শ্রমিকেরা মামলা করে নাই: ড. ইউনূস

শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় সাজার রায় চ্যালেঞ্জ করে আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করার পর ড. ইউনূস সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে হওয়া মামলার বিষয়ে আজ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

এসময় তিনি বলেন, 'সরকার বারবার বলছে, সকল পর্যায় থেকে বলছে এই মামলা সরকার করে নাই। আপনারা (সাংবাদিক) তো সাক্ষী। আপনারা কেউ তো কই কিছু বলছেন না। এটা কি সরকার করল নাকি শ্রমিক করল? আমাকে একটু জবাবটা দেন।…এটা আবারো বলেন, যে এটা মিথ্যা কথা।'

তিনি বলেন, 'এটা কলকারখানা অধিদপ্তর, সরকারের অধিদপ্তর করেছে। শ্রমিকেরা করে নাই। শ্রমিকেরা এর কিছুর মধ্যে নাই।'

আজ রোববার শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় সাজার রায় চ্যালেঞ্জ করে আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করার পর ড. ইউনূস সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

ড. ইউনূস বলেন, আমরা তিন শূন্যের পৃথিবী গড়তে চাই। যেখানে নেট কার্বন এমিশন জিরো, জিরো পভার্টি এবং জিরো আনএমপ্লয়মেন্ট আরেকটা হলো ওয়েলথ কনসেনট্রেশন। সমস্ত সম্পদ মালিক ওপরের দিকে হচ্ছে। নিচের দিকের মানুষ বঞ্চিত হয়ে যাচ্ছে। সম্পদ একদিকে ছোটে, সেটা হলো বড়লোকের পেছনে। সমস্ত প্রতিষ্ঠান, আইন, সমস্ত নীতি-নির্ধারণ, সব স্ট্রাকচার সবকিছু তার জন্য সৃষ্টি হয়েছে। আমরা এখান থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। কাজেই আমরা সেই তিন শূন্যের পৃথিবী গড়তে চাই। সেটা আমাদের কমিটমেন্ট। কাজেই আমরা চাই এটার পেছনে আমরা যারা আছি সেটা যাতে...আর আমাদের বয়সও তো বেশি নাই। আর অল্প কয়দিন সময় আছে। এই সময়ের মধ্যে আমরা যা করতে পারি।'

কেন আপনি এই পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন, আপনি কী মনে করেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমরা একটা স্বপ্নের পেছনে ছুটেছি। এই স্বপ্নের মধ্যে পড়ে গিয়ে কারও বিরক্তিভাজন হয়েছি।'

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'কেন এই মামলা তা আমি বলতে পারব না।'

এই সব জিনিস আপনাকে বিচলিত করতে পারবে না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আশা করি পারবে না। যে কয়দিন সময় আছে কাজগুলো করার। আমাদের সামনে অসম্পূর্ণ কাজ অনেক। আমরা দেখছি পৃথিবীব্যাপী তার একটা বড় রকমের সমর্থন আসছে। তরুণরা আসছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এগিয়ে আসছে। এখন ১০৭টা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউনূস সোশ্যাল বিজনেস সেন্টার সৃষ্টি করা হয়েছে। সারা পৃথিবীজুড়ে ৩৭টি দেশে ইউনূস সেন্টার আছে। এখন রাশিয়াতে সোশ্যাল বিজনেস সেন্টার শুরু হচ্ছে। কাজেই হেন দেশ নাই যেখানে সোশ্যাল বিজনেস সেন্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থাৎ একাডেমিক জগৎ যেটা সবচেয়ে কঠিন জগৎ সেখানে একাডেমিকরাই এই সমস্যার সৃষ্টি করেছে একাডেমিকদেরকেই এটা সমাধান দিতে হবে। নাহলে এটা পাল্টাবে না। সেজন্য আমরা একাডেমিকদের সঙ্গে কাজ করছি।'

পরে ড. ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, 'আজ আদালতে আমরা জামিন প্রার্থনা করেছি এবং আমরা আপিল করেছি। তার আগে আপনাদের কাছে অধ্যাপক ড. ইউনূস যেকথা বলছেন সেকথা আবার বলতে চাই। রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মহল থেকে আরম্ভ করে সব জায়গায়, বিদেশিদের কাছেও বলা হচ্ছে সরকার মামলা করে নাই। এটা করেছে শ্রমিকরা। কিন্তু ঘটনা সঠিক না। আপনারা জানেন এই মামলা করেছে সরকার। তার প্রতিষ্ঠান কলকারখানা অধিদপ্তরের মাধ্যমে। মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে যে শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ীকরণ করা হয় নাই, অর্জিত ছুটি দেওয়া হয় নাই এবং লভ্যাংশের পাঁচ পার্সেন্ট দেওয়া হয় নাই। এই মিথ্যা মামলা সরকারি প্রতিষ্ঠান সরকারি নির্দেশে করেছে। এই মামলারই রায় হয়েছে। এই রায়টা যেটা হয়েছে সেটা সম্পূর্ণ অবৈধ।'

আইনজীবী জানান, আজকের আদালত আমাদের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন। এবং নিম্নতম আদালতের সম্পূর্ণ রায়কে স্থগিত করেছেন  এবং আগামী ৩ মার্চ ওই নিম্ন আদালতের নথি আসার জন্য তারিখ ধার্য করেছেন আর সবাইকে আপিল শুনানি না হওয়া পর্যন্ত স্থায়ী জামিন দিয়েছেন।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh alleges border abuse by BSF

Those pushed-in allege torture, abuses in India

A Bangladeshi woman has alleged that India’s Border Security Force (BSF) tied empty plastic bottles to her and her three daughters to keep them afloat, then pushed them into the Feni river along the Tripura border in the dark of night, in a chilling account of abuse at the border.

4h ago