কলমাকান্দায় আ. লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত অর্ধশতাধিক

নেত্রকোনার কলমাকান্দায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও কয়েক দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ছবি: সংগৃহীত

নেত্রকোণার কলমাকান্দায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও কয়েক দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

আজ শুক্রবার দুপুর ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে এ সংঘর্ষে চলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলি ছুড়েছে পুলিশ।

সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দুই দলের নেতাকর্মীরা।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে মিছিল বের করে নেতাকর্মীরা কলমাকান্দা সদরের বিএনপি কার্যালয়ে আসতে শুরু করে।

সেসময় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদের বাধা দেয়। এক পর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসলাম উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা ধারালো অস্ত্রসহ লাঠিশোটা নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করেছে। এ সময় তারা দোকানপাট ভাঙচুর করে।'

হামলায় ইউপি সদস্য ও কলমাকান্দা সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক, যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম, বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, মাসুম মিয়া, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক অমিত সরকার, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা বাবুল মিয়া, দেলোয়ার হোসেন, যুব শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক মিয়াসহ ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, 'গুরুতর আহত এমদাদুল হককে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।'

পাল্টা অভিযোগ করে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এমএ খায়ের বলেন, 'আমরা বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠান করার জন্য অনুমতি পেতে থানায় আবেদন করি। কিন্তু থানা থেকে অনুমতি দেয়নি। তাদের বাঁধার মুখে উপজেলা দলীয় কার্যালয়ে আমরা দলীয় পতাকাও উত্তোলন করতে পারিনি। বাজারের পশ্চিমে মারকাছ মসজিদ এলাকায় আমাদের বেশিরভাগ লোক অবস্থান করছিল। পরে দুপুরে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে নেতাকর্মীরা অফিসের দিকে শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে আসতে থাকলে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা লগি-বৈঠা নিয়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।'

পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তিনি বলেন, 'পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীর ওপর ফাঁকা গুলি চালিয়েছে। আমাদের অন্তত ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে আজ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত আমাদের ৩ নেতাকর্মীকে পুলিশ আটক করেছে।'

উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক গোলাম রসুল, সদস্য সচিব শেখ রবিন, সদস্য মাজহারুল ইসলাম হৃদয়, সোহানুর রহমান সোহান, শ্রমিকদল নেতা রুবেল মিয়া, যুবদল নেতা ভুট্টু মিয়া, স্বপন মিয়া, তাইমুল হক, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা খোকন মিয়াসহ বিএনপির অনেক নেতাকর্মী হামলায় আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।

সংঘর্ষে পুলিশের কয়েকজন সদস্যও আহত হয়েছেন। তারা হলেন—এএসআই মামুন ইবনে হেলাল, এএসআই শরিফ উদ্দিন, এএসআই আসাদুজ্জামান ও পুলিশ সদস্য সাজাদ হোসেন।

কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম বলেন, 'বিএনপির নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র ও লাটিশোটা নিয়ে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এসময় নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। হামলায় পুলিশের ৪ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদেরকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।'

'এ ঘটনা এখন পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। তবে পুলিশের ওপর হামলা ও কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মামলার প্রস্তুতি চলছে,' বলেন তিনি।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও উত্তেজনা থাকায় ওই এলাকায় পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Enforced disappearances: Eight secret detention centres discovered

The commission raised concerns about "attempts to destroy evidence" linked to these secret cells

4h ago