রূপগঞ্জে ২ পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ৮

ছবি: সংঘর্ষের সময় ধারণকৃত একটি ভিডিও থেকে নেওয়া

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় পুরোনো দ্বন্দ্বের জেরে দুইপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত আটজন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া গ্রামে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও সাবেক ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেনের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এর আগে রোববার রাতেও উভয়পক্ষের মধ্যে মারামারি হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধরা হলেন—আকবর (২৪), তাজেল (৩৬), জয়নাল (৩৫), শামীম (২৫), মুক্তার হোসেন (৬০), নুর হোসেন (২৪), আরিফ (৯) ও রোমান (২০)।

তারা মোশারফ হোসেনের অনুসারী বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, আহতরা শর্টগানের ছোড়া ছররা গুলিতে আহত হয়েছেন। তবে তাদের আঘাত গুরুতর নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কায়েতপাড়ায় রফিকুল ইসলাম ও তার ভাই জেলা পরিষদের সদস্য মিজানুর রহমানের সঙ্গে সাবেক ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেনের দ্বন্দ্ব পুরোনো। বিভিন্ন আবাসন কোম্পানির পক্ষে জমি বেচাকেনার ব্যবসা নিয়ে প্রায় সময়ই তাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

মোশারফ হত্যা-ধর্ষণ-চাঁদাবাজিসহ অন্তত ৪২টি মামলার আসামি বলে থানা সূত্রে জানা গেছে।

গত রোববার রাতে বাড়ি ফেরার পথে রফিকুল ইসলামের অনুসারী নাওড়ার বাসিন্দা নাজমুল নামে এক যুবককে পিটিয়ে আহত করে মোশারফের অনুসারীরা। এই ঘটনার জেরে সোমবার সকালে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। উভয়পক্ষ এই সময় আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করে।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।

মোশারফ হোসেনের ছেলে নিরব হোসেন অভিযোগ করেন, সকালে মোশারফ হোসেনের বাড়ি ঘেরাও করে রফিকুল ইসলাম, তার ভাই মিজানুর রহমানসহ তাদের অনুসারী লোকজন।

তিনি বলেন, 'রফিক ও মিজানের নেতৃত্বে জশু, রুবেল, কানা মোজাম্মেল, জাহিদ, শিপলু, সজিব, রাজিব, আলাদিনসহ শতাধিক সন্ত্রাসী বাহিনীর আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তাদের গুলিতে আটজন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি।'

তবে, আগের রাতে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেন নিরব।

অভিযোগ অস্বীকার করে মিজানুর রহমান বলেন, তিনি ঢাকায় আছেন। সংঘর্ষের ঘটনায় তিনি কিংবা তার পরিচিত কেউ জড়িত নন বলে দাবি করেন তিনি।

মিজানুর বলেন, 'আমি শুনেছি নাজমুল নামে গ্রামের একটা নিরীহ ছেলেকে গতরাতে মারধর করে টাকা-পয়সা রেখে দেয় মোশারফ ও তার লোকজন। এতে গ্রামবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। সকালে গ্রামবাসীদের ওপর আবারও মোশারফের লোকজন হামলা চালিয়েছে বলে শুনেছি। হামলায় গ্রামবাসীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এর বেশি কিছু ভাই আমি জানি না। আমি তো গ্রামে ছিলামই না।'

পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নাওড়া গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ('গ' সার্কেল) আবির হোসেন।

তিনি বলেন, 'রোববার রাতে উভয়পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এরই জেরে সকালেও তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করছে পুলিশ। তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

আজ দুপুর সাড়ে ৩টা পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।

Comments

The Daily Star  | English
compensation for uprising martyrs families

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

7h ago