জাতিসংঘে চাকরি পেতে আবেদনের টিপস

UN logo
ছবি: সংগৃহীত

জাতিসংঘে কাজ করে বিশ্ব শান্তি, নিরাপত্তা এবং উন্নয়ন উদ্যোগে অবদান রাখার ইচ্ছা অনেকেরই থাকে। আন্তর্জাতিক শান্তি বজায় রাখা, মানবাধিকার রক্ষা এবং টেকসই উন্নয়নকে সমর্থন করার জন্য জাতিসংঘ প্রতি বছরই আগ্রহীদের জন্য চাকরির সুযোগ দেয়। 

তবে প্রথমবার আবেদন করে কর্মী হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন খুব একটা সহজ হয় না। কিছু বিষয়ে ধারণা থাকলে জাতিসংঘের চাকরির আবেদন গ্রহণযোগ্য হওয়ার সম্ভাবনা বাড়তে পারে। 

বিভিন্ন সংস্থা সম্পর্কে ধারণা নিন

জাতিসংঘ একাধিক সংস্থা, তহবিল এবং প্রোগ্রামের সমন্বয়ে গঠিত একটি বিশাল সংস্থা, যা কয়েকটি ক্ষেত্র নিয়ে কাজ করে। এর আওতায় রয়েছে স্বাস্থ্য (ডব্লিউএইচও), শিশু (ইউনিসেফ), শরণার্থী (ইউএনএইচসিআর), খাদ্য নিরাপত্তার (ডব্লিউএফপি) মতো অঙ্গসংগঠন। যার প্রতিটির রয়েছে নিজস্ব সাংগঠনিক কাঠামো এবং কার্যক্রমের আওতা। জাতিসংঘের কোন সংস্থাটিতে আপনার আগ্রহ, তার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা আছে কি না আবেদন করার আগে জেনে নিন। আপনার কর্মজীবনের লক্ষ্য এবং মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নির্দিষ্ট সংস্থার কাজ ও অবস্থান জানলে সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়া সহজ হবে। 

প্রয়োজনীয় যোগ্যতা আছে কি না দেখুন 

জাতিসংঘের সব সংস্থায় শিক্ষাগত যোগ্যতা, কাজের অভিজ্ঞতা, ভাষার দক্ষতাসহ বিভিন্ন বিষয়ের প্রয়োজন হয়। আবেদন করার আগে এসব বিষয়ে অবগত থাকা আবশ্যক। জাতিসংঘ প্রায়শই গ্র‍্যাজুয়েট ডিগ্রি, ইংরেজি বা ফরাসি ভাষায় দক্ষতা এবং প্রাসঙ্গিক পেশাদার অভিজ্ঞতা আছে এমন প্রার্থীদের আবেদন করার জন্য উৎসাহিত করে। বহু-সাংস্কৃতিক পরিবেশে কাজ করার ক্ষমতা থাকলে আবেদনকারীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।  

আবেদন করার সময় কিছু বিষয়ে নজর দিন 

সাদামাটা আবেদনপত্র খুব একটা আকর্ষণীয় হয় না বিধায় তা গ্রহণযোগ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। আবেদন করার সময় কাজের বিবরণের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রাসঙ্গিক অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা উল্লেখ করুন। আপনার জীবনবৃত্তান্ত এবং কভার লেটার সঠিকভাবে লিখুন। টিমওয়ার্ক, যোগাযোগ, জবাবদিহিতা এবং সৃজনশীলতার মতো ক্ষেত্রগুলোতে আপনার দক্ষতা উল্লেখ করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা কীভাবে উপকারে আসবে তা  উপস্থাপন করতে জাতিসংঘের দক্ষতা কাঠামো ব্যবহার করুন।

সংস্থার মূল্যবোধের প্রতি আপনার অঙ্গীকার হাইলাইট করুন

জাতিসংঘ সততা, পেশাদারিত্ব এবং বৈচিত্র্যের প্রতি সম্মানকে বিবেচনা করে। আপনার আবেদনে এসব বিষয়ের প্রতি আপনার প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করুন। আপনি কীভাবে পেশাদার বা স্বেচ্ছাসেবী কাজে মূল্যবোধ ধরে রেখেছেন সেসবের উদাহরণ দিন। বিভিন্ন দলে কাজ করার সময় কিংবা নেতৃস্থানীয় প্রকল্পে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বিভিন্ন সম্প্রদায়কে কীভাবে পরিষেবা দিয়েছেন তা উল্লেখ করুন। আপনার শেখার আগ্রহ আবেদনপত্রে উপস্থাপিত হলে গ্রহণযোগ্য হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। 

সাক্ষাৎকারের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করুন

প্রাথমিক পর্যায়ে আবেদন গ্রহণযোগ্য হলে সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হবে। জাতিসংঘের সব সংস্থার নির্বাচন প্রক্রিয়ার জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। সাক্ষাৎকারে জাতিসংঘের মূল্যবোধ এবং চাকরিভেদে নির্দিষ্ট দক্ষতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ পরিস্থিতিতে আপনার দক্ষতা ও জ্ঞান প্রয়োগের ক্ষমতা মূল্যায়ন করা হবে। জাতিসংঘের দক্ষতা কাঠামো পর্যালোচনা করে প্রস্তুতি নিন এবং আপনার অতীত অভিজ্ঞতা থেকে এসব দক্ষতা প্রদর্শন করে এমন সুনির্দিষ্ট উদাহরণের কথা মাথায় রাখুন।

ধৈর্যশীল এবং অবিচল থাকুন

জাতিসংঘের চাকরির আবেদন প্রক্রিয়া দীর্ঘ এবং প্রতিযোগিতামূলক হয় বিধায় আবেদন জমা দেওয়ার পর অপেক্ষা করতে হয়। যা কয়েক মাসব্যাপী হতে পারে। আপনার দক্ষতা, নেটওয়ার্কিং এবং জাতিসংঘের মিশনের সঙ্গে সম্পৃক্ত স্বেচ্ছাসেবক হওয়ার সুযোগ অনুসন্ধান করতে সেই সময় কাজে লাগাতে পারলে ভালো হবে। প্রথমবার চাকরি না পেলেও চেষ্টা করতে থাকুন। অতীতের প্রক্রিয়া থেকে ধারণা নিতে পারলে লক্ষ্য অর্জন সহজ হবে। 

নেটওয়ার্কিং করুন 

নেটওয়ার্কিং আপনার জাতিসংঘে চাকরি করার স্বপ্নপূরণে মূল্যবান হাতিয়ার হতে পারে। পেশাদার নেটওয়ার্কিং সাইট, জাতিসংঘের অ্যাসোসিয়েশন ইভেন্ট বা প্রাসঙ্গিক সেমিনার এবং ওয়েবিনারের মাধ্যমে জাতিসংঘের বর্তমান এবং প্রাক্তন কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। জাতিসংঘের কার্যক্রমের ধারণা, আবেদনের জন্য টিপস এবং আসন্ন সুযোগ সম্পর্কে তথ্য পেতে এটি বেশ উপকারে আসবে। আবেদনের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে জাতিসংঘ সম্পর্কিত অনলাইন কোর্স বা ভাষা ক্লাসসহ বিভিন্ন সুযোগ অনুসন্ধান করতে থাকলে জাতিসংঘের কর্মী হিসেবে পরিচিতি গড়ে তুলতে পারবেন আপনিও।

Comments

The Daily Star  | English

Each martyr family to get Tk30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

18m ago