শিক্ষকরা আন্দোলন না করলে, ছাত্রলীগ সংঘর্ষের সাহস পেত না: চবি উপাচার্য
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শিক্ষকদের চলমান আন্দোলন ছাত্রলীগের কর্মীদের সংঘর্ষে জড়াতে প্রভাবিত করেছে বলে দাবি করেছেন উপাচার্য শিরীণ আখতার।
আজ রোববার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মহানগরীর বাদশা মিয়া সড়কে চবির চারুকলা ইনস্টিটিউটে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এ দাবি জানান।
এ সময় উপাচার্য শিরীণ আখতার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির আন্দোলন, ছাত্রলীগের গ্রুপিং-সংঘর্ষ ও অনিয়ম-দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন।
ছাত্রলীগের সংঘর্ষ প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, 'এ ব্যর্থতা আমার না। মানুষের চিন্তায় ভুল। ওরা মনে করেছে এভাবে কিছু আদায় হবে। ছাত্রদের মধ্যে যে অস্থিরতা চলছে সেখানে শিক্ষক সমিতির আন্দোলন তাদের প্রভাবিত করেছে বলে আমি মনে করি।'
তিনি বলেন, 'শিক্ষক সমিতি এরকম অযৌক্তিক আন্দোলন না করলে ছাত্ররা এমন সাহস পেত না। আমাদের এখানে মডেল থানা হচ্ছে। থানা হয়ে গেলে আমাদের এখানে পুলিশ থাকবে। ছাত্রদের যে মারামারির কথা বলছেন সেটা নিরসন হবে।'
সংবাদ সম্মেলনে চবি উপাচার্য শিরীণ আখতার আরও বলেন, 'চবি শিক্ষক সমিতির একাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে যে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছে, তা দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করছে এবং সুনাম ক্ষুণ্ণ করছে। শিক্ষক সমিতির ব্যানারে এ ধরণের কর্মসূচি করা হচ্ছে বলে দাবি করা হলেও, সমিতির একাংশ এ কর্মসূচি পালন করছে।'
বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে শিক্ষক সমিতির একাংশ ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করতে চান অভিযোগ করে তিনি বলেন, 'যদি কোনো অনিয়ম ঘটে থাকে, শিক্ষক সমিতির সিন্ডিকেটের কাছে আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া যেকোনো সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা পক্ষ চাইলে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী আদালতের শরণাপন্নও হতে পারেন।'
'সেটা না করে আমার কার্যালয় ঘেরাও করা এবং পরবর্তীতে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমার এবং উপ-উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, নিয়ম-অনিয়ম নয়, তাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির মধ্য দিয়ে নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করা,' যোগ করেন উপাচার্য।
ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বা কোনো চাপ আছে কি না, জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, 'আমরা চাইলেই ব্যবস্থা নিতে পারি না। আমাদের কিছু পর্ষদ আছে। সেগুলোর মাধ্যমে করতে হয়। আমরা তদন্ত কমিটি ছাড়া কোনো ছাত্রকে আটক করতে পারি না। আমাদের নিয়মে আছে। ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনায় আমরা তদন্ত কমিটি করেছি। পাঁচদিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলেছি। রিপোর্টে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য বেনু কুমার দে, প্রক্টর নুরুল আজিম শিকদার ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ফরিদুল আলম।
Comments