চট্টগ্রামে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত চিকিৎসকের মৃত্যু

চিকিৎসক কোরবান আলী। ছবি: সংগৃহীত

ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে চট্টগ্রামে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত চিকিৎসক কোরবান আলী মারা গেছেন।

আজ বুধবার সকাল ৭টার দিকে একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে জানান তার আত্মীয় একেএম জসিম উদ্দিন।

ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

গত শুক্রবার কোরবান আলীর ছেলে একজনকে বাঁচাতে ফোন করেছিলেন পুলিশের জরুরি সেবা-৯৯৯ আর তাতেই ক্ষুব্ধ হয়ে ছেলের ‌ওপর হামলা করে সেই গ্যাং সদস্যরা। আর ছেলেকে হামলাকারীদের হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে হামলার শিকার হন দন্ত চিকিৎসক কোরবান আলী।

নগরের আকবরশাহ থানার পশ্চিম ফিরোজ শাহ কলোনি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এই ঘটনায় তার ছেলে আলী রেজা বাদী হয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাসহ আট জনের বিরুদ্ধে আকবর শাহ থানায় মামলা করেছেন।

পুলিশ এই মামলায় তিন জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে।

আলী রেজা সাংবাদিকদের জানান, গত শুক্রবার বিকেলে আকবরশাহ থানা এলাকার পশ্চিম ফিরোজ শাহ হাউজিং এলাকার জে লাইন দিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। এই সময় দুজন স্কুলছাত্রকে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা মারধর করছিল। তার কাছে এসে সেই দুই জন সাহায্য চায়। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ৯৯৯-এ কল দিলে পুলিশ এসে একজনকে ধরে নিয়ে যায়।

ওই দিন সন্ধ্যায় ইফতারি কিনতে বাসা থেকে বের হন আলী রেজা। তখন তাকে একা পেয়ে মারধর করতে থাকেন কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। ছেলেকে মারছে খবর পেয়ে সেখানে ছুটে আসেন বাবা। একপর্যায়ে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা ইট দিয়ে তার বাবার মাথায় গুরুতর আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। প্রথমে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আকবরশাহ থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের সবাই ছাত্রলীগ নেতা গোলাম রসুল নিশানের অনুসারী হিসাবে এলাকাতে পরিচিত। নিশান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ছিলেন ।

আকবরশাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রব্বানী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অভিযুক্ত সবাই নিশানের অনুসারী। নিশান নিজেও এই মামলার আসামি। পুলিশ মামলাটি রেকর্ড করে সেটি তদন্ত করছে।'

পুলিশ ও র‍্যাব চট্টগ্রামে কিশোর গ্যাংয়ের তালিকা করেছে যেখানে নগর জুড়ে সক্রিয় ২০০ কিশোর গ্যাং। এদের দলে পাঁচ থেকে ২০ জনের সদস্য আছে। কিশোর গ্যাংয়ের পৃষ্ঠপোষকতা বা প্রশ্রয় দিচ্ছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ ৬৪ জন 'বড় ভাই'। র‍্যাব গত মার্চ মাস থেকে কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে শতাধিক কিশোর গ্যাং সদস্যকে ধারালো অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে।

Comments

The Daily Star  | English

Doubts growing about interim govt’s capability to govern: Tarique

"If we observe recent developments, doubts are gradually growing among various sections of people and professionals for various reasons about the interim government's ability to carry out its duties."

1h ago