গাড়ি নেই, তীব্র গরমে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দুর্ভোগ
কোচিং সেন্টারে যাওয়ার জন্য সকাল ৯টা থেকে নগরের নতুন পাড়া এলাকায় গণপরিবহনের জন্য অপেক্ষা করছেন শিক্ষার্থী ছিদরাতুল মুনতাহা। আসন্ন নার্সিং ভর্তি পরীক্ষা অংশ নেবেন তিনি। কিন্তু ১১টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা অপেক্ষা শেষেও তিনি কোনো গণপরিবহনের দেখা পাননি।
'আমাকে গুরুত্বপূর্ণ কাজে কোচিংয়ে যেতে হচ্ছে। কিন্তু গাড়ি না পেয়ে দুই ঘণ্টা ধরে কড়া রোদে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি,' বলেন এই শিক্ষার্থী।
পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর ডাকে ধর্মঘটের কারণে আজ রোববার সকাল থেকে গণপরিবহনের অভাবে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। আজ থেকে স্কুল চালু হওয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও দুর্ভোগ থেকে রেহাই পাননি।
বাস চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের জেরে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) পুড়িয়ে দেওয়া বাসের ক্ষতিপূরণ এবং হামলকারীদের গ্রেপ্তারসহ চার দফা দাবিতে শনিবার বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক ও শ্রমিক ঐক্য পরিষদ চট্টগ্রামজুড়ে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।
নগরের অক্সিজেন এলাকায় পরিবহনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন মামুনুর রশিদ। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় প্রতিনিধি।
'ধর্মঘট সম্পর্কে আমার ধারণা ছিল না। বিপননের কাজে আমাকে হাটহাজারীতে যাওয়ার কথা। কিন্তু সড়কে কোনো গাড়ি নেই। তীব্র গরমের মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে,' বলেন তিনি।
লালখানবাজার এলাকায় মোহাম্মদ আলী বলেন, 'আমার সন্তান চট্টগ্রাম ক্যান্টমেন্ট পাবলিক স্কুলে পড়ে। তাকে স্কুল থেকে আনতে হবে। গাড়ি অপেক্ষা করছি, কিন্তু গাড়ি পাচ্ছি। রিকশা ও অটোরিকশা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করছে।'
নগরের মুরাদপুর, জিইসি, দুই নম্বর গেটসহ বিভিন্ন মোড়ে অফিসগামী লোকজন, স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের গণপরিবহনের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। অনেকে বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে গন্তব্যেও গিয়েছেন।
আন্দোলনরত পরিষদের আহ্বায়ক মঞ্জুর আলম চৌধুরী বলেন, 'চট্টগ্রাম প্রশাসন পরিবহন খাতে স্টিমরোলার চালাচ্ছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। পরিবহন সেক্টর এবং এর মালিক-শ্রমিকদের বৃহত্তর স্বার্থে আমরা চট্টগ্রামে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি। আমাদের দাবি পূরণ না হলে আগামী ১ মে থেকে সারাদেশে কঠোর আন্দোলনে যাব।'
এদিকে গত সোমবার চুয়েটের একটি বাসের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই চুয়েট শিক্ষার্থী নিহত ও অপর একজন আহত হয়। ওইদিন বাসটি এবং পরে বুধবার চালককে আটক করে পুলিশ।
ওই মৃত্যুর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা ওইদিন একটি বাসে আগুন দেয় এবং সোমবার শাহ আমানত পরিবহনের দুটি বাস জব্দ করে। বৃহস্পতিবার উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা বাকি দুটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়।
Comments