সাংবাদিক শফিউজ্জামান রানার গ্রেপ্তার-কারাদণ্ডের ঘটনা অনুসন্ধানে শেরপুরে তথ্য কমিশনার

শফিউজ্জামান রানা। ছবি: সংগৃহীত

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে তথ্য চাইতে গিয়ে দৈনিক দেশ রূপান্তরের নকলা উপজেলা সংবাদদাতা শফিউজ্জামান রানার গ্রেপ্তার ও কারাদণ্ডের ঘটনার বিস্তারিত অনুসন্ধানে শেরপুর গেছেন তথ্য কমিশনার শহীদুল আলম ঝিনুক।

রোববার তিনি শেরপুর যান এবং আগামীকালও তিনি সেখানে অবস্থান করবেন।

তথ্য কমিশনের সহকারী পরিচালক (প্রচার ও প্রকাশ) লিটন কুমার প্রামাণিক দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, 'অনুসন্ধানের জন্য কমিশনার দুইদিনের জন্য শেরপুর আছেন। তিনি কারাগারে যাবেন, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে দেখা করবেন। ফিরে এসে কমিশনে প্রতিবেদন জমা দেবেন।'

এর আগে গত মঙ্গলবার দুপুরে শফিউজ্জামান রানাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন নকলা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শিহাবুল আরিফের নেতৃত্বাধীন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

তার বিরুদ্ধে নকলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে 'খারাপ আচরণ ও সরকারি নথি নেওয়ার চেষ্টা'র অভিযোগ আনা হয়।

জানতে চাইলে নকলার ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সাংবাদিক রানা মঙ্গলবার দুপুরে ইউএনও কার্যালয়ে গিয়ে সরকারি গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র দাবি করেন। সেসময় দায়িত্বরত কর্মকর্তা শিলা আক্তার তাকে সরকারি গোপন নথি দিতে অস্বীকার করেন। তারপরও তিনি বাধা উপেক্ষা করে নথিগুলো নেওয়ার চেষ্টা করেন। তখন শিলা বাধা দিলে রানা তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।'

ইউএনও বলেন, 'বিষয়টি জেনে আমি ঘটনাস্থলে গেলে আমার সঙ্গেও অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন ওই সাংবাদিক হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে।'

পরে নকলা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শিহাবুল আরিফ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে সাংবাদিক রানাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন এবং ৫ মার্চ বিকেলেই তাকে শেরপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিক শফিউজ্জামানের স্ত্রী বন্যা আক্তার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত মঙ্গলবার ছেলে শাহরিয়ার জাহানকে সঙ্গে নিয়ে এডিপি প্রকল্পের কম্পিউটার ও ল্যাপটপ সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে তথ্য অধিকার আইনে ইউএনও কার্যালয়ে আবেদন জমা দেন রানা। আবেদনটি কার্যালয়ের কর্মচারী গোপনীয় সহকারী (সিএ) শীলার কাছে দিয়ে রিসিভ কপি চান। সেসময় শীলা তাকে অপেক্ষা করতে বলেন। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর আবার অনুলিপি চাইলে শীলা বলেন যে, ইউএনওকে ছাড়া রিসিভ কপি দেওয়া যাবে না।'

বন্যা আরও বলেন, 'একপর্যায়ে নকলা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ইউএনও ও সিএ শীলার সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে রানাকে আটক করে। পরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) শিহাবুল আরিফ ওই কার্যালয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে রানাকে কারাদণ্ড দেন।'

'ছেলে বলেছে যে রানা অফিসেই ঢোকেনি। লঘু পাপে তাকে গুরুদণ্ড দেওয়া হয়েছে', বলেন তিনি।

বিষয়টি নিয়ে ইউএনও সাদিয়া বলেন, 'সাংবাদিক রানা তথ্য চেয়ে আবেদন করলে আমরা তা গ্রহণ করি এবং তথ্য দেওয়ার জন্য সময় নেওয়া হয়। কিন্তু তিনি শীলার কাছে থাকা তথ্যের ফাইল টানাটানি করেন এবং নানা ধরনের অশালীন ভাষায় কথাবর্তা বলেন। তিনি অসদাচরণ করেছেন। এতে অফিসের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh lost over Tk 226,000cr for tax evasion: CPD

CPD estimated that around 50 percent of this amount has been lost to corporate tax evasion.

3h ago