চাঁদপুর-৩

১৫ বছরে শূন্য থেকে কোটিপতি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি

দীপু মনি। ছবি: সংগৃহীত

চাঁদপুর-৩ (সদর ও হাইমচর) আসন থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে শুরু ২০১৮ পর্যন্ত পরপর তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে যাচ্ছেন।

পেশায় চিকিৎসক ও আইনজীবী হলেও এখন পুরোপুরি একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব দীপু মনি। তার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের রাঢ়ীরচর এলাকায়।

নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত ১৫ বছরে শূন্য থেকে কোটিপতি হয়েছেন দীপু মনি।

২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেন, তার অন্য কোনো আয় বা স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ নেই, শুধুমাত্র আইন পেশা থেকে বছরে মাত্র ৩ লাখ টাকা আয় করেন।

২০১৩ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হলফনামায় তিনি ঘোষণা দেন, মন্ত্রী হিসেবে পাওয়া ভাতাসহ বছরে তার আয় ১৭ লাখ ২০ হাজার টাকা। নিজ নামে নগদ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও স্বামীর নামে ৪ লাখ টাকা ছিল। এ ছাড়া, ব্যাংকে তার জমা ছিল ১৫ লাখ ৯৭ হাজার ২৮৮ টাকা এবং স্বামীর নামে ছিল ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা।

এর বাইরে সঞ্চয়পত্র রয়েছে ২২ লাখ ৫৪ হাজার ৮৬৩ টাকার, স্বর্ণ রয়েছে ৯ লাখ টাকার, নিজ নামে ৪০ লাখ ৫০ হাজার টাকার দুটি ফ্ল্যাট ও ৩৩ লাখ টাকার ১০ কাঠা জমি রয়েছে তার।

২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় তিনি পেশাগত আয় দেখান ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ ছাড়া, সংসদ সদস্য ভাতা করমুক্ত ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, করযুক্ত ১৬ লাখ ৩২ হাজার ৪০০ টাকা, বিদেশ ভ্রমণ থেকে আয় ৫ লাখ টাকা।

তার নিজের নামে নগদ ছিল ১২ লাখ টাকা এবং স্বামীর নামে ছিল ৩ লাখ টাকা। নিজের কাছে ডলার ছিল ৩ হাজার ৫০০ ও স্বামীর কাছে ছিল ৫ হাজার। এ ছাড়া, ব্যাংকে তার জমা ছিল ৮ লাখ ২ হাজার ৮৮৫ টাকা এবং যৌথ নামে ছিল ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

তার বেনাভোলেন্ট ফান্ড রয়েছে ৪০ লাখ টাকার। সঞ্চয়পত্র রয়েছে ৭০ লাখ টাকার। ৪৬ লাখ ৫৭ হাজার ৬২২ টাকার একটি পাজেরো জীপ গাড়িও দেখানো হয় ওই হলফনামায়।

২০১৮ সালের সেই হলফনামা অনুযায়ী, তার নামে স্বর্ণ ছিল ৯ লাখ মূল্যের। এ ছাড়া স্বামীর নামে ৫০ হাজার টাকা ও মেয়ের নামে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণ ছিল। তার আসবাবপত্র দেখানো হয় নিজ নামে ১ লাখ টাকার এবং স্বামীর নামে ১০ লাখ টাকার। ফ্ল্যাট দেখানো হয় নিজ নামে দুটি ৩৫ লাখ টাকা দামের এবং স্বামীর নামে দুটি ৪০ লাখ টাকা দামের।

তবে, ২০১৮ সালে হলফনামায় তিনি তার নামে থাকা সেই '৩৩ লাখ টাকা' দামের ১০ কাঠা জমি দাম দেখান ৩০ লাখ টাকা। এ ছাড়া, গাড়ি বাবদ বাবদ এক্সিম ব্যাংক থেকে ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৯০৫ টাকা ঋণ দেখানো হয়।

আসন্ন নির্বাচনের আগে সম্প্রতি জমা দেওয়া হলফনামায় দীপু মনি উল্লেখ করেছেন, তার নিজ ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকার তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এ ছাড়া, স্বামীর নামে রয়েছে ১৫ লাখ টাকার একটি ফ্ল্যাট।

এর সঙ্গে নিজ নামে ব্যাংক ঋণ রয়েছে ১ কোটি ১১ লাখ ৭৫ হাজার ৫৪৩ টাকা।

মন্ত্রী হিসেবে সম্মানি ভাতাসহ তার আয় দেখিয়েছেন ২১ লাখ ৩৯ হাজার ৩৯৬ টাকা। তিনি স্বামী ও ভাইয়ের কাছ থেকে পেয়েছেন ৯৮ লাখ ৬৯ হাজার ৬৭৪ টাকা। সঞ্চয়পত্র তার বিনিয়োগ রয়েছে ১ কোটি ৪৪ লাখ ২২ হাজার ৩৬৭ টাকা এবং স্বামীর রয়েছে ৬ লাখ ৯৩ হাজার ৭৭ টাকা।

দীপু মনির নামে শেয়ার রয়েছে ৩ লাখ ১ হাজার ২০০ টাকার। তার ব্যাংকে ও হাতে রয়েছে ৪ হাজার ৪০০ ডলার ও ২২৫ পাউন্ড। স্বামীর কাছেও আছে ৫ হাজার ডলার।

এবারের হলফনামায় নিজ নামে ৯ লাখ টাকা মূল্যের এবং স্বামীর নামে ৫০ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণ রয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন দীপু মনি। এ ছাড়া, সেই ১০ কাঠা জমির মূল্য দেখিয়েছেন ৩৪ লাখ ১ হাজার ৯৫৭ টাকা।

এর বাইরে নিজ নামে ১ লাখ টাকার এবং স্বামীর নামে ১০ লাখ ৫ হাজার টাকার আসবাবপত্র রয়েছে তার।

দীপু মনির নগদ অর্থ দেখানো হয়েছে ৬৬ লাখ ৮৯ হাজার ২৯৮ টাকা এবং স্বামীর নামে ১১ লাখ ২ হাজার টাকা। নিজ নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ৬ লাখ ৬০ হাজার ৭৮৬ টাকা।

এ ছাড়া, নিজ নামে ৬০ লাখ টাকা দামের একটি জীপ গাড়ি এবং স্বামীর নামে মাত্র ৫০ হাজার টাকা দামের একটি গাড়ি রয়েছে বলে দেখানো হয়েছে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda departs for London

The air ambulance ferrying the former prime minister departed from Hazrat Shahjalal International Airport at 11:47pm

6h ago