ইউক্রেন শান্তি সম্মেলনের যৌথ বিবৃতিতে ৮০ দেশের সাক্ষর, নেই ভারত, ব্রাজিল ও সৌদি আরব

ইউক্রেন শান্তি সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ছবি: রয়টার্স
ইউক্রেন শান্তি সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ছবি: রয়টার্স

সুইজারল্যান্ডে ৫০টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানসহ ৯০টিরও বেশি দেশের প্রতিনিধিরা ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠা নিয়ে আলোচনা করেছেন।

ইউক্রেন শান্তি সম্মেলন নামে অভিহিত এই সম্মেলন শেষে একটি যৌথ বিবৃতি বা ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়। তবে ভারত, ব্রাজিল, সৌদি আরব ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো কিছু দেশ সেই যৌথ বিবৃতিতে সাক্ষর করেনি।

ইউক্রেনে শান্তির জন্য সম্মেলন

ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য এটাই প্রথম সম্মেলন। সুইজারল্যান্ডে পাহাড়ের ঢালে বিলাসবহুল ও ঐতিহাসিক অবকাশ যাপন কেন্দ্রে আয়োজিত এই সম্মেলনে ৫০টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান অংশগ্রহণ করেন। এতজন শীর্ষনেতাকে এক জায়গায় আনা ও শান্তি আলোচনা করার পেছনে কাজ করেছে বড় আকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা।

রাশিয়াকে এই বৈঠকে ডাকা হয়নি এবং চীন এই বৈঠক বয়কট করে।

সুইজারল্যান্ড জানিয়েছে, তারা ভবিষ্যতে শান্তির দীর্ঘ রাস্তায় চলার জন্য একটা ভিত্তি প্রস্তুত করতে চেয়েছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই সম্মেলন প্রসঙ্গে বলেন, 'এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা।'

ইউক্রেন শান্তি সম্মেলনে অংশ নেন ৫০ দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। ছবি: রয়টার্স
ইউক্রেন শান্তি সম্মেলনে অংশ নেন ৫০ দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। ছবি: রয়টার্স

বিশ্লেষকদের মতে, সব মহাদেশের প্রতিনিধিসহ এতজন রাষ্ট্রপ্রধানের এই সম্মেলনে যোগদান অবশ্যই একটা বড় ঘটনা। গত কয়েক মাস ধরে কূটনৈতিক চেষ্টার ফলেই তা সম্ভব হয়েছে।

দুই দিন ধরে এই বৈঠকে ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাব্য উপায় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট মস্কোর নিন্দা করার পরেও বলেছেন, 'যুদ্ধে জড়িত সব পক্ষকে নিজেদের মনোভাব নমনীয় করতে হবে।'

সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, 'সমঝোতার পথ বেশ কঠিন।'

আলোচনা শেষে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। যৌথ বিবৃতিতে সই করে ৮০টিরও বেশি দেশ। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সব দেশ, ঘানা, কেনিয়া, আর্জেন্টিনা, কলম্বিয়া, ফিলিপাইন্স, কাতার ও গুয়াতেমালার মতো দেশগুলো এতে সই করেছে।

যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে, তাতে ধ্বংস ও মানুষের কষ্টের ছবি সামনে এসেছে। এর ফলে বিশ্বে একটা সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা কোনো দেশের আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও রাজনৈতিক স্বাধীনতা হরণের বিরুদ্ধে। ইউক্রেনসহ প্রতিটি দেশের স্বাধীনতা, আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বর নীতির প্রতি আমরা দায়বদ্ধ।'

এই বৈঠকে ইউক্রেনের ভৌগলিক অখণ্ডতা রক্ষার কথাও বলা হয়েছে।

যে কারণে সই করেনি ভারত

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর বা অন্য কোনো মন্ত্রী বৈঠকে যোগ দেননি। ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (ওয়েস্ট) পবন কাপুর।

এই সম্মেলনে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (ওয়েস্ট) পবন কাপুর। ছবি: রয়টার্স
এই সম্মেলনে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (ওয়েস্ট) পবন কাপুর। ছবি: রয়টার্স

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই শীর্ষবৈঠকে ভারত কোনো বিবৃতি বা অন্য কোনো নথিতে সই করেনি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, ভারত এই বিরোধের দীর্ঘমেয়াদী ও শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়। তাই তারা এই শীর্ষবৈঠকে যোগ দিয়েছে। এর আগে এনএসএ পর্যায়ের বৈঠকেও যোগ দিয়েছিল ভারত।

কিন্তু এই বিরোধের মীমাংসার জন্য দুই পক্ষের (রাশিয়া ও ইউক্রেন) মধ্যে বাস্তবসম্মত ও আন্তরিক আলোচনা প্রয়োজন।

ভারত চায়. সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ মিলে চেষ্টা করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই সমস্যার সমাধান হোক।

ভারত আগেই জানিয়েছে, কূটনৈতিক পথে এবং আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

1h ago