এশিয়া কাপ ২০২৩

শেষ পর্যন্ত লড়াইও করতে পারল না বাংলাদেশ

Shakib Al Hasan

চ্যালেঞ্জিং উইকেটে রান তাড়ার ঝুঁকি নিয়ে হতাশায় পুড়ল বাংলাদেশ।  আগে ব্যাট করে সাদেরা সামাবিক্রমার 'বিক্রমে' শ্রীলঙ্কা পেয়েছিল আড়াইশ ছাড়ানো পুঁজি। রান তাড়ায় তা টপকাতে গিয়ে প্রথম ২০ ওভারের ভেতরেই দাসুন শানাকার তোপে ম্যাচ অনেকটা হাতছাড়া করে ফেলে সাকিব আল হাসানের দল। তাওহিদ হৃদয় একা চেষ্টা চালালেও সেটা যথেষ্ট ছিল না।

শনিবার কলম্বোতে এশিয়া কাপের সুপার ফোরের ম্যাচ স্বাগতিকরা জিতেছে ২১ রানে। আগে ব্যাট করে লঙ্কানদের ২৫৭ রানে নিয়ে যান সাদেরা। ৭২ বলে খেলেন ৯৩ রানের ইনিংস। 

রান তাড়ায় হৃদয় (৯৭ বলে ৮২) ছাড়া বাংলাদেশের আর কেউই মেটাতে পারেননি দলের চাহিদা। ২৩৬ পর্যন্ত যেতে পারলেও মূলত ৬ ওভার আগেই ম্যাচের উত্তেজনা উবে যায়।  ২৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে লঙ্কানদের সেরা বোলার শানাকা। তিন উইকেট করে পেয়েছেন মাহেশ থিকসেনা আর মাথিশা পাথিরানাও।

এই হারের পর এশিয়া কাপের ফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন কার্যত শেষ হয়ে গেল লাল সবুজের প্রতিনিধিদের। অন্য দিকে টানা ১৩ ওয়ানডে জিতে উড়তে থাকা লঙ্কানদের ফাইনালের সম্ভাবনা বেশ উজ্জ্বল। 

২৫৮ রান তাড়ায় নেমে শুরুটা মন্দ ছিল না। এদিনও নাঈম শেখের সঙ্গী হয়ে মেহেদী হাসান মিরাজ পরিস্থিতির দাবি অনুযায়ী খেলছিলেন। লঙ্কান বোলারদের আলগা বোলিংও সাহায্য করছিল বাংলাদেশ ওপেনারদের।

তবে মিরাজ যতটা সাবলীল ছিলেন, নাঈম ছিলেন একদম বিপরীত। অনেকগুলো বাজে বলও হাতছাড়া করে নিজেকে গুটিয়ে রাখেন তিনি, তাতে নিজের উপরই চাপ বেড়ে যায়।

প্রথমে আউট হন অবশ্য মিরাজ। দাসুন শানাকার স্লো মিডিয়াম পেসে পুল করতে গিয়ে সহজ ক্যাচ দেন মিড অনে (২৯ বলে ২৮)। দ্বাদশ ওভারে ৫৫ রানে উইকেট পড়লেও তখনো বাংলাদেশের অবস্থাই ভালো।

পরের কিছু সময় চাপ বাড়াতে থাকা নাঈম করতে থাকেন অতি মন্থর ব্যাটিং। রান বের করতে  না পেরে যেভাবে উইকেট দিয়েছেন তা খুবই দৃষ্টিকটু। শানার স্লো মিডিয়াম বাউন্সারে টেল এন্ডারদের মতো ব্যাট পেতে দিয়ে কিপারের গ্লাভসে জমা পরেন ৪৬ বলে ২১ করা বাঁহাতি ওপেনার।

অধিনায়ক সাকিব এসে থিতু হতে পারেননি। প্রথম ম্যাচে যেভাবে মাথিশা পাথিরানার শিকার হয়েছিলেন, সেভাবেই কাটা পড়েন তিনি। অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল কাট করতে গিয়ে কট বিহাইন্ড হয়েছেন। মাঠের আম্পায়ার আউট না দিলে তাকে রিভিউ নিয়ে ফেরায় বাংলাদেশ।

তিনে নেমে আবার ব্যর্থ লিটন দাস। এবার দলের চাপ ছিল প্রবল। তার ব্যাটের দিকে তাকিয়ে ছিল গোটা দল। লিটন থিতু হতে হতে বাঁহাতি স্পিনেই কাবু। দুনিয়া ওয়েলেগেলের বলে ব্যাটের নিচের কানায় লাগিয়ে ফিরে যান (২৪ বলে ১৫)।

এরপরই প্রতিরোধের গল্প লেখেন মুশফি-হৃদয়।  কঠিন চাপ সামলাতে দুজনেই কিছুটা সময় নেন। জুটি পঞ্চাশ ছাড়িয়ে যাওয়ার পর মারার প্রয়োজন দেখা দেয়। হৃদয় হাত খুলেন। তবে মুশফিক তাল মেলাতে পারেননি, রানের চাপ মেটাতে গিয়ে তিনি গিয়ে কাটা পড়েন অসময়ে। শানাকাকে উড়াতে লং অফে ধরা পড়ে থামে তার ৪৮ বলে ২৯ রানের ইনিংস। ১১২ বলে ৭২ রানের জুটি ভাঙার পর ফের শামীমও টিকতে পারেননি। থিকসেনার বল বুঝতেই পারেননি।

তবে হৃদয় চেষ্টা চলিয়ে যাচ্ছিলেন। বাংলাদেশের সম্ভাবনাও বেঁচে ছিল তার ব্যাটে। থিকসেনা তাকেও এলবিডব্লিউ করলে একদম শ্রীলঙ্কার মুঠোয় চলে যায় ম্যাচ। ওই ওভারে পরে তাসকিন আহমেদকেও ফেরান অফ স্পিনার।  ম্যাচের বাকি অংশে ছিল না খুব একটা উত্তেজনা। নাসুম আহমেদ, হাসান মাহমুদরা কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছেন।

টস জিতে অবাক করা সিদ্ধান্ত নেন সাকিব। কলম্বোর মাঠে রান তাড়া কঠিন হলেও তিনি বেছে নেন সেই পথ। টস হেরেও তাই খুশি ছিলেন শানাকা।

বাংলাদেশের পেসাররা এদিনও ছিলেন ধারালো, স্পিনাররা উইকেট না পেলেও রান আটকে রেখেছেন। তবে সেটাই হয়ত যথেষ্ট ছিল না। উইকেটের পরিস্থিতি বুঝে লঙ্কানরা চালিয়ে গেছে ইনিংস। চাপ তৈরি হলে হয়েছে জুটি। সবচেয়ে কাজের কাজ করেছেন সাদেরা। এই ব্যাটার দলের বিপদে নেমে পুরো ইনিংস ব্যাট করে দলকে এনে দেন আড়াইশ ছাড়ানো পুঁজি। যা নিয়ে এই মাঠে জেতার কাজ করেছেন তাদের বোলাররা।

Comments

The Daily Star  | English
Anti-Discrimination Students Movement

Students to launch a party by next Feb

Student leaders who spearheaded the July-August mass uprising are planning to launch a political party by early February 2025 and contest the next general election.

7h ago