ফুলেল শ্রদ্ধায় জাতীয় পতাকার রূপকার শিব নারায়ণ দাশের শেষ বিদায়

আওয়ামী লীগ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠনের পক্ষে শ্রদ্ধা জানান কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। ছবি: সংগৃহীত

ফুলেল শ্রদ্ধায় শেষ বিদায় সম্পন্ন হয়েছে জাতীয় পতাকার রূপকার শিব নারায়ণ দাশের।

শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় কুমিল্লা টাউনহল প্রাঙ্গণে শিব নারায়ণ দাশের মরদেহ রাখা হয়। সেখানে তার মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন ও কুমিল্লার সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ।

আওয়ামী লীগ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠনের পক্ষে শ্রদ্ধা জানান কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার।

এরপর একে একে ফুলেল শ্রদ্ধা জানায় সব রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার বলেন, 'শিব নারায়ণ দাশ মহান মুক্তিযোদ্ধার সংগঠন ও আমার নেতা। জাতি একজন উজ্জ্বল নক্ষত্রকে হারালো। শিবুদার মাঝে রাজনীতি নিয়ে কোনো ক্লান্তি ছিলেন না। তিনি আমাদেরকে হাতে পোস্টার বানিয়ে দিতেন। আমরা পুরো শহর সেই পোস্টার বিলিয়ে দিতাম। এমন একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদকে কুমিল্লার মানুষ হারিয়েছে। যতদিন বাংলাদেশের ইতিহাস থাকবে, ততদিন এই জাতি তাকে স্মরণ করবে।'

বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল হাসান পাখি বলেন, 'আমি মুক্তিযুদ্ধের সময় শিবুদার সহযোগী ছিলাম। আমরা গর্বিত যে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আমরা তাকে শ্রদ্ধা জানাতে পেরেছি।'

সাহিত্যিক ও গবেষক ড. আলী হোসেন চৌধুরী বলেন, 'তিনি একজন সৎ ও মিশুক মানুষ ছিলেন। এমন মানুষ বিরল। আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে তাকে বিদায় জানিয়েছি। এই জাতি তাকে আজীবন স্মরণ রাখবে।'

আবৃত্তিজোট কুমিল্লার সভাপতি বদরুল হুদা জেনু বলেন, 'শিব নারায়ণ দাশের নকশা করা পতাকা বাংলার আকাশে প্রথম উড়েছিল। তিনি কুমিল্লার সন্তান। এটা আমাদের কুমিল্লাবাসীর জন্য গৌরবের ও অহংকারের।'

জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, 'তিনি একজন রাজনৈতিক কর্মী ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রথম পতাকা শিব নারায়ণ দাশের হাতেই হয়েছিল। তিনি কখনো নিজের জন্য ভাবেননি। তিনিই প্রথম কুমিল্লার টাউনহল মাঠে পাকিস্তানের পতাকা পুড়েছিলেন।'

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শিব নারায়ণ দাশের সহধর্মিণী বীর মুক্তিযোদ্ধা গীতশ্রী চৌধুরী বলেন, 'আমি ৫৫ বছর ধরে তার সঙ্গে ছিলাম। সেই যুদ্ধের সময়কাল থেকে। এই কুমিল্লা শিব নারায়ণ দাশের প্রাণের কুমিল্লা। শেষ সময় পর্যন্ত কুমিল্লাবাসী শিব নারায়ণ দাশের পাশে ছিলেন। আমরা কৃতজ্ঞ।'

শিব নারায়ণ দাশের ছেলে আদিত্য অর্ণব বলেন, 'বাবাকে শ্রদ্ধা জানাতে যারা এসেছেন, সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। বাবা সবসময় চাইতেন, দুঃখ ও দুর্দশা মুক্ত হয়ে এই দেশ যাতে সামনে এগিয়ে যায়। আমার বাবা দেশের জন্য সবকিছু ত্যাগ করতে প্রস্তুত থাকতেন। এই কারণেই, আমার বাবা মৃত্যুর আগেই তার শরীর মেডিকেল শিক্ষার্থীদের গবেষণার কাজে ব্যবহারের জন্য দান করেন। আমি আমার বাবার আদর্শ লালন করে বড় হতে চাই।'

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তার মরদেহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।

 

Comments

The Daily Star  | English

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

1h ago