ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন: ঢাকার রিটার্নিং অফিসার
ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করে ঢাকা মহানগরের রিটার্নিং অফিসার ও ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার সাবিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, নাশকতা ঠেকাতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও কমিশন প্রস্তুত আছে।
এ সময় তিনি ভোটারদের নিশ্চিন্তে কেন্দ্রে আসার আহ্বান জানান।
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ মাঠে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে সংসদীয় আসনগুলোতে নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠানোর কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন তিনি।
কাল ভোট, দেশে এই মুহূর্তে সেনাবাহিনীসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় আট লাখ সদস্য ভোটের দায়িত্বে নিয়জিত আছে। গত রাতেও ট্রেনে আগুনে চারজন মানুষ আগুনে পুড়ে মারা গেছে—এমন একটি অবস্থাতে ভোটাররা কার সাহসে, কোন ভারসায় কেন্দ্রে আসবে। ভোটারদের আপনারা কী বলে আশ্বস্ত করবেন গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলে রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, 'যারা নাশকতা করতে চায়, তারা তাদের মতো করে বিষয়টা বেছে নেয়। এর আগে রেললাইন কাটার দুটি ঘটনা ঘটেছিল, সেই জায়গা থেকে আমরা আনসার নিয়োগ করেছিলাম। যে কোনো ট্রেন যাওয়ার আগে রেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী পর্যবেক্ষণ করে। রেল দুর্ঘটনা ঘটানোর মতো নাশকতার কাজটা কিন্তু তারা করতে পারেনি।
'কারণ যারা নাশকতার সঙ্গে যুক্ত ছিল, তখন তাদের ধরে ফেলা হয়েছিল এবং চিহ্নিত করা হয়েছিল। গতকাল যে ঘটনাটা ঘটেছে, নাশকতাকারীদের নিজস্ব উদ্ভাবনার মাধ্যমে ঘটেছে। আমরা টের পাওয়ামাত্রই তাদের গ্রেপ্তারের জন্য ফোর্স নেমে গেছে এবং যতদূর সম্ভব মিডিয়া থেকে জানা গেছে, আমি নিশ্চিত না—দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে,' বলেন তিনি।
সাবিরুল আরও বলেন, 'ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তার বিষয়টা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন, কয়েকটি জায়গায় ঘটেছে নাশকতার ঘটনা। ইতোমধ্যে কমিশনের তরফ থেকে নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে যারা দায়িত্ব পালন করছেন অথবা ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হিসেবে যারা দায়িত্ব পালন করেন, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদেরকে (নাশকতাকারী) প্রতিহত করার জন্য আমাদের সব নির্বাচনী কেন্দ্রগুলো পাহারার বিষয়টি ঘটছে।'
নাশকতা ঠেকাতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও কমিশন প্রস্তুত বলেও এ সময় জানান তিনি।
ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'প্রতি তিনটি ভোটকেন্দ্রের জন্য আমাদের মেট্রোপলিটন পুলিশের ছয়জন করে মোবাইল টিম থাকবে। এর বাইরে আমাদের স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকছে প্রতি সাতটি বা আটটি কেন্দ্রে। ইতোমধ্যে বিজিবি মুভমেন্ট শুরু হয়েছে। আমাদের প্রতিটি সংসদীয় আসনের জন্য ইতোমধ্যে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
'কোনো একটা জায়গায় ভোট যাতে কেউ বিলম্বিত বা এটা করতে না পারে, একজন ভোটার তার নিজের মতো করে যাতে আসতে পারে, কারও ওপর নির্ভর করতে না হয়; ইতোমধ্যে সরকার কার (প্রাইভেটকার) ও জিপ (ফোর হুইলার) উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। রিকশাও সরকার উন্মুক্ত করেছেন। কারণ কোনো একটা জায়গায় হেঁটে যেতে গেলে যে ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারে, সেই কারণে ভোটারদের যাতায়াতের সুবিধার কথা বিবেচনা করে সেটা করা হয়েছে,' করেন তিনি।
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, 'আমরা ভোটারদের আশ্বস্ত করতে চাই, নির্বিঘ্নে-নিরাপদে আপনারা ভোট দিতে আসুন। সব সময় কিছু অপশক্তি, কিছু দুষ্কৃতিকারী তাদের মতো করে চেষ্টা করবে কিন্তু শুভ-অশুভর এই দ্বন্দ্বে এবং মঙ্গল-অমঙ্গলের দ্বন্দ্বে সব সময় আসলে মঙ্গলের জয়টাই হয়।'
তিনি বলেন, 'একটা কথা চিন্তা করে আজকে ম্যাজিস্ট্রেট থেকে শুরু করে নির্বাচনের সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট আমরা যারা আছি, আনসার যারা আছে তারা কিন্তু নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে থাকবে। তারা জীবন বাজি রেখে কেন এই ভোটকেন্দ্রে আসছে? কারণ মানুষের ভোট দেওয়ার যে অধিকার, সেই অধিকার প্রতিপালনের জন্য আমরা তাদের জন্য অপেক্ষা করে আছি। সুতরাং ভোটারদের বলতে চাই, কোথাও যদি নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়া শঙ্কা থাকে, আমাদের নজরে আসামাত্র আমরা সেই জায়গায় ছুটে যাব।'
আমি অবশ্যই আশা করি, আগামীকাল মঙ্গলের শুভযাত্রা হবে, অমঙ্গল দূর হবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'এই কেন্দ্র থেকে সকালে আমরা ব্যালট পেপার নিয়ে যাব। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমরা রুট ঠিক করেছি। সে অনুযায়ী পৌঁছে যাবে।'
Comments