চট্টগ্রামে গরমে বেড়েছে জ্বর, কাশি, ডায়রিয়া

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম ও আশপাশের জেলাগুলোতে মৃদু তাপপ্রবাহের কারণে তাপমাত্রা প্রায় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। সেইসঙ্গে বেড়েছে তাপপ্রবাহজনিত রোগের প্রকোপ।

জ্বর, কাশি, হিট স্ট্রোক, ডায়রিয়া, মাথাব্যথা, মাথা ঘোরাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছে মানুষ।

বিভিন্ন এলাকার স্থানীয়দের মতে, বেশিরভাগ বাড়িতে অন্তত একজন সদস্য জ্বর, গলাব্যথা, কাশিসহ বিভিন্ন অসুস্থতায় ভুগছেন।

তাছাড়া এই প্রচণ্ড গরমে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট নগরবাসীর যন্ত্রণা বাড়িয়েছে। এ অবস্থায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছে নবজাতক, শিশু ও বৃদ্ধরা।  

নগরীর আসকার দিঘির পাড় এলাকার বাসিন্দা শুভেচ্ছা ঘোষ বলেন, 'আমার চার বছরের শিশুটি পাঁচ দিন ধরে জ্বর ও কাশিতে ভুগছে। ঘরোয়া চিকিৎসায় জ্বর ভালো না হওয়ায় আমরা তাকে শিশু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যাই।'

'এরপর আমার শ্বশুর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।'

তিনি বলেন, 'প্রচণ্ড গরমের মধ্যে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট আমাদের ভোগান্তি আরও  বাড়িয়েছে।'  

যোগাযোগ করা হলে, চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা এম এইচ এম মোসাদ্দেক বলেন, রোববার চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আগামী সপ্তাহে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা কমবে না।

আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকার বাসিন্দা শাহেদুল আজম জানান, তার মা চার দিন ধরে জ্বরে ভুগছেন।

'আমার মা প্রচণ্ড গরমে এক গ্লাস ঠান্ডা পানি পান করেছিলেন, তারপর সেদিন সন্ধ্যা থেকেই জ্বর, ঠাণ্ডায় ভুগছেন।'

চিকিৎকরা জানিয়েছেন, প্রচণ্ড গরমের মধ্যে কিছু ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসসহ অণুজীবগুলি বংশবিস্তার করার অনুকূল পরিবেশ খুঁজে পায়।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. অনিরুদ্ধ ঘোষ বলেন, 'আমার ব্যক্তিগত চেম্বারে এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডেও জ্বর, কাশি এবং ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগী বাড়ছে। তবে, বেশিরভাগ রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার দরকার হচ্ছে না, কারণ তাদের লক্ষণগুলো হালকা।' 

বসন্তের শেষের দিকে এবং গ্রীষ্মের শুরুতে কিছু ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস সক্রিয় হয়ে ওঠে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'মানুষের মধ্যে জ্বর, কাশি, ডায়রিয়া ইত্যাদি রোগ ছড়ানোর জন্য এইসব অণুজীব দায়ী। 

তিনি বলেন, দূষিত পানি ও খাবারের মাধ্যমে অণুজীবগুলি বেশিরভাগ রোগ ছড়ায়। তাই খাদ্য ও পানীয় জল গ্রহণে মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে।  

'এছাড়া, হিট স্ট্রোক হলো আরেকটি স্বাস্থ্যগত সমস্যা যাতে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে, বয়স্ক ব্যক্তিরা প্রচণ্ড গরমের সময় আক্রান্ত হন,' তিনি বলেন।

'তাই প্রচণ্ড গরমে সরাসরি সূর্যের নিচে যাওয়া উচিত নয় এবং যদি কেউ হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় অবিলম্বে তার চিকিৎসা শুরু করা উচিত, বলেন এই চিকিৎসক।

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

6h ago