শোলে’র সেই ‘ঠাকুর’ সঞ্জীব কুমারের পছন্দের চরিত্র

শোলে সিনেমায় ঠাকুর চরিত্রে সঞ্জীব কুমার। ছবি: সংগৃহীত
শোলে সিনেমায় ঠাকুর চরিত্রে সঞ্জীব কুমার। ছবি: সংগৃহীত

আজ বলিউডের ক্ষণজন্মা অভিনেতা সঞ্জীব কুমারের ৮৬তম জন্মদিন। হরিভাই নামেও পরিচিত সঞ্জীব তার ৪৭ বছরের জীবনে ১৬৫টি সিনেমায় অভিনয় করেন। এর মধ্যে ১৫৫টি হিন্দিতে ও অপর ১০টি অন্য ভাষায়।

আজ মঙ্গলবার ভারতের গণমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানা গেছে।

সঞ্জীব কুমার বিশ্বাস করতেন, তিনি বেশিদিন বাঁচবেন না। এজন্য বেছে বেছে বয়স্ক মানুষের ভূমিকায় অভিনয় করতেন। শোলে, ত্রিশূল ও দেবতার মতো কালজয়ী সিনেমায় সঞ্জীব অভিনীত চরিত্রগুলো দর্শকদের মনে স্থায়ী আসন তৈরি করেছে।

পরেশ রাওয়াল সঞ্জীবকে নিয়ে লেখা স্মৃতিচারণামূলক বইতে 'সঞ্জীব কুমার: দ্য অ্যাক্টর উই অল লাভড' উল্লেখ করেন, একবার তিনি তার ম্যানেজার জন্মদাসের সঙ্গে কথা বলছিলেন। তিনি বলেন, 'পরেশ, রুপালি পর্দায় কেউ অমিতাভ বচ্চনের বাবার ভূমিকায় অভিনয় করতে চাইলে সে মানুষটি আর কেউ নন, সঞ্জীব কাপুরও হতে পারবেন।'

ত্রিশূল সিনেমায় শশি কাপুর ও অমিতাভের বাবার চরিত্রে সঞ্জীব। ছবি: সংগৃহীত
ত্রিশূল সিনেমায় শশি কাপুর ও অমিতাভের বাবার চরিত্রে সঞ্জীব। ছবি: সংগৃহীত

এই ধারায় বেশ কয়েকটি সিনেমায় বয়স্ক মানুষের চরিত্রে অভিনয় করেন সঞ্জীব, যেমন শোলে (১৯৭৫), ত্রিশূল (১৯৭৮), মৌসুম (১৯৭৫), সাওয়াল (১৯৮২) ও দেবতা (১৯৭৮)। ৩৭ বছর বয়সে শোলে সিনেমায় ঠাকুরের ভূমিকায়  এবং ৪০ বছর বয়সে ত্রিশূল সিনেমায় অমিতাভের বাবার ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি।

অনেক অভিনেতা মনে করেন তরুণ বয়সে প্রবীণ চরিত্রে অভিনয় করলে ক্যারিয়ারের ক্ষতি হয়। তাই তারা এ ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে চান না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ছিলেন সঞ্জীব।

সঞ্জীবের সহশিল্পী তাবাসসুম তার ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত ভিডিওতে বলেন, এক জ্যোতিষী সঞ্জীবকে জানিয়েছিল যে তিনি বেশিদিন বাঁচবেন না। এ কারণে, 'যে বয়স পর্যন্ত বেঁচে থাকবেন না', সে বয়সী মানুষের চরিত্রে অভিনয় করার চিন্তা ও ইচ্ছা মাতিয়ে রেখেছিল সঞ্জীবকে।

এমন কী, যখন সঞ্জীব থিয়েটারে কাজ করতেন, তখনো তিনি এ ধরনের বয়স্ক মানুষের চরিত্র খুঁজে বের করে সেগুলোতে অভিনয় করতেন।

তিনি বলিউডের 'ঠাকুর' হিসেবে পরিচিত ছিলেন এবং শোলে সিনেমায় 'ঠাকুর' ছিল তার প্রিয় চরিত্র।

সঞ্জীবের সমসাময়িক অভিনেতা পরেশ রাওয়াল জানান, দর্শকরা পর্দায় সঞ্জীবকে দেখলেই ভাবতেন, 'যাক এবার আর কোনো দু:চিন্তা নেই। সিনেমা খারাপ হতেই পারে না।'

৪৭ বছর বয়সে মারা যান সঞ্জীব কুমার। ছবি: সংগৃহীত
৪৭ বছর বয়সে মারা যান সঞ্জীব কুমার। ছবি: সংগৃহীত

'তিনি ছিলেন পরিচালকদের মুশকিল আসান অভিনেতা। যেকোনো পরিস্থিতিতে দর্শকদের মাতিয়ে রাখতে পারতেন তিনি', যোগ করেন তিনি।

সঞ্জীব কুমারকে প্রখ্যাত হলিউড তারকা ফিলিপ সেইমুর হফম্যানের সঙ্গে তুলনা করা হোত। তার ওপর পরিচালকরা সব সময় ভরসা রাখতেন।

অল্প সময়ের মধ্যে অসংখ্য সিনেমায় অভিনয় করেন সঞ্জীব।

স্বাধীন জীবন যাপন করেন অকৃতদার সঞ্জীব কাপুর। ১৯৮৫ সালের ৬ নভেম্বর ৪৭ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

4h ago