‘মানুষ পুড়িয়ে নির্বাচন বন্ধ করে ফায়দা লোটার চেষ্টা বাংলার মাটিতে চলবে না’

‘মানুষ পুড়িয়ে নির্বাচন বন্ধ করে ফায়দা লোটার চেষ্টা বাংলার মাটিতে চলবে না’
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষের কাছে যেতে হবে মানুষের কল্যাণের কথা বলে। মানুষের উন্নয়নের কথা বলে। মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারব সেই কথা বলে কিন্তু মানুষ পুড়িয়ে নির্বাচন বন্ধ করে ফায়দা লুটবে এটা বাংলার মাটিতে চলবে না।

বড়দিন উপলক্ষে আজ রোববার দুপুরে গণভবনে খ্রিষ্টান ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'বাংলাদেশ আসলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ এবং সেভাবেই আমরা দেশকে গড়ে তুলতে চাই। যদিও মাঝে অনেক বাধা এসেছি, বিপত্তি এসেছে কিন্তু যখন থেকে আওয়ামী লীগ সরকারে এসেছে তখন থেকে এই নীতি আমরা মেনে চলছি যে, স্বাধীনভাবে সব ধর্মের মানুষ নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে। সে জন্যই আমি বলেছি যে, ধর্ম যার যার উৎসব সকলের। সেই উৎসব আমরা আয়োজন করি।

'কারণ এ দেশে মুসলমান, হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ সকলে; যত ধর্মের মানুষ আছে সবাই যার যার ধর্মীয় উৎসব, তারা ধর্ম যেমন স্বাধীনভাবে পালন করতে পারেন, উৎসবটাও আমরা সকলে মিলেই কিন্তু আনন্দটা উপভোগ করি। এটা বোধ হয় বিশ্বের কাছে একটা বিরাট দৃষ্টি আমরা মনে করি। কাজেই এটা আমরা ধরে রাখতে চাই,' বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, 'জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ১৯৭২ সালের ১১ এপ্রিল গণপরিষদ অধিবেশনের এক ভাষণে বলেছিলেন, "রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য ধর্মকে বাংলার বুকে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না"। এই যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষের ক্ষতি করা, এটা কখনোই কাম্য না এবং সেটা আমরা চাই না।'

তিনি বলেন, 'কাজেই ধর্মীয় সংঘাত হোক সেটা আমরা চাই না। ধর্ম পালনে কেউ বাধা সৃষ্টি করুক, সেটাও চাই না।'

বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে নেওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, 'যদি এই কোভিড-১৯ অতিমারি আর ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ এগুলো না হতো তাহলে হয়তো আমরা আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারতাম। এখন আরেকটা দুর্ভাগ্য হলো, যিশুখ্রিষ্টের জন্মস্থান প্যালেস্টাইন, আজকে সেখানে রক্তক্ষয়ী আক্রমণ চলছে। হাসপাতালে আক্রমণ। ছোট ছোট শিশু-নারী, কেউ বাদ যাচ্ছে না। এটা আমাদের জন্য সত্যিই খুব দুঃখের বিষয়। আমি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যখন যেখানে সুযোগ পাচ্ছি, এই যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি। এই হত্যাকাণ্ড বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি।'

তিনি বলেন, 'আমাদের দুর্ভাগ্য, আমাদের দেশেও আমরা দেখি কিছু মানুষ; তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য অগ্নি সংযোগ করে মানুষকে হত্যা করে। রেল লাইনের ফিসপ্লেট খুলে দেয়, কেন? রেলের বগিগুলো পড়ে যাবে আর মানুষ নিহত হবে। এটা কোন ধরনের রাজনীতি আমি জানি না। আমার কাছে অবাক লাগে।

'জীবন্ত মানুষগুলোকে পুড়িয়ে মারা, বাসে আগুন, গাড়িতে আগুন, আগুন দিয়ে খেলা। এটা কেন? রাজনীতি হবে আদর্শ নিয়ে, নিজের যদি কর্মসূচি থাকে জনগণের কাছে যাবে। জনগণের কাছে বলবে। কয়েকদিন আগে ট্রেনে আগুন দিয়েছে। একটি মা তার সন্তানকে বুকে ধরে পুড়ে মারা গেছে। এই ধরনের করুণ দৃশ্য তো আমরা দেখতে চাই না। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য মানুষকে পুড়িয়ে মেরে, মানুষের ক্ষতি করে কী অর্জন করছে সেটাই আমার প্রশ্ন। এই ধরনের সংঘাত বন্ধ হোক, সেটাই আমরা চাই,' যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, 'মানুষের কাছে যেতে হবে মানুষের কল্যাণের কথা বলে। মানুষের উন্নয়নের কথা বলে। মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারব সেই কথা বলে কিন্তু মানুষ পুড়িয়ে নির্বাচন বন্ধ করে ফায়দা লুটবে এটা বাংলার মাটিতে চলবে না। আমি ধিক্কার জানাই তাদের, যারা এই ধরনের হুকুম দেয় এবং যারা এই ধরনের কাণ্ড ঘটায়।

'আরেকটা কথা আমি বলবো, এভাবে জীবন্ত মানুষ পোড়ানো, এটা তো মহাপাপ। এটা তো অন্যায়। এই অন্যায় কক্ষনো মেনে নেওয়া যায় না,' বলেন শেখ হাসিনা।

Comments

The Daily Star  | English
Rice_market

Development is not just about macroeconomic progress

Do macroeconomic concepts reflect the realities on the ground?

13h ago