‘কখনোই তার মতো ভালো হতে পারব না’, শচীনকে স্পর্শ করে কোহলি
বিরাট কোহলির ৩৫তম জন্মদিনের উপলক্ষটা আরও বিশেষ কিছুতেই পরিণত হয়ে গেল কলকাতায়। শচীন টেন্ডুলকারের ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির রেকর্ড স্পর্শ করলেন বলেই। কোহলির জন্মদিনে দক্ষিণ আফ্রিকাকে তাদের ওয়ানডে ইতিহাসেরই সবচেয়ে বড় হারের তেতো স্বাদ দিল ভারত। ২৪৩ রানের জয়ে কোহলির জন্মদিনের কোনো অনুপ্রেরণা কি ভারত দলে কাজ করেছিল?
রোববারের ম্যাচের পর কোহলির সতীর্থ রবীন্দ্র জাদেজা সংবাদ সম্মেলনে এসে দেন মজার উত্তর, 'জন্মদিন… ভারতের হয়ে খেলার সঙ্গে কোনো কিছুর সম্পর্ক নেই। যে সময়ই আমরা ভারতের জার্সি পরে খেলতে নামি, প্রত্যেক দিনই জন্মদিন হয়। কারণ অনেক কম মানুষের সে সুযোগ হয়। অনেক বড় ব্যাপার তাই। তবে জন্মদিনে পারফরম্যান্স করলে ও দল জিতলে, সেটা দ্বিগুণ স্পেশাল হয়ে যায়।'
বিরাট কোহলি ১১৯ বলে ৪৯তম সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে যে শচীন টেন্ডুলকারও কীর্তিতে ভাগ বসান, সেই লিটল মাস্টারও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) জানান অভিনন্দন, 'ভালো খেলেছ বিরাট। আমার ৩৬৫ দিন লেগেছে ৪৯ থেকে ৫০-এ যেতে। আশা করি, তুমি ৪৯ থেকে ৫০-এ চলে গিয়ে আমার রেকর্ড ভেঙে দেবে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই। অভিনন্দন!'
ম্যাচসেরার পুরস্কার নিতে এসে শচীনকে নিয়ে কোহলি বলেন দারুণ সব কথা, 'তার টুইট খুবই স্পেশাল। আমার নায়কের রেকর্ড স্পর্শ করা আমার জন্যে অনেক বড় গর্বের বিষয়। আমি জানি, মানুষজন তুলনা করতে পছন্দ করে। কিন্তু তার দিকে আমরা সকলে তাকিয়ে থাকার কারণ তো ছিল অবশ্যই, আমি কখনোই তার মতো ভালো হতে পারব না। ব্যাটিয়ের বেলায় সে নিখুঁত। আমি আমার সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করছি। যাই হয় না কেন, তিনি সবসময়ই আমার নায়ক হয়ে থাকবেন। এটা আবেগের মুহূর্ত। আমি জানি, আমি কোথা থেকে এসেছি। ওই দিনগুলো আমার মনে আছে, যখন তাকে টিভিতে দেখতাম। তার কাছ থেকে এমন প্রশংসা পাওয়া আমার কাছে তাই অনেক বড় কিছু।'
কোহলির এই সেঞ্চুরি ক্রিকেট বিশ্বেই ছড়িয়ে থাকা তার ভক্তকূল উদযাপন করছে। ভারত দল থেকে কোনো উদযাপন হবে? সে প্রশ্নে জাদেজা বলেন, 'এখনও কোনো উদযাপনের পরিকল্পনা নেই। যেটাই হোক, ৪৯তম বা ৫০তম, সেটা ঝুলিতেই ঢুকছে। এটা ভালো, কোথাও বের হচ্ছে না। চলতে দিন। যত রেকর্ড ভাঙবে, রান হবে, আমাদের জন্যই ভালো। তো চলতে থাকুক, নজর লাগতে দেবেন না।'
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেঞ্চুরি পেতে সময় লাগান কোহলি, ১১৯ বল নেন। তবে তার সেঞ্চুরিটাকে বাড়তি গুরুত্বের চোখে দেখেন জাদেজা, 'আমি বলব, এটা ওর জন্যও স্পেশাল ও কঠিন ছিল। দিনের বেলা উইকেট যেমন ছিল, মনে হচ্ছিল, ২৬০-২৭০ রানই ঠিক হবে। ওই সময়ে স্ট্রাইক বদলানো ও বাউন্ডারি বের করা চ্যালেঞ্জিং ছিল। আর ওদের স্পিনাররাও ভালো বোলিং করছিল। সেখান থেকে কঠিন পিচে শতক করা ও দলকে তিনশর বেশি স্কোরে নিয়ে যাওয়াকে অর্জনই বলতে হয়।'
১২১ বলের ছক্কাবিহীন ইনিংসে কোহলি চার মারতে পারেননি ১০টির বেশি। স্পিনারদের বিপক্ষে প্রথম চার মারতে তার লেগে যায় ৫০ বল।
দিনের বেলায় ব্যাটিংয়ের জন্য কন্ডিশন কঠিন থাকলেও কেন ভারত টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়, সে প্রশ্নে বাঁহাতি অলরাউন্ডার জাদেজা বলেন, 'টস জিতে আমরা আমাদের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে চেয়েছিলাম। দিনের বেলায় স্লো ছিল পিচ, অনেক টার্নও মিলছিল। তো প্রথমে ব্যাটিং করে দ্বিতীয় ইনিংসে শিশির আসলে কীভাবে বোলিং করতে হবে, সেই চ্যালেঞ্জে পড়তে চেয়েছিলাম আমরা। নকআউটে যদি এই পরিস্থিতিতে পড়ি, তাহলে সেটা সামলাতে প্রস্তুত থাকাটাই টসের সিদ্ধান্তের কারণ ছিল। '
নিজেদের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েও দ্বিতীয় ইনিংসে আসলে চ্যালেঞ্জে পড়তেই হয়নি ভারতকে। দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২৭.১ ওভারে ৮৩ রানে অলআউট করে দেন ভারতের বোলাররা। সেরা বোলিংটা আসে জাদেজার কাছ থেকেই। বাঁহাতি স্পিনে ৯ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন তিনি।
Comments