সাগর-রুনি হত্যার তদন্ত কবে শেষ হবে, তা নির্ধারণ সম্ভব না: আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। স্টার ফাইল ছবি

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত কবে শেষ হবে, তা নির্ধারণ করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

আজ সোমবার জাতীয় সংসদে ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বহুল আলোচিত এই মামলাকে জটিল আখ্যা দিয়ে আইনমন্ত্রী আরও বলেন, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তদন্তকারী সংস্থা মামলার নিষ্পত্তি করবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সংসদে উপস্থিত না থাকায় আজকের প্রশ্নোত্তর পর্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।

সম্পূরক প্রশ্নে হাফিজ উদ্দিন বলেন, 'সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের পর এক যুগ পেরিয়ে গেছে। তদন্ত এখনো শেষ হয়নি। পুলিশ করতে পারে না এমন কিছু নেই। এই মামলার তদন্ত শেষ হতে কত বছর লাগবে?'

তিনি আরও বলেন, 'তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বছরের মধ্যে এই হত্যা মামলার চার্জশিট দেওয়া হবে কি না, জানতে চাই।'

জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, 'আমি (এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে) সংসদ সদস্যের উদ্বেগকে সম্মান জানাই। একটি বিষয় আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, যারা তদন্ত করছেন তারা হত্যার রহস্য উদঘাটন না করা পর্যন্ত তদন্ত শেষ করে দেওয়া ঠিক হবে না।'

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আরও বলেন, 'তদন্তের খুব গভীরে না যাওয়া লাগলে, দ্রুত তদন্ত শেষ করা যায় এবং অপরাধীদের সহজেই ধরা যায়।'

'সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত একটু কঠিন। আমি শুধু এটুকু বলতে পারি, তদন্তকারী সংস্থা মামলাটি সঠিকভাবে তদন্ত করবে এবং সমাধান করবে। যারা দোষী তাদের ধরতে হবে। কিন্তু আমি এর সময় নির্ধারণ করতে চাই না। একজন আইনজীবী হিসেবে আমি জানি যে এটা সম্ভব নয়,' বলেন তিনি।

এর আগে গত ২ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার ঘটনায় সঠিকভাবে দোষী নির্ণয়ে তদন্তের জন্য প্রয়োজনে ৫০ বছর সময় দিতে হবে।

তিনি আরও বলেছিলেন, 'মামলায় যদি পুলিশ তদন্ত শেষ না করতে পারে, তাহলে কি জোর করে সেই তদন্ত সমাপ্ত করে একটা চূড়ান্ত প্রতিবেদন কিংবা অভিযোগপত্র দেওয়ানো ঠিক?'

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও তার স্ত্রী এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের বাসায় খুন হন। এই হত্যাকাণ্ডের পর রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা করেন।

সেসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তারা বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই খুনিদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা হবে। কিন্তু ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে প্রায় এক যুগ হয়ে গেলেও এখনও এ মামলার বিচারই শুরু করা যায়নি।

যদিও এই সাংবাদিক দম্পতি হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে বিভিন্ন সময় রাজপথে আন্দোলন করেছেন তাদের সহকর্মীরা।

এ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন ঠিক সময়ে জমা দিতে আদালত নির্দেশ দিলেও তদন্তকারী কর্মকর্তারা তা পারছেন না।

এ পর্যন্ত ১০৬ বার সময় বৃদ্ধি করেও সফল হতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। গত জানুয়ারিতে ১০৭ বারের মতো সময় বৃদ্ধি করেছেন আদালত।

Comments

The Daily Star  | English

Cyber protection ordinance: Draft fails to shake off ghosts of the past

The newly approved draft Cyber Protection Ordinance retains many of the clauses of its predecessors that drew flak from across the world for stifling freedom of expression.

10h ago