এশিয়া কাপ ২০২৩

ওয়েলালাগে-আসালাঙ্কার ঘূর্ণি জাদুতে ২১৩ রানেই শেষ ভারত

ছবি: এএফপি

পিচে মিলল টার্ন ও বাউন্স। কিছু বল আবার নিচুও হলো। এমন চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে ভেঙে পড়ল ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ। শ্রীলঙ্কার পেসাররা শুরুতে মার খেলেও বাঁহাতি স্পিনার দুনিথ ওয়েলালাগে আক্রমণে আসতেই পাল্টে গেল পরিস্থিতি। এই বাঁহাতি স্পিনারের পর উইকেট শিকারের উৎসবে যোগ দিলেন অনিয়মিত অফ স্পিনার চারিথ আসালাঙ্কা। দুজনেরই ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে কোনোক্রমে দুইশ পেরিয়ে গুটিয়ে গেল রোহিত শর্মার দল।

মঙ্গলবার কলম্বোতে এশিয়া কাপের সুপার ফোরের বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করেছে ভারত। আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ৪৯.১ ওভারে ২১৩ রানে অলআউট হয়েছে তারা। অথচ দলটির উদ্বোধনী জুটিতে ৬৭ বলে এসেছিল ৮০ রান। তাদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৩ রান করেন অধিনায়ক রোহিত। ৪৮ বল মোকাবিলায় তিনি মারেন ৭টি চার ও ২টি ছক্কা।

শ্রীলঙ্কার হয়ে ১০ ওভারে একটি মেডেনসহ ৪০ রানে ৫ উইকেট নেন ২০ বছর বয়সী ওয়েলালাগে। আগের ১২ ওয়ানডেতে তার সেরা বোলিং ফিগার ছিল ৪২ রানে ৩ উইকেট। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের জন্য পরিচিত আসালাঙ্কা বোলিংবান্ধব উইকেটে চমক জাগিয়ে নেন ৪ উইকেট। ৯ ওভারে একটি মেডেনসহ তিনি খরচ করেন মাত্র ১৮ রান। এই সংস্করণে আগে খেলা ৩৮ ম্যাচের কেবল ছয়টিতে বল করেছিলেন তিনি। উইকেট পেয়েছিলেন স্রেফ একটি।

ভারতের ১০ উইকেটের সবকটিই নেন লঙ্কান স্পিনাররা। বাকিটি যায় রহস্য স্পিনার মাহিশ থিকশানার ঝুলিতে। উইকেট না পেলেও বল হাতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেন অলরাউন্ডার ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। আঁটসাঁট থেকে অফ স্পিনে ১০ ওভারে তিনি দেন কেবল ২৮ রান।

ওয়ানডে ইতিহাসে এবারই প্রথম কোনো ম্যাচে স্পিনারদের কাছে ১০ উইকেট হারাল ভারত। এর আগে এই ভেন্যুতেই ১৯৯৭ সালে ঘূর্ণি বোলারদের বিপরীতে ৯ উইকেট খুইয়েছিল তারা। সেদিনও প্রতিপক্ষ ছিল শ্রীলঙ্কা। ওয়ানডে ক্রিকেটে স্পিনারদের ১০ উইকেট নেওয়া ঘটনা সব মিলিয়ে ঘটল ১০ বার।

ওয়েলালাগের স্পিন ভেলকির শুরুটা হয় দ্বাদশ ওভারে। ম্যাচে নিজের প্রথম বলেই শুবমান গিলকে অসাধারণ একটি ডেলিভারিতে বোল্ড করেন। টার্নে পরাস্ত হন তিনি। ভারতের স্কোরবোর্ডে আর ১১ রান যোগ হতে ওয়েলালাগে সাজঘরে পাঠান বিরাট কোহলি আর রোহিতকেও।

আগের দিন পাকিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা কোহলি ১২ বলে ৩ করেন। পিচে পড়ে কিছুটা থেমে আসা বলে দেন ক্যাচ। নিচু হওয়া ডেলিভারিতে স্টাম্প হারানোর আগে রোহিত ওয়ানডেতে ১০ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। ভারতের ষষ্ঠ ও সব মিলিয়ে ১৫তম ব্যাটার হিসেবে এই কীর্তি গড়েন তিনি।

৯১ রানে ৩ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর প্রতিরোধ গড়েন ইশান কিশান ও কেএল রাহুল। ৮৯ বলে ৬৩ রানের জুটি গড়েন দুজনে। এই জুটিও ভেঙে শ্রীলঙ্কাকে গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক-থ্রু দেন ওয়েলালাগে। এরপর হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে ভারত।

কোহলিকে কুপোকাত করার মতো প্রায় একই বলে রাহুলকে ফিরতি ক্যাচ বানান ওয়েলালাগে। আরেক থিতু ব্যাটার ইশানের আউটেও ভূমিকা রাখেন তিনি। আসালাঙ্কার বলে শর্ট মিডউইকেটে নেন দুর্দান্ত ক্যাচ। এরপর বিপজ্জনক হার্দিক পান্ডিয়াকে রিভিউ নিয়ে দ্রুত ফেরায় লঙ্কানরা। এই উইকেটের মাধ্যমে ওয়ানডেতে প্রথমবারের মতো ফাইফারের স্বাদ নেন ওয়েলালাগে।

পরের গল্পটা আসালাঙ্কার। রবীন্দ্র জাদেজার পর টানা দুই বলে তিনি শিকার করেন জাসপ্রিত বুমরাহ ও কুলদীপ যাদবের উইকেট। আর আক্সার প্যাটেলকে ঝুলিতে ঢুকিয়ে ভারতকে গুটিয়ে দেন থিকশানা।

ইশান ৬১ বলে ৩৩ রান করেন একটি করে চার ও ছক্কায়। রাহুলের ব্যাট থেকে ২ চারের সাহায্যে আসে ৪৪ বলে ৩৯ রান। শেষদিকে আক্সার ৩৬ বলে একটি ছক্কায় করেন ২৬ রান। তার কারণে ভারতের সংগ্রহ ছাড়িয়ে যায় দুইশ।

ভারতের ইনিংসের ৪৭ ওভারের পর বৃষ্টির হানায় খেলা বন্ধ হয়ে যায়। এবারের এশিয়া কাপে এমন দৃশ্য অবশ্য নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। প্রায় এক ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর খেলা আবার চালু হয়। তবে ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমেনি।

Comments

The Daily Star  | English

Enforced disappearances: Eight secret detention centres discovered

The commission raised concerns about "attempts to destroy evidence" linked to these secret cells

3h ago