জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ: হাছান মাহমুদ
বিএনপির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া উচিত মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জানিয়েছেন, তার দল ইতোমধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।
আজ রোববার দুপুরে সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।
বাংলাদেশে সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'নির্বাচন কমিশন স্বাধীন, তারা যখন নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করবে...এটি তাদের এখতিয়ার। নির্বাচন কমিশন যে সময় তফসিল ঘোষণা করবে আমরা; বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সে অনুযায়ী নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুত আছি। আমাদের প্রস্তুতি চলছে।'
তিনি বলেন, 'বিএনপির উদ্দেশ্য হচ্ছে, সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা, গণতন্ত্রকে ভূলুণ্ঠিত করা। যেটি তারা ২০১৪ সালে করার চেষ্টা করেছিল। ২০১৮ সালের নির্বাচনে গিয়েও নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করেছে।'
'তাদের ১৪ সালের সেই ধরনের প্রচেষ্টা করা কখনো সম্ভবপর নয়। সে অপচেষ্টা চালালে দেশের জনগণ প্রতিহত করবে। বিএনপি নেতারা নির্বাচন বর্জন করতে পারে। যে কোনো রাজনৈতিক দলের নির্বাচন বর্জন করার বা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার অধিকার আছে। আমি যেটি মনে করি, বিএনপি যদি একটি দায়িত্বশীল দল হয় তাহলে অবশ্যই তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিত। কারণ গণতন্ত্রকে সংহত করা শুধুমাত্র সরকারি দলের দায়িত্ব নয়। গণতন্ত্রকে সংহত করা, গণতন্ত্রের অভিযাত্রাকে অব্যাহত রাখা সব রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব,' বলেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, 'এরপরও যে কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করার অধিকার রাখে। তাই বলে নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা করা হলে দেশের মানুষ সেটি কঠোর হস্তে দমন করবে।'
সম্প্রতি ড. ইউনূসের পক্ষে ১৬০ জন নোবেল বিজয়ী চিঠি দিয়েছেন সরকারের কাছে তার মামলা নিয়ে। এর পরে আমরা দেখলাম সম্পাদকদের পক্ষ থেকে ৫০ জন চিঠি দিয়েছেন—এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'ফেসবুকে আমি দেখলাম যে, ড. ইউনূস তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হচ্ছেন। আবার এটাও দেখেছি, হিরো আলমকে বিএনপি পছন্দ করেছে। আসলে এগুলো ফেসবুকের প্রচার-অপ্রচার, যা-ই বলেন। এগুলো নিয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না।'
তিনি বলেন, 'কেউ নোবেল পুরস্কার পেলে কিংবা রাষ্ট্র প্রধান হলে বা প্রধানমন্ত্রী হলে, তিনি তো আইনের ঊর্ধ্বে নন। এ দেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিচার হয়েছে এবং তিনি সাজা ভোগ করছেন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নোবেল বিজয়ীদের বিচার হয়েছে এবং তারা জেলও খেটেছেন এমন ঘটনা আছে।'
'আমাদের বিচার প্রক্রিয়া অত্যন্ত স্বচ্ছ। ড. ইউনূস সাহেবের প্রতি যথার্থ সম্মান ও শ্রদ্ধা রেখেই বলতে চাই, তিনি দেশের একজন জ্যেষ্ঠ নাগরিক। নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। সত্যটা হচ্ছে এই, শ্রমিকদের ৫ শতাংশ হারে লভ্যাংশ দেওয়ার কথা ছিল। যেটির মূল্য হচ্ছে ১২ শ কোটি টাকা। সেটি তিনি জালিয়াতির মাধ্যমে এবং ঘুষ প্রদান করে সেটিকে ৪০০ কোটি টাকায় নামিয়েছেন। সেটিও তিনি প্রদান করেননি। সে জন্য বিচার হচ্ছে। আরও অনেক মামলা আছে,' বলেন হাছান মাহমুদ।
তিনি আরও বলেন, 'আমাদের দেশের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে বিবৃতি দেওয়া দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের ওপর হস্তক্ষেপের সামিল। সে জন্য বাংলাদেশের সচেতন নাগরিক সমাজ এবং সাংবাদিকরা এর বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছেন।'
Comments