গ্রামীণ ইউগ্লেনার গেনকি প্রোগ্রামের এক দশক উদযাপন
রাজধানীর মিরপুরে গ্রামীণ ইউগ্লেনার গেনকি প্রোগ্রামের দশম বার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে।
গত ২৮ মে মিরপুর-১-এর গ্রামীণ টেলিকম ভবনে বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র-শিক্ষক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে এই অনুষ্ঠান হয়।
বাংলাদেশের শিশুদের পুষ্টির উন্নতির জন্য নিবেদিত গেনকি প্রোগ্রাম জাপানের ইউগ্লেনা কোম্পানি লিমিটেড এবং গ্রামীণ কৃষি ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগ।
ইউগ্লেনা কোম্পানি লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট ও প্রতিষ্ঠাতা জাপানের শিল্পপতি মিৎসুরু ইজুমো অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাপানের রাষ্ট্রদূত কিমিনোরি ইওয়ামা। বাংলাদেশে জাপান দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তাসহ অনুষ্ঠানে জাইকা ও জেট্রোর প্রধানরাও উপস্থিত ছিলেন।
জাপানের রাষ্ট্রদূত কিমিনোরি ইওয়ামা এই অনুষ্ঠান এবং গেনকি প্রোগ্রামের অর্জন দেখে মুগ্ধ হয়েছেন। তিনি ২০১১ ও ২০২৪ সালে জাপানের দুর্যোগে সহায়তা করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি মিৎসুরু ইজুমো, ইউগ্লেনা করপোরেশন এবং গ্রামীণ ইউগ্লেনাকে তাদের ক্রমাগত সহায়তার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ দেন।
রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, গেনকি প্রোগ্রাম শুধু শিশুদের পুষ্টির উন্নতিই করেনি বরং স্কুলে উপস্থিতি এবং শিক্ষার প্রতি মনোযোগও বৃদ্ধি করেছে।
গেনকি প্রোগ্রাম ছাড়াও তিনি উল্লেখযোগ্যভাবে ইউগ্লেনা গ্রুপের কার্যক্রম, ডব্লিউএফপির সঙ্গে গ্রামীণ ইউগ্লেনার সহযোগিতা, জাপান সরকার, ডব্লিউএফপি ও ইউগ্লেনা গ্রুপ এবং গ্রামীণ ইউগ্লেনার অংশগ্রহণে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সহায়তার কথাও উল্লেখ করেন।
ড. ইউনূস তার বক্তব্যে মিৎসুরু ইজুমোর জীবনের শুরুতে একটি অণুজীব আবিষ্কারের জন্য সংগ্রাম— ইউগ্লেনা কোম্পানি লিমিটেড প্রতিষ্ঠা এবং বাংলাদেশে গেনকি প্রোগ্রাম চালু করার কথা উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, 'এটি কোনো গল্প নয়, এটি অঙ্গীকারের গল্প, উৎসর্গের গল্প এবং স্বীকৃতির গল্প।'
ড. ইউনূস থ্রি জিরোর দৃষ্টিভঙ্গি এবং একটি 'জিরো ওয়েস্ট জেনারেশন' তৈরি করার জন্য সবাইকে উৎসাহিত করেন।
তিনি থ্রি জিরো ক্লাব তৈরি করে একটি স্ব-নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন।
'প্রত্যাখ্যান করুন, হ্রাস করুন, নতুন কাজে ব্যবহার করুন এবং পুনর্ব্যবহার করুন' উল্লেখ করে ড. ইউনূস আমাদের ব্যবহারের ধরণগুলোকে পুনরায় কল্পনা করতে বলেছেন, আমাদের কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমাতে এবং এমন একটি বিশ্বের জন্য প্রচেষ্টা চালাতে বলেছেন, যেখানে বর্জ্য হ্রাস করা হবে এবং সম্পদ দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করা হবে।
গেনকি দশম বার্ষিকী উদযাপনের জন্য প্রোগ্রামের সময়সূচী সারাদিন অংশগ্রহণকারীদের জড়িত এবং অনুপ্রাণিত করার জন্য সাজানো হয়েছিল। নতুন লোগো উন্মোচনের মাধ্যমে পোগ্রাম শুরু হয়। তারপর একটি ভিডিওর মাধ্যমে প্রোগ্রামের অর্জন তুলে ধরা হয়। প্রধান অতিথির বক্তৃতা এবং সমন্বিত সেশনে যাওয়ার আগে অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্যে একটি দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করে গেনকি শিক্ষার্থীরা। তারা নৃত্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানকে আরও রঙিন করে তুলে। এরপরে ছিল গল্প বলার সেশন। প্রোগ্রামে একটি পাপেট শো দেখানো হয়, যা গেনকি প্রোগ্রাম সম্পর্কে বর্ণনা করে এবং বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে শিশুদের বিনোদন দেয়।
পরে মধ্যাহ্নভোজ, পরস্পরের সঙ্গে সংযোগ বৃদ্ধি এবং গত এক দশকে প্রোগ্রামের প্রভাবশালী যাত্রা নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়।
Comments