ভিনিসিয়ুসের জোড়া গোলে বায়ার্নের মাঠে রিয়ালের ড্র
প্রথমার্ধের মাঝামাঝি সময়ে খেলার ধারার বিপরীতে পিছিয়ে পড়া বায়ার্ন মিউনিখ দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ঘুরে দাঁড়াল। চার মিনিটের মধ্যে জোড়া লক্ষ্যভেদে লিডও আদায় করে নিল তারা। তবে তাদের জয়ের আশা গুঁড়িয়ে শেষদিকে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র দ্বিতীয়বারের মতো জাল কাঁপিয়ে লড়াইয়ে আনলেন রোমাঞ্চ। এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের নৈপুণ্যে প্রতিপক্ষের মাঠে ড্র আদায় করে নিল রিয়াল মাদ্রিদ।
মঙ্গলবার রাতে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় বায়ার্ন-রিয়ালের জমজমাট ম্যাচ শেষ হয়েছে ২-২ সমতায়। স্বাগতিকদের হয়ে গোল করেন লেরয় সানে ও হ্যারি কেইন। সফরকারীদের পক্ষে জোড়া গোল আসে ভিনিসিয়ুসের পা থেকে।
গোটা ম্যাচে বল দখলে সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে ছিল আসরের ছয়বারের শিরোপাজয়ী বায়ার্ন। ৫২ শতাংশ সময় তারা পায়ে রাখে বল। গোলমুখে তাদের নেওয়া ১৪টি শটের মধ্যে পাঁচটি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে, প্রতিযোগিতার রেকর্ড ১৪ বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল দশটি শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখতে পারে চারটি।
শুরু থেকেই রিয়ালের গোলরক্ষক আন্দ্রি লুনিনকে পরীক্ষায় ফেলতে থাকে বায়ার্ন। ম্যাচের প্রথম ২১ মিনিটের মধ্যে রিয়ালের গোলমুখে ছয়টি শট নিয়ে দুটি লক্ষ্যে রাখে তারা। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা মেলেনি। এমনকি প্রথম মিনিটেই লুনিনকে একা পেয়েও ভীষণ হতাশ করেন জার্মান ফরোয়ার্ড সানে। তার শট পা দিয়ে ঠেকান ইউক্রেনিয়ান গোলরক্ষক।
আক্রমণের ঝাপটা সামলে নিজেদের গুছিয়ে নিতে থাকে রিয়াল। ২৪তম মিনিটে এগিয়েও যায় কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা। বায়ার্নের একাধিক ফুটবলারের মাঝ দিয়ে দারুণ থ্রু পাস বাড়ান জার্মান মিডফিল্ডার টনি ক্রুস। বক্সে ছুটে গিয়ে নিচু শটে নিশানা ভেদ করেন ভিনিসিয়ুস।
বিরতির আগে দুই দল আরও কিছু সুযোগ পেলেও সেগুলো কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়। তবে বিরতির পর আক্ষেপ সরিয়ে দ্রুতই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয় বায়ার্ন। ৫৩তম মিনিটে অসাধারণ গোলে সমতা টানেন সানে। নিখুঁত জোরালো শটে কাছের পোস্ট দিয়ে জাল কাঁপান তিনি। চার মিনিট পর ইংলিশ স্ট্রাইকার কেইন সফল পেনাল্টিতে দলকে এগিয়ে দেন। জামাল মুসিয়ালাকে ডি-বক্সে লুকাস ভাজকেজ ফাউল করায় বেজেছিল স্পট-কিকের বাঁশি।
তৃতীয় গোলের জন্য হন্যে হয়ে ওঠা টমাস টুখেলের শিষ্যরা বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করেও পায়নি সাফল্য। বরং ৮৩তম মিনিটে হারের শঙ্কা কাটিয়ে সমতায় ফেরে রিয়াল। ভিনিসিয়ুস পেনাল্টি থেকে খুঁজে নেন জাল। আরেক ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রদ্রিগোকে কিম মিন-জায়ে ফাউল করলে রেফারি দিয়েছিলেন স্পট-কিকের নির্দেশ।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে স্রেফ চতুর্থ খেলোয়াড় হিসেবে টানা তিন মৌসুমে সেমিফাইনালে গোল করার নজির গড়লেন ভিনিসিয়ুস। তার আগে এই কীর্তি ছিল ইয়ারি লিটমানেন, ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো ও কেভিন ডি ব্রুইনার।
আগামী ৯ মে দুই পরাশক্তির সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগ হবে রিয়ালের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে। সেদিনই জানা যাবে কারা পাবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এবারের আসরের ফাইনালের টিকিট। এই ম্যাচ ড্র হলেও নিজেদের ডেরায় পরের ম্যাচ হবে বিধায় জয়ের ব্যাপারে বাড়তি আত্মবিশ্বাস থাকবে রিয়ালের।
Comments