি গোলে জয় পায় স্প্যানিশরাই। এ নিয়ে রেকর্ড চারবার ইউরোর শিরোপা জিতে নিল দলটি।

রোববার রাতে বার্লিনের অলিম্পিয়াস্তাদিওনে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ইংল্যান্ডকে ২-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে স্পেন। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে নিকো উইলিয়ামসের গোলে স্পেন এগিয়ে গেলেও ৭৩তম মিনিটে সমতা টানেন বদলি খেলোয়াড় কোল পালমার। পরে ম্যাচের শেষ দিকে স্পেনের বদলি খেলোয়াড় মিকেল ওয়ারজাবালের গোলে জয় নিশ্চিত হয় স্প্যানিশদের।

এ নিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে হারল ইংল্যান্ড। গত আসরে ইতালির সঙ্গে টাইব্রেকারে ইংলিশদের হৃদয় ভাঙলেও এবার তারা হারে নির্ধারিত ৯০ মিনিটেই। ফলে ফুটবল এবারও 'হোমে' ফিরেনি। অধরাই রইল ইংলিশদের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন শিপের শিরোপা।

এদিন ম্যাচের প্রথমার্ধে ম্যাচ চলছিল ঢিমেতালে। গোল করার মতো আক্রমণই হয়েছে কেবল একটি। তাও প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে। কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে ঠিকঠাক হেড নিতে পারেননি রবিন লে নরমান্দ। তার ব্যাক হেড বাঁ প্রান্তে ফাঁকায় পেয়ে যান ফিল ফোডেন। তার তড়িৎ শট একেবারে গোলমুখ থেকে ঠেকান স্প্যানিশ গোলরক্ষক উনাই সিমন।

ম্যাচে সেটাই ছিল ইংল্যান্ডের প্রথম অনটার্গেট শট। এছাড়া প্রথমার্ধে অনটার্গেট শট হয়েছে আর একটিই। ২৮তম মিনিটে ফ্যাবিয়ান রুইজের শট ঠেকাতে কোনো সমস্যা হয়নি ইংলিশ গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ডের।

প্রথমার্ধে স্পেনের দুই উইঙ্গার নিকো উইলিয়ামস ও লামিনে ইয়ামালকে পুরোপুরি বোতলবন্দী করে রাখে ইংলিশরা। গত ফেব্রুয়ারির পর প্রথমবারের মতো প্রথম একাদশে সুযোগ পেয়ে শুরু থেকেই দুর্দান্ত খেলতে থাকেন লুক শ।

কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে আর স্প্যানিশ দুই উইঙ্গারকে আটকে রাখতে পারেনি তারা। মাঠে নামার এক মিনিটের মধ্যেই ডেডলক ভাঙে স্পেন। ইয়ামালের ক্রস থেকে ফাঁকায় পেয়ে যান নিকো। কোণাকোণি শটে জালে পাঠাতে কোনো ভুল হয়নি এই অ্যাতলেতিকো বিলবাও ফরোয়ার্ডের।

দুই মিনিট পর ব্যবধান বাড়াতে পারতেন দানি ওলমো। নিকোর মতো প্রায় একই অ্যাঙ্গেল থেকে শট নেওয়ার সুযোগ ছিল দানি ওলমোরও। নিকোর পাস ধরে দারুণভাবে পেছনে থাকা ডিফেন্ডারকে এড়িয়ে ফাঁকায় পেয়ে যে শট তিনি, তা লক্ষ্যে থাকেনি।

৫৬তম মিনিটে ইয়ামালের বাড়ানো বলে মোরাতার শট এক ডিফেন্ডার ব্লক না করলে ব্যবধান বাড়তে পারতো তখনও। এর কিছুক্ষণ পরেই নিকোর শট একেবারে বারপোস্ট ঘেঁষে বাইরে চলে গেলে ব্যবধান বাড়াতে পারেনি স্পেন। 

৬৪তম মিনিটে বেলিংহ্যামের ডি-বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট লক্ষ্যে থাকলে সমতায় ফিরতে পারতো ইংলিশরা। দুই মিনিট পর গোল করার সুযোগ পেয়েছিলেন ইয়ামালও। ইয়ামালের বাড়ানো বলে ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণে নিতে পারলে ফাঁকায় পেয়ে যেতে পারতেন তিনি। তবে পায়ে লেগে পেছনে চলে গেলে সামনের খেলোয়াড়কে এড়িয়ে নিলে শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান পিকফোর্ড।

৭৩তম ইংলিশদের ম্যাচে ফেরান পালমার। সাকার পাস থেকে দারুণ দক্ষতায় পালমারকে বল বাড়ান বেলিংহ্যাম। বল পেয়ে বাঁ পায়ের জোরালো শটে একেবারে বারপোস্ট ঘেঁষে বল জালে পাঠান এই চেলসি তারকা।  

৮২তম দুর্দান্ত এক সেভে ইংলিশদের রক্ষা করেন পিকফোর্ড। নিকোর সঙ্গে দেওয়া নেওয়া করে ফাঁকায় ঢুকে গিয়েছিলেন ওলমো। তবে তার বাড়ানো বল ধরে ইয়ামালের নেওয়া শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান ইংলিশ গোলরক্ষক।

৮৬তম মিনিটে এগিয়ে যায় স্প্যানিশরা। ডান প্রান্ত থেকে মার্ক কুকুরেয়ার ক্রস থেকে ছোট ডি-বক্সে ঢুকে কেবল দিক বদলে দেন বদলি খেলোয়াড় মিকেল ওয়ারজাবাল। তিন মিনিট অবিশ্বাস্য এক ব্লকে স্প্যানিশদের লিড ধরে রাখেন ওলমো। ডেক্লান রাইসের হেড গোলরক্ষক সিমন ঠেকালে ফিরতি হেড নিয়েছিলেন মার্ক গুয়েহি। একেবারে গোললাইন থেকে দারুণ এক হেডে তা ব্লক করে দেন ওলমো।

Comments

The Daily Star  | English

Democracy ends where leadership begins

The Daily Star analysis of 25 political parties

11h ago