এডিপি বাস্তবায়নের হার তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন

বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ, আইএমইডি, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি, এডিপি,

চলতি অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় সরকারি ব্যয় তিন বছরের সর্বনিম্নে নেমে এসেছে। অর্থবছরের দশ মাসে এডিপি বাস্তবায়নের হার ৪৯ দশমিক ২৬ শতাংশে নেমে এসেছে।

বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে এডিপি বরাদ্দ থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার ৩১৬ কোটি টাকা ব্যয় করেছে সরকার।

অথচ গত অর্থবছরের একই সময়ে উন্নয়ন ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৪ কোটি টাকা এবং বাস্তবায়নের হার ছিল ৫০ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

এ বছরের ৩০ জুন চলতি অর্থবছর শেষ হবে। তাই সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থবছর শেষে উন্নয়ন প্রকল্পের ২ লাখ ৫৪ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা ব্যয়ের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা থেকে পিছিয়ে যেতে পারে।

সাধারণত অর্থবছরের শেষ দুই মাসে এডিপি বাস্তবায়নে তড়িঘড়ি ও দ্রুত অর্থ ছড়ের প্রবণতা দেখা যায়।

গতকাল দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে এক বিশ্লেষক মন্তব্য করেন, 'এডিবি বাস্তবায়নের এই প্রবণতার মান নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।'

ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইএনএম) নির্বাহী পরিচালক মুস্তফা কে মুজেরি বলেন, এখানে পুরো অর্থবছরে এডিপি বরাদ্দের ৮০ থেকে ৮৭ শতাংশ ব্যয় করার প্রবণতা রয়েছে।

'কিন্তু বর্তমানে তা অর্ধেকেরও কমে নেমে এসেছে,' বলেন তিনি।

তিনি জানান, তাই বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলো যদি এই ধারা অব্যাহত রাখতে চায়, আগামী দুই মাসে এডিপি বরাদ্দের ৩৫ শতাংশীয় পয়েন্টের বেশি ব্যয় করতে হবে।

আইএমইডির তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের এপ্রিলে বাস্তবায়নের হার ছিল মোট এডিপি বরাদ্দের মাত্র ৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ। অথচ গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৮ দশমিক ৬৮ শতাংশ।

'তারা শেষের দিকে তাড়াহুড়ো দেখায়। এতে দুর্নীতি বা অর্থ অপচয়ের সুযোগ তৈরি হতে পারে,' বলেন তিনি।

কোনো কোনো ক্ষেত্রে অনেক ঠিকাদার গুণগত মান না মেনে প্রকল্প বাস্তবায়নের চেষ্টা করে, যা সুবিধাভোগীদের জন্য স্থায়ী সমস্যার তৈরি করে, যোগ করেন তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইএমইডির এক কর্মকর্তা বলেন, ভূমি অধিগ্রহণ, আমদানিসহ নানা কারণে বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলো শুরুতে ধীর গতিতে এগোয়। ফলে অর্থ ছাড়েও ধীরগতি দেখা দেয় এবং সময় বেশি লাগে।

'তাই সময়সীমা ঘনিয়ে এলে তারা দ্রুত কার্যকর করার চেষ্টা করে,' যোগ করেন ওই কর্মকর্তা।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ও শিক্ষা খাতের অধীনে প্রকল্পগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করতে হবে বলে জানান তিনি।

যদিও চলতি অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ব্যয় করেছে ৩ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ৩৭ শতাংশ।

মুস্তফা কে মুজেরি  বলেন, 'স্বাস্থ্য ও শিক্ষা প্রকল্পে কম বাস্তবায়নের প্রবণতা উদ্বেগজনক। এই প্রবণতা জনস্বাস্থ্য ও শিক্ষার ওপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে, কারণ দেশের নিম্ন আয়ের অনেক মানুষ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যয় বহন করতে পারে না।'

এখানে উল্লেখ্য, গত অর্থবছরে বিভিন্ন প্রকল্পের সময়সীমা বাড়ানোর জন্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে সাড়ে তিন শতাধিক প্রস্তাব পেয়েছে আইএমইডি।

আইএমইডি কর্মকর্তা জানান, এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১২ মার্চ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভায় কর্মকর্তাদের গুণগত মান উন্নয়ন ও তাৎক্ষণিকভাবে জনগণের সেবা দেবে দিতে পারবে এমন প্রকল্প বাস্তবায়নের সম্ভাব্যতা যাচাই নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন।

Comments

The Daily Star  | English

'Bangladesh applauds 20% US tariff as ‘good news’ for apparel industry

Bangladesh has welcomed the outcome of trade negotiations with Washington, securing a 20 percent tariff rate on its exports to the US under a sweeping new executive order issued by President Donald Trump.

1h ago