পাতানো ও ব্যয়বহুল নির্বাচনে প্রার্থীদের গড় ব্যয় দেড় কোটি টাকার বেশি: টিআইবি

নির্বাচন নিয়ে টিআইবি'র প্রতিবেদন
টিআইবির লোগো | সংগৃহীত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে একপাক্ষিক ও পাতানো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ মন্তব্য করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলেছে, এটি দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের ভবিষ্যতের জন্য অশনিসংকেত।

এই নির্বাচনে প্রার্থীদের আওয়ামী লীগের শতভাগ প্রার্থী ন্যূনতম একবার হলেও আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন। অন্য দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও খুব পিছিয়ে ছিলেন না এই প্রতিযোগিতা থেকে। প্রার্থীদের ৯৮ শতাংশই মানেননি নির্বাচনে ন্যূনতম ২৫ লাখ টাকার ব্যয়সীমা।

দেশের ৩০০টি নির্বাচনী আসনের মধ্যে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী এই সংস্থাটি ৫০টি আসনের তথ্য নিয়ে গবেষণা করেছে। আজ বুধবার সংস্থাটির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এই গবেষণার প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

টিআইবির মতে, এই নির্বাচনের ফলে গণতান্ত্রিক অবনমনের অভিজ্ঞতা এবং নির্বাচনী কৌশল ও অভিনবত্ব বিবেচনায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক টেস্ট কেস হিসেবে বিবেচিত হবে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ক্ষমতায় অব্যাহত থাকার কৌশল বাস্তবায়নের একতরফা নির্বাচন সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনের আইনগত বৈধতা নিয়ে হয়তো কোনো চ্যালেঞ্জ হবে না, তবে এ সাফল্য রাজনৈতিক শুদ্ধাচার, গণতান্ত্রিক ও নৈতিকতার মানদণ্ডে চিরকাল প্রশ্নবিদ্ধ থাকবে।

'অবাধ, অংশগ্রহণমূলক, নিরপেক্ষ ও সমান প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র নিশ্চিতের যে পূর্বশর্ত, তা দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রতিপালিত হয়নি', বলেন ইফতেখারুজ্জামান।

টিআইবির গবেষণা বলছে, নির্বাচনে প্রার্থীরা গড়ে এক কোটি ৫৬ লাখ ৮৩ হাজার ৭৭৭ টাকা করে খরচ করেছেন, যা ব্যয়সীমার ছয় গুণ।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সবচেয়ে 'ব্যয়বহুল' উল্লেখ করে সংস্থাটি জানিয়েছে, এবারের নির্বাচন আয়োজনে ব্যয় হয়েছে দুই হাজার ২৭৬ কোটি টাকা। ২০১৮ সালে এই ব্যয় ছিল ৭০০ কোটি, ২০১৪ সালে ৩০০ কোটি টাকা ও ২০০৮ সালে ছিল ২০০ কোটি টাকা।

নির্বাচনকালীন সরকার ইস্যুতে দুই বড় দলের বিপরীতমুখী ও অনড় অবস্থানের কারণে অংশগ্রহণমূলক ও অবাধ নির্বাচন হয়নি বলে টিআইবি মনে করছে৷ সংস্থাটির মতে, বিপরীতমুখী ও অনড় অবস্থানকেন্দ্রিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের লড়াইয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জিম্মিদশা প্রকটতর হয়েছে।

টিআইবির মতে, নির্বাচন কমিশন একতরফা নির্বাচনের এজেন্ডা বাস্তবায়নের অন্যতম অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেছে। অন্যান্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা এবং প্রশাসনও অনুরূপভাবে একই এজেন্ডার সহায়ক ভূমিকায় ব্যবহৃত হয়েছে।

টিআইবি মনে করছে, সরকারের টানা চতুর্থ মেয়াদের সম্ভাব্য সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে যতটুকু আগ্রহ থাকবে, তার চেয়ে অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক হবে শুদ্ধাচার ও নৈতিকতার মানদণ্ডে সরকারের প্রতি জনআস্থা ও গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্ন ও তার প্রভাব। দেশের গণতান্ত্রিক ও নির্বাচনী ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ ক্রমাগত গভীরতর হবে।

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

13h ago