অযাচিত-অযৌক্তিক চাপের অভিযোগ তুলে জাতিসংঘকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর চিঠি

জাতিসংঘের মহাসচিব ও সহকারী মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে কয়েকজন বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেওয়ার আহ্বানও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন | স্টার ফাইল ছবি

আসন্ন নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশ বিভিন্ন মহল থেকে 'অযাচিত, অযৌক্তিক ও আরোপিত রাজনৈতিক চাপের' মুখোমুখি হচ্ছে উল্লেখ করে এই প্রেক্ষাপটে দেশের রাজনৈতিক উন্নয়নে গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে জাতিসংঘকে আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা।

গত মাসে জাতিসংঘের মহাসচিবের শেফ দ্য ক্যাবিনেট আর্ল কোর্টনে র‌্যাট্রের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এই আহ্বান জানান।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের পক্ষ থেকে এই চিঠিটি মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের নির্বাহী কার্যালয়ে পাঠানো হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন দ্য ডেইলি স্টারকে এই চিঠি পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের সময় র‍্যাট্রের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয় এবং বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়। এরপর তিনি এই চিঠি পাঠান।

এমন সময় এই চিঠির বিষয়টি সামনে এলো, যখন পশ্চিমের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে বারবার সুষ্ঠু, অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানানো হচ্ছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের দুই বিতর্কিত নির্বাচনের পর পরবর্তী নির্বাচন আগামী বছরের ৭ জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা 'গণতন্ত্রের একজন ক্রুসেডার এবং তিনি দেশের মানুষের ভোট, খাদ্য ও সুন্দর জীবনযাপনের অধিকার নিশ্চিত করতে অনেক কষ্ট করেছেন।'

চিঠি একটি কপি হাতে পেয়েছে দ্য ডেইলি স্টার।

'তিনি (শেখ হাসিনা) একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন আয়োজন করতে সংকল্পবদ্ধ। কিন্তু একইসঙ্গে বিক্ষোভের নামে সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি পোড়ানো ও মানুষকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার ঘটনাগুলো তিনি সহ্য করবেন না, যা বিরোধী দল নিয়মিত করে আসছে', যোগ করেন মোমেন।

মোমেন আরও জানান, শেখ হাসিনা তার ১৫ বছরের মেয়াদে হাজারো নির্বাচন, উপ-নির্বাচন, জাতীয় নির্বাচন, আঞ্চলিক নির্বাচন ও মেয়র নির্বাচনের আয়োজন করেছেন।

'খুবই ছোটখাটো কিছু ঘটনা ছাড়া সবগুলো নির্বাচনই ছিল সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ', যোগ করেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, বাংলাদেশ গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ন্যায়বিচার ও মানুষের সম্মান রক্ষায় নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করছে।

'বাংলাদেশ হচ্ছে বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেখানে এসব মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করতে ৩০ লাখ মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে', যোগ করেন মোমেন।

তা স্বত্বেও আসন্ন নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশ বিভিন্ন মহলের কাছ থেকে 'অযাচিত, অযৌক্তিক ও আরোপিত রাজনৈতিক চাপের' মুখোমুখি হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

'আমরা আশা করব জাতিসংঘ ও তার সেক্রেটারিয়েট, সংস্থা ও স্থানীয় কার্যালয়গুলো বাংলাদেশকে উন্নয়নের পথে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে যেতে গঠনমূলক ও সহযোগিতামূলক ভূমিকা পালন করবে। বাংলাদেশ জাতিসংঘের একটি

উদ্যমী ও সহযোগিতামূলক মনোভাবসম্পন্ন সদস্য রাষ্ট্র। আমরা প্রবলভাবে আশাবাদী যে, জাতিসংঘ বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রগতি ও জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়নে সহযোগিতা ও সহায়তা অব্যাহত রাখবে', যোগ করেন মোমেন।

এ ছাড়াও, বাংলাদেশ আশাবাদী যে, জাতিসংঘ ও তার সব অঙ্গসংগঠন ও সংস্থা জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সবার জন্য একটি শান্তিপূর্ণ, ন্যায্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও প্রগতিশীল ভবিষ্যৎ গড়ার ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য অংশীদারের ভূমিকা অব্যাহত রাখবে।

'আমরা আরও প্রত্যাশা করব যে, জাতিসংঘের কর্মকর্তারা পক্ষপাতহীনতা, সততা ও বস্তুনিষ্ঠতার সর্বোচ্চ মানদণ্ড মেনে চলে সংস্থাটির গ্রহণযোগ্যতা ও সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখবে। যদি তাদের প্রতিবেদনগুলোতে ভুল তথ্য ও বস্তুনিষ্ঠতার অভাব থাকে এবং এগুলো যদি উপাত্ত-নির্ভর না হয়, তাহলে তারা তাদের গ্রহণযোগ্যতা হারাতে পারে, যা সংস্থাটির সামগ্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি এক অশনিসংকেত হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।'

এ ছাড়া, জাতিসংঘের মহাসচিব ও সহকারী মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে কয়েকজন বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞ ও পেশাদারকে নিয়োগ দেওয়ার আহ্বানও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।

Comments

The Daily Star  | English

Six state banks asked to cancel contractual appointments of MDs

The Financial Institutions Division (FID) of the finance ministry has recommended that the boards of directors of six state-run banks cancel the contractual appointment of their managing directors and CEOs..The six state-run banks are Sonali Bank, Janata Bank, Agrani Bank, Rupali Bank, BAS

45m ago