অপরাজিতই রইল কলম্বিয়া, গ্রুপে দ্বিতীয় ব্রাজিল
ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এই কলম্বিয়াকে সেরা প্রজন্মের দল বলে আখ্যা দিয়েছিলেন ব্রাজিলিয়ান কোচ দরিভাল জুনিয়র। আর মাঠেও টের পেলেন হাড়েহাড়ে। ভাগ্য সঙ্গে না থাকলে হারতেই হতো তাদের। অসাধারণ ফুটবল উপহার দিয়েও ড্র মেনে মাঠ ছাড়তে হয়েছে কলম্বিয়াকে। মাঠে নামার আগে টানা ২৫ ম্যাচ অপরাজিত ছিল দলটি। সেই সংখ্যাটা এখন দাঁড়ালো ২৬ এ।
বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে ক্যালিফোর্নিয়ার লেভি'স স্টেডিয়ামে কোপা আমেরিকার 'ডি' গ্রুপের শেষ ম্যাচে কলম্বিয়ার সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে ব্রাজিল। ম্যাচের প্রথমার্ধেই হয় গোল দুটি। দ্বাদশ মিনিটে রাফিনহার গোলে ব্রাজিল এগিয়ে গেলেও প্রথমার্ধের শেষ দিকে কলম্বিয়ার হয়ে সমতা ফেরান দানিয়েল মুনোজ।
ফলে তিন ম্যাচে দুটি জয় ও একটি ড্রয়ে ৭ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয় কলম্বিয়া। কোয়ার্টার ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ পানামা। অন্যদিকে তিন ম্যাচে একটি জয় ও দুটি ড্রয়ে ৫ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপে দ্বিতীয় হয়েছে ব্রাজিল। শেষ আটে তাদের প্রতিপক্ষ দারুণ ছন্দে থাকা উরুগুয়ে। একই সময়ে গ্রুপের অপর ম্যাচে প্যারাগুয়েকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়েও ৪ পয়েন্ট নিয়ে বিদায় নিয়েছে কোস্টারিকা। আগেই বিদায় নেওয়া প্যারাগুয়ে কোনো পয়েন্ট পায়নি।
ম্যাচের প্রথমার্ধে বেশ দাপুটে ফুটবল খেলতে থাকে কলম্বিয়া। অনেকটা ধারার বিপরীতে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। তবে আক্রমণের ধারা বজায় রেখে সমতায় ফেরে হামেস রদ্রিগেজের দল। দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য সমান তালেই লড়াই হয়। দুই দল বেশ কিছু সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে না পারলে প্রথমার্ধের ফলাফলই শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ফলাফল হয়ে দাঁড়ায়।
এদিকে কোয়ার্টার-ফাইনালে খেলতে পারবেন না ব্রাজিলের ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। ম্যাচের সপ্তম মিনিটেই কলম্বিয়ান অধিনায়ক হামেসকে অহেতুক ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন। এর আগে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ৪-১ গোলে জয়ের দিনেও হলুদ কার্ড দেখেছিলেন তিনি।
সেই ফাউলে পাওয়া ফ্রি কিক থেকে প্রায় গোল হজম করে ফেলেছিল ব্রাজিল। হামেসের শট বারপোস্ট ছুঁয়ে বেড়িয়ে গেলে স্বস্তি পায় দলটি। তিন মিনিট পর কলম্বিয়ান গোলরক্ষক কামিলো ভার্গাসের ভুলে এগিয়ে যেতে পারতো ব্রাজিল। ব্রুনো গিমারেসের শট ঠেকাতে গিয়ে বল ফসকে গেলেও পোস্ট ঘেঁষে বেড়িয়ে গেলে বেঁচে যায় তারা।
তবে দুই মিনিট পরই ব্রাজিলকে এগিয়ে দেন রাফিনহা। অসাধারণ ফ্রিকিকে লক্ষ্যভেদ করেন এই বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড। হাত ছোঁয়াতে পারলেও ঠেকাতে পারেননি কলম্বিয়ান গোলরক্ষক। ১৯তম মিনিটে ব্রাজিলের জালে বল জড়িয়েছিলেন দাভিনসন সানচেস। তবে লম্বা সময় ধরে ভিএআরে যাচাইয়ের পর অফসাইড ধরায় গোল মিলেনি।
এর কিছুক্ষণ পর কলম্বিয়ার ডেভিয়ার মাচাদোকে ফাউল করা নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। ফাউলের শিকার হওয়ার পর মাচাদোর গায়ে বল দিয়ে লাথি মারায় জোয়াও গোমেজের দিকে তেড়ে যান কলম্বিয়ার হেফারসন লের্মা। পরে দুই খেলোয়াড়কেই হলুদ কার্ড দেখান রেফারি।
যোগ করা সময়ে অসাধারণ ফিনিশিংয়ে সমতা ফেরান দানিয়েল মুনোজ। হন কর্দোবার বাড়ানো বল ধরে ডান প্রান্ত থেকে দারুণ কোণাকোণি শটে জালে পাঠান ক্রিস্টাল প্যালেসের এই ডিফেন্ডার। ৫১তম মিনিটে এগিয়েও যেতে পারতো তারা। ফাঁকায় হেড নেওয়ার সুযোগ পেয়েও লক্ষ্যে রাখতে পারেননি কর্দোবা। ৬৯তম মিনিটে কর্দোবার আরেকটি হেড ঠেকান ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক আলিসন।
৮৫তম মিনিটে দিনের সেরা সুযোগটি মিস করেন বদলি খেলোয়াড় রাফায়েল বোরে। লুইস দিয়াজের ক্রসে একেবারে ফাঁকা পোস্ট পেয়েও বাইরে মারেন এই ফরোয়ার্ড। ম্যাচের শেষ দিকে আন্দ্রেয়াস পেরেইরার বুলেট গতির শট কলম্বিয়ান গোলরক্ষক দারুণ দক্ষতায় ঠেকালে জয় পাওয়া হয়নি ব্রাজিলের। ড্র মেনেই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের।
Comments