স্যাংশন খেয়ে আ. লীগের নেতারা এখন দরজা বন্ধ করে কাঁদে: আমীর খসরু

ফরিদপুরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে বিএনপির রোডমার্চের পথসভায় বক্তব্য দেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: স্টার

আমেরিকার ভিসা নিষেধাজ্ঞায় পড়ে আওয়ামী লীগের নেতারা ঘরের দরজা বন্ধ করে কাঁদে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে ফরিদপুর শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে ফরিদপুর বিভাগীয় রোডমার্চের পথসভায় এই কথা বলেন তিনি।

বর্তমান সরকারের পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর এক দফা দাবিতে আজ দুপুরে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ মোড় থেকে রোডমার্চ ফরিদপুরের উদ্দেশে রওনা হয়। ফরিদপুর-ভাঙ্গা-গোপালগঞ্জ-মাদারীপুর হয়ে শরীয়তপুরে জনসভার মাধ্যমে রোডমার্চ শেষ হবে।

ফরিদপুরের পথসভায় আমীর খসরু বলেন, 'বিশ্বে যত দেশ আছে, যত গণতান্ত্রিক সংগঠন আছে, যত অধিকার সংগঠন আছে তারাও সিদ্ধান্ত দিয়ে দিয়েছে। এই অবৈধ সরকারের সঙ্গে দেশে-বিদেশে কেউ নেই। রাস্তাঘাটে যেখানেই যাই সবাই জানতে চায় এই সরকার আর কতদিন আছে? সবার প্রশ্ন এই সরকার কবে যাবে?'

তিনি বলেন, 'বিদেশিরা যেটা বলেছে তার সঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি পুরোপুরি মিলে গেছে। ভিসা নীতিতে আওয়ামী লীগের কম্পন শুরু হয়ে গেছে। উপর দিয়ে তারা গলাবাজি করছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যারা ভোট চুরির সঙ্গে থাকবে কেউ ভিসা নীতি থেকে বাদ যাবে না। বিচারপতি এমনকি গণমাধ্যমও ভোট চুরির সঙ্গে থাকলে ভিসা নীতির আওতায় পড়বে।'

'আওয়ামী লীগ ২০১৪ ও ২০১৮ সালে নির্বাচনের নামে যা দেখিয়েছে আমি এর নাম দিয়েছি ভোট চুরির প্রকল্প। নির্বাচনে জিততে এই ভোট চুরির প্রকল্পই তাদের একমাত্র ভরসা। শেখ হাসিনার ভোট চুরির প্রকল্পে কিছু দুর্নীতিবাজ দলীয় কর্মকর্তা আছে, আছে কিছু দলীয় পুলিশ, লুটেরা ব্যবসায়ী ও কতগুলো রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত।'

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'আপনারা সবার নাম তালিকাভুক্ত করবেন। আমরা এই ভোট চোরদের তালিকা প্রকাশ করে দেব। তারা সবাই বাংলাদেশের শক্র। দুনিয়াতে কোনো ফ্যাসিস্ট সরকার শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি। তাদের রাস্তায় নেমে হটাতে হবে।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা এখনো শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করছি। কোনো অপশক্তি নামিয়ে আমাদের সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হলে প্রতিরোধ করব। প্রতিরোধ করা ছাড়া আমরা আমাদের অধিকার ফিরে পাব না।'

তিনি বিএনপিকে 'ভদ্রলোকের দল' উল্লেখ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন তার উত্তর দেব না। এর উত্তর বাংলাদেশের জনগণ দেবে।'

ফরিদপুরবাসীর উদ্দেশে আমীর খসরু বলেন, 'সুষ্ঠু ভোট হলে ফরিদপুরেও তারা আসন পাবে না। এই অঞ্চলে জীবনের বিনিময়ে হলেও ভোট চুরি প্রতিরোধ করতে হবে। জীবন দিয়ে আমাদের জয়লাভ করতে হবে।'

পথসভার প্রধান বক্তা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে চিকিৎসা নিতে বিদেশে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। তিনি যদি এভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যান তাহলে দায় সরকারকে বহন করতে হবে।'

পথসভায় প্রায় দেড়শ পিক-আপ ভ্যান, শতাধিক মাইক্রোবাস ও দুই শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে বিএনপির কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। পথসভায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

বিএনপির নেতারা জানান, ফরিদপুরের রাজবাড়ীর রাস্তার মোড়ে পথসভা শেষে রোডমার্চ নগরকান্দার তালমার মোড়, গোলাপগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বরইতলা বাসস্ট্যান্ড, মাদারীপুরের মুস্তফাপুর বাসস্ট্যান্ডে পথসভা করবে। শরীয়তপুরে বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক মুন্সি আব্দুর রউফ স্টেডিয়ামে সমাবেশের মাধ্যমে রোডমার্চ শেষ হবে।

রোডমার্চে উপস্থিত আছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, জহুরল হক শাহজাদা মিয়া, বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাশুকুর রহমান, সেলিমুজ্জামান সেলিম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক লিয়াকত আলী বাবু, সদস্য সচিব কামরুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহ-সভাপতি আসলাম মিয়াসহ ফরিদপুর সাংগঠনিক বিভাগের পাঁচ জেলার নেতাকর্মীরা।

Comments

The Daily Star  | English

Ending impunity for crimes against journalists

Though the signals are mixed we still hope that the media in Bangladesh will see a new dawn.

10h ago