থানায় আসামির ঝুলন্ত মরদেহ: তদন্ত কমিটি গঠন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

থানা থেকে মরদেহ উদ্ধার
গোলাম রাব্বানী। ছবি: সংগৃহীত

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চুরিতে জড়িত সন্দেহে আটকের কয়েক ঘণ্টা পর গত মঙ্গলবার রাতে হবিগঞ্জের বানিয়াচং থানার একটি কক্ষে আটককৃত যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া যায়।

পুলিশ জানায়, মৃত গোলাম রাব্বানী বানিয়াচং উপজেলার নন্দীপাড়া মহল্লার মিহির উদ্দিনের ছেলে। পুলিশের দাবি, থানায় নিজের গেঞ্জি আর বেল্ট দিয়ে ঘরের সিলিং ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে রাব্বানী।

তাকে বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

রাব্বানীর বড় ভাই মইন উদ্দিন বলেন, 'গোলামী রাব্বানি বাড়িতেই থাকত। তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। টমটম (সিএনজিচালিত অটোরিকশা) চুরির কথা বলে শুধু জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য পুলিশ তার বাড়ি থেকে তাকে নিয়ে যায়। পুলিশ বলে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাকে ছেড়ে দেবে। দুপুর দুইটার দিকে ধরে নিয়ে যায়। সন্ধা ৭টায় যখন আমার মা জানতে চায় তখন পুলিশ জানায় তার বুকে ব্যথা এজন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর কিছু জানায়নি। আমাদের লাশ দেখানো হয়েছে রাত ২টার সময়।

মইন উদ্দিন আরও বলেন, টমটম (ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা) চুরির অভিযোগ পুরো ভুয়া কথা। আমি হবিগঞ্জে থাকি, বানিয়াচং আসছি তখন রাত সাড়ে ১০টা বাজে। আমাকে তারা লাশ দেখায় না। পুলিশ বলে ভেতরেই স্যান্ডো গেঞ্জি পরে ফাঁস লাগিয়ে মারা গেছে। কাস্টডিতে নেওয়ার আগেই তো মানিব্যাগ, বেল্ট, কাপড় পুলিশ সব সিজ করে রাখে। তাহলে কীভাবে ভেতরে ফাস লাগায়?

তিনি বলেন, তার ভাই চুরির সঙ্গে জড়িত না, এই অভিযোগ মিথ্যা। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না।

মইন উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ তাকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, তার ভাইয়ের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন জানান, দুটি চুরির তদন্তে নাম আসার পর মঙ্গলবার বিকেলে রব্বানীকে বড়বাজার এলাকা থেকে তুলে নিয়ে আসা হয়।

দেলোয়ার মইন বলেন, একজন ম্যাজিস্ট্রেট তার তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছেন এবং রাব্বানীর গায়ে নির্যাতনের কোনো চিহ্ন খুঁজে পাননি।

ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নাজমা আক্তারকে আঘাতের চিহ্ন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি ফোন কেটে দেন। পরে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড সদস্য লোকমান মিয়া রাব্বানীকে চুরির অভিযোগে চার থেকে পাঁচ বার মুচলেকা দিয়ে পুলিশ হেফাজত থেকে নিজের জিম্মায় ছাড়িয়ে এনেছিলেন বলে জানান।

তদন্ত কমিটি গঠন

এদিকে, বানিয়াচং থানা হাজতের ভেতর থেকে আসামির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার রাতে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) হাসিবুল ইসলামকে প্রধান রেখে এই কমিটি গঠন করা হয় বলে জানান হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার আক্তার হোসেন, বিপিএম-সেবা।

তিনি বলেন, তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের সাত দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোট দিতে বলা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Nahid warns against media intimidation, vows stern action

The government will take stern action against those trying to incite violence or exert undue pressure on the media or newspapers, said Information Adviser Nahid Islam today

2h ago