আসন ভাগাভাগি: আ. লীগ দিতে চায় ২৬টি, আরও ৫টি বেশি চায় জাপা

আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা জাতীয় পার্টির জন্য এখনো ফলপ্রসূ হয়নি, কারণ জাপা প্রার্থীদের সহজ জয়লাভের জন্য ক্ষমতাসীন দল ২৬টির বেশি আসন থেকে তাদের প্রার্থী প্রত্যাহার করবে না।

ক্ষমতাসীন দল আরও প্রার্থী প্রত্যাহার না করলে আগামী ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে জাপার অংশগ্রহণ না করার সম্ভাবনা আছে বলে দলটির সূত্র জানিয়েছে।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান রুহুল আমিন হাওলাদার ও কাজী ফিরোজ রশীদ গত রাত দেড়টার দিকে গুলশানে সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদের বাসায় বৈঠকে বসেন।

জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাপা অন্তত ৩১টি আসনে সহজ জয় চায়।

২৬০টিরও বেশি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়া আওয়ামী লীগ নেতারা জাপার জন্য পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে, কারণ আওয়ামী লীগ যদি একটি আসনে তার প্রার্থী প্রত্যাহার করে নেয়, তবুও জাপার টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ব্যক্তিকে স্বতন্ত্র আওয়ামী লীগের নেতার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। আর আওয়ামী লীগ যে ২৬টি আসনে জাপাকে 'দিচ্ছে' সেখানেও এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

জাপা তার কাঙ্ক্ষিত সহজ জয় নিশ্চিত করতে পারে শুধুমাত্র যদি আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এবং আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ায় তাহলেই। কিন্তু আওয়ামী লীগ এখন পর্যন্ত স্বতন্ত্রদের বিষয়ে 'হস্তক্ষেপ' করার বিষয়ে কিছু বলেনি।

চলতি মাসে দুপক্ষের প্রতিনিধিদল চার বার বৈঠক করলেও ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি। গতকালের একাধিক বৈঠকও কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছে।

এমনকি ঢাকার ২০টি আসনের একটিও আওয়ামী লীগকে ছেড়ে দিতে রাজি করাতে পারেনি জাপা।

জি এম কাদের, তার স্ত্রী ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শরিফা কাদের, জাপা সংসদ সদস্য সালমা ইসলাম ও সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ঢাকা-১৭, ঢাকা-১৮, ঢাকা-১ ও ঢাকা-৪ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে আ‌ওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে।

গতকাল জাপা তাদের নেতাদের লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে সংসদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বিষয়টি নিশ্চিত করে চিঠি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।

সূত্র জানায়, কাদের বলেন, চিঠি বিতরণ করা উচিত নয় কারণ এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ ও জাপা এখনো একমত হয়নি।

গতকাল যোগাযোগ করা হলে দিনাজপুর-৪ আসনের জাপা মনোনীত প্রার্থী মোনাজাত চৌধুরী বলেন, '৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আমাদের দলের অবস্থান সম্পর্কে আমরা অন্ধকারে আছি। আমাদের অনেক প্রশ্ন রয়েছে। আমরা পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে পারছি না। শীর্ষ নেতারা নির্বাচন নিয়ে স্পষ্ট কোনো বার্তা দিচ্ছেন না।'

আজ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন হওয়ায় সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে জাপার।

তার মানে জাপার 'সংসদ আসন ভাগাভাগি' সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীদের আজই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে হবে।

এবার ২৮৭টি আসনে জাপা প্রার্থী এবং আওয়ামী লীগের ২৯৮টি আসনে প্রার্থী রয়েছে।

আসন ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনার শুরুতে জাপা ৭০টি আসন দাবি করেছিল। পরবর্তীতে আলোচনা যত বেড়েছে তত জাপা তাদের দাবি কমিয়েছে।

বর্তমান জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের চারটিসহ জাতীয় পার্টির ২৭টি আসন রয়েছে।

Comments