মধ্যরাত থেকে সাগরে মাছ ধরায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা, দুশ্চিন্তায় উপকূলের জেলেরা
সাগরে মাছের উৎপাদন ও প্রজনন বাড়াতে আজ রোববার মধ্যরাত থেকে শুরু হচ্ছে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকারে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা।
সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ঘোষিত এ নিষেধাজ্ঞা চলবে ২৩ জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত। এই সময়ে দেশের সামুদ্রিক জলসীমানায় সব ধরনের মাছ শিকার, পরিবহন ও সংরক্ষণ নিষিদ্ধ থাকবে।
এদিকে দুই মাসের বেশি সময় সাগরে মাছ ধরা বন্ধের ঘোষণায় উপকূলের জেলেরা পরিবার পরিজন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটার একাধিক জেলে জানান, বছর জুড়ে ছিল ইলিশের আকাল। এতে জেলে ও ট্রলার মালিকরা ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়েছেন। তার ওপর আজ মধ্যরাত থেকে সাগরে মাছ ধরায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন প্রকৃত জেলেদের সরকারি খাদ্য সহায়তা বাড়ানোর দাবি জানান তারা।
মহিপুর এলাকার জেলে ইউনুস মিয়া বলেন, 'নিষেধাজ্ঞার কারণে ট্রলার নিয়ে ঘাটে ফিরে এসেছি। এ বছর সাগরে মাছের আকাল ছিল। যতবার গভীর সাগরে মাছ ধরতে, ততবারই লোকসান গুনতে হয়েছে। এনজিওর লোন নিয়ে মানসিক দুশ্চিন্তায় আছি। আর মহাজনের দাদনের টাকা কেমনে পরিশোধ করব?'
আরেক জেলে ইয়াসিন মিয়া বলেন, '৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় আমাদের মাত্র ৮৬ কেজি চাল দেওয়া হবে। পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৫ জন। এই চালে কিছুই হবে না। সরকারের কাছে প্রণোদনা বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছি।'
কলাপাড়া সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, 'নিষেধাজ্ঞা সফল করতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে মৎস্য বিভাগ। পার্শ্ববর্তী দেশের জেলেদের অনুপ্রবেশ বন্ধে সাগরে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের অভিযান অব্যাহত থাকবে। কলাপাড়া উপজেলার নিবন্ধিত ১৮ হাজার ৩০৫ জন জেলেকে ৮৬ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। জেলেদের দাবিগুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।'
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু বলেন, '২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা বন্ধ রাখার বিষয়ে সরকারি নির্দেশনা জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী ইতিমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও উপকূলীয় এলাকায় সব জেলে, ফিশিং বোট ও নৌকার মালিকদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পোস্টার, লিফলেটসহ মাইকিং করেও জেলেদের সচেতন ও সতর্ক করা হয়েছে।'
Comments