আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩

লখনউয়ে দুই মেরুর লড়াইয়ে ভারত আটকে গেল ২২৯ রানে

দুই মেরুর দুই দলের এই লড়াইয়ের প্রথম অংশ শেষে দুর্দশাগ্রস্ত ইংল্যান্ডের ড্রেসিংরুমে একটু হলেও স্বস্তির বাতাস বইবে।

লখনউয়ে দুই মেরুর লড়াইয়ে ভারত আটকে গেল ২২৯ রানে

ছবি: রয়টার্স

দুই বনাম দশ। এক দল সেমিফাইনালে যাওয়ার পথে অগ্রসর অনেকটুকুই, আরেক দল নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতেই মরিয়া। দুই মেরুর দুই দলের এই লড়াইয়ের প্রথম অংশ শেষে দুর্দশাগ্রস্ত ইংল্যান্ডের ড্রেসিংরুমে একটু হলেও স্বস্তির বাতাস বইবে। পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা দলটি যে এখনও বিশ্বকাপে অপরাজেয় ভারতকে আটকে দিল ২২৯ রানেই।

রবিবার লখনউয়ের বোলিং-সহায়ক পিচে ইংল্যান্ডের দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা ৮৭ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেন। কিন্তু আর কোনো ব্যাটারের থেকেই পঞ্চাশোর্ধ রানের ইনিংস পায়নি ভারত। ইংলিশদের পক্ষে পেসার ডেভিড উইলি তিনটি এবং লেগ স্পিনার আদিল রশিদ ও পেসার ক্রিস ওকস দুটি করে উইকেট শিকার করেন। বল হাতে শিরোপাধারীদের দারুণ পারফরম্যান্সে শেষমেশ ভারত তাই লড়াকু স্কোরের বেশি করতে পারেনি।

টসে জিতে বোলিং নিয়ে দুর্দান্ত শুরু করেন ইংলিশ বোলাররা। আঁটসাঁট লেংথে বাউন্ডারির সুযোগই দেননি তারা। প্রথম দুই ওভারে আসে এক চার। সুযোগের অপেক্ষায় না থেকে ঝুঁকি নেওয়ার পথ বেছে নেন রোহিত। উইলিকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে চারের পর মারেন ছয়। তৃতীয় ওভারে দুই ছক্কা ও এক চারে ভারত আনে ১৮ রান। কিন্তু রোহিতকে সতর্কসীমায় ঢুকে যেতে হয় এরপরই দ্রুত উইকেট হারিয়ে ফেললে। টু-পেসড উইকেটে যথেষ্ট সিম মুভমেন্ট পেয়ে দারুণ নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে আতঙ্কে পরিণত হন উইলি ও ওকস। শুবমান গিলকে ৯ রানেই ওকস ফিরিয়ে দেন ভেতরে ঢোকা বলে বোল্ড করে।

বিরাট কোহলি রানের খাতা খুলতেই পারছিলেন না। নবম বলে আগবাড়িয়ে খেলতে গিয়ে ধরা পড়ে যান মিডঅফে। ওকস-উইলি জুটি নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে চেপে ধরে ভারতকে। পাওয়ারপ্লের শেষ সাত ওভারে মাত্র ১৩ রান এলে তারা পাওয়ারপ্লে শেষ করে ৩৫ রানে। ছন্দ খুঁজে পাওয়া ওকসকে টানা বোলিং করাতে থাকেন ইংল্যান্ডের দলনেতা জস বাটলার। পাওয়ারপ্লের পরে এসে শ্রেয়াস আইয়ারকে ফিরিয়ে দেন ওকস। শর্ট বলে পুল খেলতে গিয়ে ৪ রানেই মরণ ঘটে শ্রেয়াসের। ২৩ রানে ২ উইকেট নিয়ে সাত ওভারের দুর্দান্ত এক স্পেল শেষ করেন ওকস।

৪০ রানে ৩ উইকেট হারানো ভারতের বিপদ সামলান রোহিতের সঙ্গে লোকেশ রাহুল মিলে দেখেশুনে খেলে। ওভারপ্রতি চারের মতো করে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তারা। ৬৬ বলে ফিফটি পূর্ণ করার পর রোহিত কয়েকটি বাউন্ডারি বের করলেই রান রেট বেড়ে যায়। টার্নিং পিচে রশিদের ওভার দেখেশুনে কাটিয়ে দেয় ভারত। এরপর আরেক স্পিনার লিয়াম লিভিংস্টোনের বোলিংয়ে কয়েকটি চার বের করেন রোহিত-রাহুল। ২৫তম ওভারে গিয়ে শতরানের দেখা পায় ভারত। ভালো স্কোরের পথে এগিয়ে যাওয়ার সুবাস যখন ছড়াচ্ছিল, আচমকা উইলিকে মারতে গিয়ে আউট হয়ে বসেন রাহুল। ৫৮ বলে ৩৯ রানে রাহুল ফিরে গেলে ১৩১ রানে ভারত হারায় চতুর্থ উইকেট। 

আরেকটি সেঞ্চুরির গন্ধ পাওয়া রোহিতও বড় শট খেলতে গিয়ে একই গন্তব্য অর্থাৎ ড্রেসিংরুমে পৌঁছান। ব্যাটারদের জন্য কঠিন পিচে বেশি সুযোগ পাননি, দুর্দান্ত সব শটে তবুও বাউন্ডারি বের করেন রোহিত। ১০ চার ও ৩ ছক্কায় তাই গড়তে পারেন ১০৩ বলে ৮৭ রানের ইনিংস। সূর্যকুমার যাদব এসে ততক্ষণে বলপ্রতি রান পেয়ে ভালো শুরু করেন। তার ট্রেডমার্ক সুইপ শটে চার বের করেন কয়েকটি। কিন্তু রবীন্দ্র জাদেজা এসে রশিদের বলে এলবিডাব্লিউ হয়ে যান। 

এক অঙ্কে জাদেজা ফিরে গেলে টেলএন্ডারদের সঙ্গে স্ট্রাইক পাওয়ার চিন্তায় পড়ে যেতে হয় সূর্যকুমারকে। কয়েকটি চার-ছক্কা মেরে শেষমেশ ৪৭ বলে ৪৯ রানে আউট হয়ে ফিরে যান যখন, ভারত ২০৮ রানে হারিয়ে ফেলে অষ্টম উইকেট। ৪৭তম ওভারে সূর্যকুমার আউট হয়ে যাওয়ার পর জাসপ্রিত বুমরাহ ও কুলদীপ যাদব মিলে পুরো ওভার কাটিয়ে দিতে সক্ষম হন। শেষ বলে রানআউট হওয়া বুমরাহ ১৬ ও কুলদীপ অপরাজিত ৯ রান করে দলের লড়ার পুঁজিটা বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করেন।

Comments

The Daily Star  | English