বৈশ্বিক স্বাধীনতা সূচকে শ্রীলঙ্কা, ভারত, পাকিস্তানেরও পেছনে বাংলাদেশ

আটলান্টিক কাউন্সিলের ‘গ্লোবাল ফ্রিডম অ্যান্ড প্রসপারিটি রিপোর্ট’ থেকে। ছবি: সংগৃহীত

বৈশ্বিক স্বাধীনতা ও সমৃদ্ধি প্রতিবেদনের স্বাধীনতা সূচকে ১৬৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪১তম এবং সমৃদ্ধি সূচকে ৯৯তম। বাংলাদেশ 'অধিকাংশক্ষেত্রে স্বাধীনতাবঞ্চিত' এবং সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে 'অধিকাংশক্ষেত্রে অসমৃদ্ধ' বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে।

আজ মঙ্গলবার ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) এবং দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশন যৌথভাবে আটলান্টিক কাউন্সিলের নতুন 'গ্লোবাল ফ্রিডম অ্যান্ড প্রসপারিটি রিপোর্ট'র ফলাফল জানাতে 'প্রসপারিটি অ্যান্ড গুড গভর্নেন্স' কনফারেন্সের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আটলান্টিক কাউন্সিলের ফ্রিডম অ্যান্ড প্রসপারিটি সেন্টারের পরিচালক জোসেফ লেমোইন।

আটলান্টিক কাউন্সিলের ‘গ্লোবাল ফ্রিডম অ্যান্ড প্রসপারিটি রিপোর্ট’ থেকে। ছবি: সংগৃহীত

প্রতিবেদনে দুটি পৃথক সূচক রয়েছে—স্বাধীনতা সূচক ও সমৃদ্ধি সূচক। বিশ্বের ১৬৪টি দেশের স্বাধীনতা ও সমৃদ্ধির ধরন অনুযায়ী ক্রম বা অবস্থান নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্বাধীনতা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান টানা ২২ বছর ধরে হ্রাস পাচ্ছে। দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও আইনি অবস্থান এই সূচকের অন্তভূক্ত।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্বাধীনতা সূচকে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভূটান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভারত, এমনকি পাকিস্তানও। দেশগুলোর অবস্থান যথাক্রমে ৬১, ৮৬, ৯৭, ১০৪ ও ১১৩তম।

এর মধ্যে ভূটান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও ভারত 'অধিকাংশক্ষেত্রে স্বাধীন' এবং পাকিস্তান 'অধিকাংশক্ষেত্রে স্বাধীনতাবঞ্চিত' বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

সার্কভুক্ত দক্ষিণ এশিয়ার আরেক দেশ আফগানিস্তান রয়েছে তালিকার সর্বশেষ ১৬৪তম অবস্থানে।

স্বাধীনতা সূচকে শীর্ষ পাঁচটি দেশ হচ্ছে ডেনমার্ক, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, ফিনল্যান্ড ও লুক্সেমবার্গ।

সমৃদ্ধির সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আছে শ্রীলঙ্কা, যে দেশটি গুরুতর অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে সম্প্রতি ঘুড়ে দাঁড়িয়েছে। সূচকে শ্রীলঙ্কার অবস্থান ৭২তম এবং দেশটি 'অধিকাংশ ক্ষেত্রে সমৃদ্ধ'।

এই সূচকে বাংলাদেশের পেছনে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভূটান (১১১), নেপাল (১৩১),  ভারত (১৪৬), পাকিস্তান (১৫০) ও আফগানিস্তান (১৬৩)।

সমৃদ্ধির সূচকে শীর্ষ পাঁচটি দেশ হচ্ছে নরওয়ে, আইসল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন ও নিউজিল্যান্ড।

জোসেফ লেমোইন বলেন, 'যেসব দেশে স্বাধীনতা বেশি রয়েছে সেসব দেশ সমৃদ্ধির ক্ষেত্রেও উচ্চ স্তরে অবস্থান করে। অন্যদিকে কম স্বাধীনতা পাওয়া দেশগুলো সমৃদ্ধিতেও নিম্নস্তরে অবস্থান করে।'

তিনি বলেন, 'শক্তিশালী আইনি ব্যবস্থার পাশাপাশি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা প্রচারকারী দেশগুলোর পরিবেশ এমন থাকে যা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করে। এই দেশগুলো কম স্বাধীনতার দেশগুলোর চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি পরিমাণে বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ পায়।'

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, 'প্রতিটি দেশই দুর্নীতির বিপক্ষে এবং অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অধিকার সুরক্ষিত করতে লড়াই করছে। সমস্যা এড়িয়ে যাওয়া নয়, সমস্যা সক্রিয়ভাবে স্বীকার করা এবং তা মোকাবিলাই মূল বিষয়।'

Comments

The Daily Star  | English

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

9h ago