ইউক্রেনের শস্যভাণ্ডারে রুশ হামলা

ক্ষুধা-দুর্ভিক্ষ ঝুঁকিতে দরিদ্র দেশের কোটি মানুষ

ক্ষুধা-দুর্ভিক্ষ ঝুঁকি
ইউক্রেনের ওডেসা অঞ্চলে রুশ হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত এক কৃষিপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের শস্যভাণ্ডার। ২১ জুলাই ২০২৩। ছবি: রয়টার্স

ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি কেন্দ্রগুলোয় রাশিয়ার চতুর্থ দিনের মতো হামলার কারণে বিশ্বব্যাপী খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ায় দরিদ্র দেশগুলোর কোটি কোটি মানুষ ক্ষুধা-দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে পড়ছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ।

গতকাল শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল রাশিয়া চতুর্থ দিনের মতো ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি কেন্দ্রগুলোয় হামলা চালায় এবং কৃষ্ণসাগরে ইউক্রেনের শস্যবাহী জাহাজ জব্দ করে।

গত ১৭ জুলাই জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় সই করা 'কৃষ্ণসাগর শস্য চুক্তি' নবায়নে রাশিয়া রাজি না হওয়ায় সাগরপথে ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর মস্কোর নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে কিয়েভ শস্য রপ্তানির ঘোষণা দিলে দেশটির শস্য রপ্তানিকেন্দ্রগুলোতে হামলা চালাতে শুরু করে রাশিয়া।

রুশ হামলার ফলে বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই রুট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্যের দাম বাড়তে শুরু করে। এমন পরিস্থিতিতে গরিব দেশগুলোয় খাবারের অভাব দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘের ত্রাণ-সহায়তা বিভাগের প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস নিরাপত্তা কাউন্সিলকে বলেন, 'অনেকে না খেয়ে থাকবে, দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। এর ফলে অনেকের মৃত্যু হতে পারে।'

ইউক্রেনের ওডেসা অঞ্চলের গভর্নর ওলেহ কিপার গণমাধ্যমকে বলেন, 'ওডেসা অঞ্চলে এক কৃষিপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের শস্যভাণ্ডারে রুশ বিমান হামলায় অন্তত ১০০ টন ডাল ও ২০ টন বার্লি নষ্ট হয়েছে।'

মস্কো এই হামলাকে ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার তৈরি সেতুতে হামলার প্রতিশোধ হিসেবে উল্লেখ করেছে।

রাশিয়া বলেছে, কৃষ্ণসাগর নৌবহর প্রতিটি 'লক্ষ্যবস্তু'তে আঘাত করছে। ইউক্রেনগামী যেকোনো জাহাজ অস্ত্র বহন করছে বলে ধরে নেওয়া হতে পারে। অন্যদিকে, ইউক্রেন বলেছে তারাও রাশিয়াগামী যেকোনো জাহাজকে হামলার 'লক্ষ্যবস্তু' বলে গণ্য করবে।

২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেশী ইউক্রেনে পরাশক্তি রাশিয়া আগ্রাসন চালালে বিশ্বব্যাপী খাদ্যশস্য সরবরাহ বাধা পায়। ফলে খাদ্যপণ্যের দাম ক্রমাগতভাবে বাড়তে থাকে।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, কৃষ্ণসাগর শস্য চুক্তির ফলে গত বছরের মার্চ থেকে গরিব দেশগুলোয় খাদ্যপণ্যের দাম বৈশ্বিক দামের তুলনায় ২৩ শতাংশের বেশি কম রাখা গিয়েছিল।

রাশিয়ার অভিযোগ—ইউক্রেনের খাদ্যশস্য যথেষ্ট পরিমাণে গরিব দেশগুলোয় পৌঁছাচ্ছে না। বিশ্ববাজারে রাশিয়ায় উৎপাদিত খাদ্যশস্য ও সার বিক্রি সংক্রান্ত দাবিগুলো চুক্তিতে মেনে নেওয়া না হলে মস্কো কৃষ্ণসাগর দিয়ে নিরাপদে শস্য পরিবহন চুক্তি নবায়ন করবে না।

পশ্চিমের দেশগুলোর অভিযোগ, ইউক্রেনে আগ্রাসনের কারণে রাশিয়ার ওপর চলমান নিষেধাজ্ঞাগুলো শিথিল করতে ক্রেমলিন নতুন কৌশল নিচ্ছে।

বাতিল হয়ে যাওয়া চুক্তি শর্ত অনুসারে, ইউক্রেনের মতো রাশিয়ার খাদ্যপণ্যবাহী জাহাজগুলো অবাধে কৃষ্ণসাগর দিয়ে যাওয়া-আসা করতে পারতো।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh lost over Tk 226,000cr for tax evasion: CPD

CPD estimated that around 50 percent of this amount has been lost to corporate tax evasion.

3h ago