অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন নির্বাচন নিয়ে ‘ইলা’কে সতর্ক করল চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের আগে বিধি ভঙ্গ করে অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচন আয়োজন করায় চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামিক ইউনিভার্সিটি ল' অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনকে (ইলা) সতর্ক করেছে আইনজীবী সমিতির মুখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তা। অভিযোগ উঠেছে সমিতির নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই আগামী ২৭ জানুয়ারি নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ইলা।
অনড় অবস্থানের কারণে এখন মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে ইলা ও জেলা আইনজীবী সমিতি।
উল্লেখ্য, ইলার সদস্যরা আইনজীবী সমিতির সদস্য। জেলা আইনজীবী সমিতিতে ইলার ৬০০ থেকে ৭০০ জন সদস্য রয়েছেন। অন্যদিকে ইলার নিজস্ব সদস্য সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৮০০।
আগামী ১১ জানুয়ারি চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির ২০২৪ সালের কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এই নির্বাচন উপলক্ষে গঠনতন্ত্রে থাকা আচরণবিধি ইতোমধ্যে কার্যকর হয়েছে। আচরণবিধি অনুযায়ী সমিতির কার্যকরী পরিষদ ছাড়া আইনজীবী সংশ্লিষ্ট বা আইনজীবীদের স্বার্থ প্রদর্শন করে কোনো নামে কোনো সংগঠন/সমিতি/পরিষদ বা অন্য কোনো নামে বা ব্যানারে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য/সদস্যদের যেকোনো সংখ্যক সদস্যকে উপস্থিত রেখে সমিতির নির্বাচনকে প্রভাবিত করে এমন কোনো ঘরোয়া বা ঘরের বাইরে কোথাও কোনো সভা, প্রীতি সমাবেশ, চা চক্র, বনভোজন, আপ্যায়ন ইত্যাদি অনুষ্ঠান করা যাবে না।
মুখ্য নির্বাচন কর্মকর্তা অ্যাডভোকেট ফখরুদ্দিন চৌধুরী ইতিমধ্যে এই বিষয়ে নির্দেশনাও জারি করেছেন। তবে অভিযোগ উঠেছে এই নির্দেশনা উপেক্ষা করেই আগামী ২৭ জানুয়ারি নগরীর কাজীর দেউড়ি এলাকায় একটি কনভেনশন সেন্টারে নির্বাচনের আয়োজন করেছে 'ইলা'। ফলে তাদের ভোটাধিকার বাতিল করার কথাও বলেছেন নির্বাচন কর্মকর্তা।
এর আগেও নির্বাচনের আয়োজন করতে গিয়ে আইনজীবী সমিতির কড়াকড়িতে নির্বাচনের তারিখ পুনর্নির্ধারণ করে ইলা।
গত ২০ জানুয়ারি নির্বাচন করার জন্য চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির অডিটোরিয়াম বরাদ্দের জন্য আবেদন করে ইলা। তবে জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের সময় অন্য কোনো সংগঠনের নির্বাচনের ওপর বিধিনিষেধ থাকায় তা বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। এর একদিন পর ২১ জানুয়ারি জেলা আইনজীবী সমিতির মুখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তা ২৭ জানুয়ারি আই আইসিইউ ল' অ্যালাইমাই অ্যাসোসিয়েশনের (ইলা) নির্বাচনের আয়োজন করায় তাদের নির্বাচন কমিশনার সহ পাঁচজনকে সতর্ক করে নোটিশ দিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইলার এক সদস্য দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন 'বর্তমানে যারা ইলাতে নির্বাচন করছেন তাদের মধ্যে কয়েকজন দীর্ঘদিন ধরে পদে আছেন। একটি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হয়েছে। এর মধ্যে তারাহুড়ো করেই নিজেদের নির্বাচন করে আখের গোছাতে চাইছেন ইলার কয়েকজন নেতা।'
তবে ইলার বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রবিউল ইসলাম নয়ন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন 'নিজেদের দ্বন্দ্বের কারণে অনেকেই জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনকে ব্যবহার করে ভুল ভাবে বিষয়টিকে উপস্থাপন করছে।'
প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা ফখরুদ্দিন চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন 'আমরা তাদের সতর্ক করেছি। তারা ছাড়াও অনেকেই নানান ভাবে নানান কিছু করার চেষ্টা করছেন। আমরা সবাইকে বলেছি। ইলার নেতৃবৃন্দের বলা হয়েছে। বিধি না মানলে আমরা ব্যবস্থা নেব। আমাদের রুলসের বাইরে গেলে, আমাদের কথার অমান্য হলে সমিতির আগামী নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার স্থগিত করার মতো সিদ্ধান্ত নেব।'
অ্যাডভোকেট রবিউল ইসলাম নয়ন বলেন 'এটা ওনাদের বোঝার ভুল। ইলাতে শুধু মাত্র আইনজীবী নয়, অন্য অনেক পেশার মানুষ রয়েছেন। এটা সম্পূর্ণ আলাদা সংগঠন। আইনজীবী সমিতির নির্বাচন আর এই নির্বাচন সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। আমাদের এখানে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লাসহ নানান জায়গা থেকে সদস্যরা আসবে। এর মধ্যে বারের সদস্য সংখ্যা এক তৃতীয়াংশ (৬০০ জন)। বাকিরা সবাই আলাদা।'
'ইলা'র প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট সুলতান মোহাম্মদ অহিদ বলেন 'আমরা এখনো চিঠি পাইনি। হাতে পেলে এর জবাব দেওয়া হবে।'
Comments