‘ভোটার না, ভাই-ব্রাদার ডাকছে তাই আসলাম’
ভোটকক্ষে ভোটারের দেখা পাওয়া না গেলেও প্রার্থীদের সমর্থকদের আনাগোনায় কেন্দ্রের বাইরের চিত্র সরগরম।
ঢাকা-১৭ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে সকাল ১২টা পর্যন্ত ভোটার উপস্থিতি ছিল বেশ কম।
ভোটারদের সাহায্য করতে সব কয়টি ভোটকেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাতের সমর্থনে একাধিক অস্থায়ী অফিস বসেছে। শতাধিক নৌকার সমর্থকরা এই অফিসগুলোতে জড়ো হয়েছেন, স্লোগান দিচ্ছেন।
লিটল চাইল্ড কেয়ার স্কুল ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আব্দুল মোতালেব মিজান জানান, এই কেন্দ্রে ৩০৭৪ জন ভোটার আছেন। সকাল ১০টা ৪৭ মিনিট পর্যন্ত ভোট পড়েছে ২০১ টা।
তবে এই কেন্দ্রের বাইরে প্রায় দুই শতাধিক নারী-পুরুষের সমাগম দেখা গেছে। তাদের বেশিরভাগই নৌকার ব্যাজ পরিহিত ছিলেন।
তারা ভোটার কি না জানতে চাইলে ভাসানটেক থানাধীন দেওয়ানপাড়া ইউনিট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আন্না দেওয়ান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এখানের অনেকেই ভোট দিয়েছে। অনেকে পরে ভোট দেবে। অনেকে আবার ভোট দেখতে এসেছেন।'
লিটল চাইল্ড কেয়ার স্কুল ভোটকেন্দ্রের সামনে নৌকা ব্যাজ পরিহিত এক যুবক বলেন, 'আমি ভোটার না। ভাই-ব্রাদার ডাকছে তাই আসলাম।'
নৌকা প্রতীকের সমর্থকদের অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনেকে কাফরুল থেকে এসেছেন, কেউ কেউ এসেছেন মিরপুর থেকে। তারা এখানকার ভোটার নন।
ভোটারের উপস্থিতির বিষয়ে আন্না দেওয়ান বলেন, 'ভোটারের উপস্থিতি বাড়াতে আমরা কাজ করছি। আশা করছি দুপুরের পরে ভোটার বাড়বে। বিশেষ করে নারী ভোটাররা রান্নাবান্না, বাড়ির কাজ শেষ করে আসবেন।'
পশ্চিম ভাসানটেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের সামনে 'নৌকা' স্লোগানে নির্বাচনী পরিবেশ জমজমাট করে তুলেছেন শতাধিক নারী সমর্থক।
কেন্দ্রের বাইরে লাইন ধরে শতাধিক নারীদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। ভোট দিয়েছেন কি না জানতে চাইলে তারা বলেন, 'পরে ভোট দিব। এখন ভোটারদের সাহায্যের জন্য দাঁড়িয়েছি।'
এই ভোটকেন্দ্রের বাইরে নৌকার সমর্থকদের মধ্যে হট্টগোলও হয়েছে।
বাইরে বিপুল জনসমাগম হলেও দুপুর পর্যন্ত এই কেন্দ্রে মাত্র ৬ শতাংশ ভোট পড়েছে।
এ কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা জানান, কেন্দ্রটিতে ২৮৭৭ ভোটার আছেন। সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ২০০'র কিছু বেশি।
ভোটকেন্দ্রের বাইরে বেশ কয়েকজন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তারা ভোটার নন। আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে সমর্থন জানাতে এখানে এসেছেন।
ভাসানটেক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা এক নারীর সঙ্গে কথা হয় দ্য ডেইলি স্টারের। পরিচয় গোপন রাখার শর্তে তিনি জানান, তিনি বিআরপি এলাকা থেকে এসেছেন। তাকে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে বলা হয়েছে। তাই তিনি দাঁড়িয়ে আছেন।
সরকারি হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ভোটকেন্দ্রের বাইরেও নৌকা সমর্থকদের একই রকমের ভিড় দেখা গেছে।
কেন্দ্রের বাইরে নৌকার ব্যাজ পরে ঘোরাঘুরি করছিলেন হাবিব মাতুব্বর। তিনি বলেন, 'আমি মিরপুর টু আশুলিয়া বাসের কনডাক্টটর। এই এলাকার ভোটার নই। বন্ধুবান্ধব ডেকেছে তাই এসেছি।'
'আমি কোনো রাজনৈতিক দল করি না। বন্ধুদের অনুরোধে নৌকা প্রার্থীর ভলেনটিয়ার হিসেবে কাজ করছি। সারাদিন থাকব,' বলেন তিনি।
আয় রোজগার বাদ রেখে স্বেচ্ছাশ্রম দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এখানে আমাকে কোনো টাকা পয়সা দেবে না। দুপুরের খাবার দেবে। এখানে কাজ করে লাভ আছে। বন্ধুদের সাথে থাকলে পরে বন্ধুবান্ধবও বিপদে-আপদে আমার পাশে থাকবে।'
Comments