যুক্তরাষ্ট্রে ২৪-২৭ মে 'নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলা'
'যত বই, তত প্রাণ' স্লোগান নিয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৩৩তম নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলা। আগামী ২৪-২৭ মে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে অবস্থিত জ্যামাইকা পারফর্মিং আর্টস সেন্টারে এ মেলা হবে।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানায় মেলার আয়োজক সংস্থা মুক্তধারা ফাউন্ডেশন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন ড. নুরুন নবী বলেন, '১৯৯২ সাল থেকে গত ৩২ বছর ধরে নিয়মিত এই মেলা আয়োজিত হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবার ৩৩তম বারের মতো নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলা। এবারের আয়োজনের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন সাংবাদিক ও লেখক হাসান ফেরদৌস। এবারের বইমেলায় বাংলাদেশ থেকে ২৫টির মতো প্রকাশনা সংস্থা, কলকাতা থেকে ৫টি এবং নিউ ইয়র্কসহ আমেরিকা, কানাডার ১০টিসহ মোট ৪০টি প্রকাশনা অংশগ্রহণ করবে। যুক্তরাষ্ট্রের ২০টির বেশি রাজ্য থেকে এবং কানাডা, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন ও জাপান থেকে শতাধিক লেখক সাহিত্যিক এই মেলায় অংশগ্রহণ করবেন।'
মেলার বিস্তারিত তুলে ধরে মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা রোকেয়া হায়দার বলেন, 'এবারের এই মেলার অন্যতম প্রধান আকর্ষণ বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী পালন অনুষ্ঠান। এ ছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ার ভূমিকা নিয়ে থাকছে বিশেষ আলোচনা।'
তিনি আরও বলেন, 'প্রতিবারের মতো এবারও মেলায় দেওয়া হবে মুক্তধারা-জিএফবি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪। এ পুরস্কারের অর্থমান ৩০০০ ডলার। গত বছর এ পুরস্কার পেয়েছেন কবি আসাদ চৌধুরী। এ ছাড়া অভিবাসী নতুন লেখকদের প্রকাশিত গ্রন্থ থেকে পুরস্কার এবং শহীদ কাদরী গ্রন্থ পুরস্কার ২০২৪ দেওয়া হবে। অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা সংস্থা থেকে বিজয়ী শ্রেষ্ঠ প্রকাশনা সংস্থাকে পুরস্কৃত করা হবে চিত্তরঞ্জন সাহা সেরা প্রকাশনা সংস্থা পুরস্কার ২০২৪।'
সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে একুশে পদকপ্রাপ্ত ছাড়াকার লুৎফর রহমান রিটন বলেন, 'নিউইয়র্কের বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের কাছে দ্বিতীয় বইমেলা। বাংলা একাডেমির আয়োজিত বইমেলার পরে নিউইয়র্কের বইমেলা ৩৩ বছর ধরে আরেকটি গৌরব অর্জন করেছে। এটা বাঙালির জন্য একটি বিশাল ব্যাপ্তি। মুক্তধারার এই অবদান সফল হবে।'
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি নুরুল হুদা বলেন, 'মায়ের ভাষার জন্য জীবন দিলো যারা তারাই বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রথম শহীদ। তারা বাংলা ভাষা উচ্চারণ করে বাঙালি হিসেবে পরিচিত হয়েছে। তারপর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে। বিশ্বে আজ বাঙালি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছি এটা আমার এক ধরনের অহংকার। নিউইয়র্কের বইমেলার ৩৩ বছর চলছে। কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন ৩৩ বছর কেউ কথা রাখেনি। কিন্তু মুক্তধারা ফাউন্ডেশন তার কথা রেখেছে। তারা ৩২ বছর পার করে ৩৩ বছরে এই মেলা আয়োজন করছে।'
তিনি আরও বলেন, 'অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে মুক্তধারা ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বাংলা একাডেমি দুইটাই শুরু করেছে বইমেলা। তারা ভাষাকে স্থায়ীভাবে রাখার জন্য এই কাজটা করে যাচ্ছে। আমি প্রত্যাশা করছি, তারা তাদের এই ধারা অব্যাহত রাখবে।'
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন মুক্তধারা ফাউন্ডেশন উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদ, জাতীয় কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, শিশু সাহিত্যিক লুৎফর রহমান রিটন, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশনা বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি আলমগীর শিকদার লোটন, সময় প্রকাশনীর প্রকাশক ফরিদ আহমেদ, আবিষ্কার প্রকাশনীর প্রকাশক দেলোয়ার হোসেন, অনন্যা প্রকাশনীর প্রকাশক মনিরুল হক, কবি সৈয়দ আল ফারুক, ডা. হুমায়ুন কবীর, সৈয়দ শামীম ও কোলকাতা থেকে আগত কবি কাজল চক্রবর্তী।
অনুষ্ঠান শেষে সঞ্চালক মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা গোলাম ফারুক ভূঁইয়া, নিউইয়র্ক থেকে আসা মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের কার্যকরী কমিটির সদস্য ড. ওবায়দুল্লা মামুন, ইউসুফ রেজা, সাহিত্য ও প্রকাশন সম্পাদক আদনান সৈয়দ এবং প্রচার সম্পাদক তোফাজ্জল লিটনকে পরিচয় করিয়ে দেন।
Comments