বান্দরবানে গাছ পাচারের হাতি ও মাহুত আটক
বান্দরবানের লামার প্রাকৃতিক বন থেকে কেটে নেওয়া গাছ পাচারের কাজে ব্যবহৃত হাতি ও এর মাহুতকে আটক করেছে বনবিভাগ। পাশাপাশি কেটে রাখা গাছও জব্দ করা হয়েছে।
আজ শনিবার লামা বন বিভাগের উদ্যোগে লেমু পালং মৌজার অন্তর্গত লেমু পালং খাল ও শিলঝিরি এলাকায় এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
গত ২১ মার্চ আন্তর্জাতিক বন দিবসে দ্য ডেইলি স্টারে 'বান্দরবানে বন থেকে অন্তত ২৫০ মাতৃগাছ কর্তন, দুই আ. লীগ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ' শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বান্দরবানের লামার বন থেকে অন্তত ২৫০ মাতৃগাছ ও বনজ ঔষধি গাছ কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। এসব গাছ বন থেকে হাতি দিয়ে টেনে নিয়ে লামা উপজেলার সরুই ইউনিয়নের লেমু পালং মৌজায় পালং খাল, শিলঝিরির ভেতরে বিভিন্ন জায়গায় রাখা হয়েছে। এছাড়া কেটে নেওয়া গাছ পরিবহনের জন্য পাহাড় কেটে, ঝিরির পানি প্রবাহ বন্ধ করে ২০ কিলোমিটারের বেশি রাস্তাও তৈরি করা হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত ৩০ বছর ধরেই এভাবে বন থেকে গাছ কেটে পাচার করা হচ্ছে। এই সিন্ডিকেটের পেছনে দুই সহোদর—লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খোরশেদ আলম চৌধুরী ও উপজেলা যুবলীগের সদস্য মোরশেদ আলম চৌধুরী জড়িত।
প্রাকৃতিক যে বন থেকে এসব গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে সেখানে বংশানুক্রমে স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ম্রো সম্প্রদায়ের মানুষেরা বাস করেন।
স্থানীয়রা বলছেন, আজকের অভিযানের খবর শুনে তারা হাতি ও এর মাহুতকে নজরে রাখেন। পরে বন বিভাগের লোকজন আসলে ধরিয়ে দেন। এ সময় এলাকার হেডম্যানসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। তারা নির্বিচারে গাছ কেটে প্রাকৃতিক বন ধ্বংসের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানান।
অভিযানে হাতি ও এর মাহুতকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে লামা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক বেলাল বলেন, 'ডেইলি স্টারে সংবাদ প্রকাশের পর স্থানীয় ম্রো জনগোষ্ঠীর লোকজনকে নিয়েই এই অভিযান চালানো হয়েছে।'
এই বন কর্মকর্তা জানান, আটক মাহুত ও হাতিটিকে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে তোলা হবে।
এই ঘটনায় কোন কোন ধারায় মামলা করা হবে, কাদের আসামি করা হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে আরিফুল হক বলেন, 'এই মুহুর্তে এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না। অভিযানের দল পৌঁছানোর পর বিস্তারিত বলতে পারব।'
Comments