নেতার সাক্ষাৎ ঘিরে মিশিগানে আ. লীগের ২ গ্রুপের মারামারি

নাসির উদ্দিন খানের সঙ্গে বৈঠকে ২ গ্রুপের নেতাদের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনার সূত্রপাত হয় । ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে বাংলাদেশ থেকে ঘুরতে যাওয়া জেলা পর্যায়ের এক নেতার সংবর্ধনা ও সৌজন্য সাক্ষাৎ ঘিরে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের প্রবাসী নেতাদের মধ্যে মারামারি ঘটনা ঘটেছে।

দুই গ্রুপের মধ্যে রাস্তায় প্রকাশ্যে মারামারির ঘটনায় বিব্রত ও উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ কমিউনিটি।

প্রবাসী সংগঠকদের সূত্রে জানা যায়, সিলেট জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান পারিবারিক সফরে মিশিগান যান। গত ৩ জুলাই মিশিগান মহানগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের উদ্যোগে হ্যামট্রামেক সিটির গেইটস অব কলম্বাস হলে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া। সেখানে মিশিগান স্টেট আওয়ামী লীগ নেতারা অনুপস্থিত ছিলেন।

পরদিন সকালে মিশিগান স্টেট আওয়ামী লীগ সভাপতি ফারুক আহমদ চানের নেতৃত্বে সহযোগী সংগঠনসহ ১৫ জন নেতা-কর্মী হলব্রুকের একটি বাসায় নাসির উদ্দিন খানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। তাদের সাক্ষাতের আগেই ওই বাসায় উপস্থিত ছিলেন মিশিগান মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস শাকুর খান মাখন ও মিশিগান যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহিদুর রহমান চৌধুরী জাবেদ।

জানা যায়, মহানগর আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাদের গ্রুপের সঙ্গে স্টেট আওয়ামী লীগের নেতাদের প্রথমে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে বাসার বাইরে এসে তারা রাস্তায় হাতাহাতি-মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে মিশিগান স্টেট আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক আহমদ চান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা অতিথির সামনে মিশিগানের আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থান, নেতাদের কর্মকাণ্ড বিষয়ে তুলে ধরি। এই স্টেটে বাংলাদেশ দূতাবাসের কন্স্যুলেট সেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পেছনে যুবলীগ নেতা শাহিদুর রহমান চৌধুরী জাবেদের করা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির ঘটনাটি জানাই। হঠাৎ করে জাবেদ আমাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করতে থাকেন। আমার সঙ্গে থাকা যুবলীগ নেতারা ভালো আচরণের অনুরোধ জানালে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে বাসার ভেতরে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করেন।'

তিনি আরও বলেন, 'এসময় আমাদের অতিথি নাসির উদ্দিন খান খুবই বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন। পরে তিনি আমাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেন। কিন্তু আমরা সবাই বাসা থেকে বের হয়ে এলে জাবেদ যুবলীগের গুলজার আহমেদকে বোতল ছুঁড়ে মারলে পরিস্থিতি অন্যদিকে মোড় নেয়।'

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যুবলীগ নেতা জাবেদের পরিহিত সাদা পাঞ্জাবী টেনে ছিঁড়ে ফেলা হয় এবং তাকে কিল-ঘুষি মারা হয়। হ্যামট্রামেক সিটির পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

এ বিষয়ে যুবলীগ নেতা শাহিদুর রহমান চৌধুরী জাবেদ বলেন, 'বাসার বৈঠকে কনস্যুলেট সেবা বন্ধ হওয়ার পেছনে আমার ওপর দায় চাপানো হলে, আমি প্রতিবাদ জানাই। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হলেও কোনো খারাপ ব্যবহার করিনি। কিন্তু তারা বাইরে এসে আমার ওপর হামরা চালায়।'

এ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলার করার প্রস্তুতি নিচ্ছি, তিনি বলেন।

স্টেট আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক আহমদ চান অভিযোগ করেন, ঘটনার পর থেকে তাকে ও সাংগঠনিক সম্পাদক পাবেল আহমদকে মুঠোফোনে হুমকি ও গালিগালাজ করা হচ্ছে। হুমকির বিষয়ে দুই নেতাই স্থানীয় পুলিশ দপ্তরে রিপোর্ট করেছেন বলে জানান তিনি।

এই ঘটনা অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক মন্তব্য করে মিশিগান মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস শাকুর খান মাখন মোবাইল ফোনে বলেন, 'আমাদের নেতা নাসির উদ্দিন খান দুই পক্ষকে আলাপ-আলোচনা করে সমাধান করার নির্দেশ দিয়েছেন। আজ রোববারের মধ্যে নাসির ভাইয়ের উপস্থিতিতে আমরা মীমাংসা বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'

এ বিষয়ে চেষ্টা করেও সফরে থাকা সিলেট জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খানের সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

এ দিকে এমন ঘটনায় মিশিগানে বাংলাদেশ কমিউনিটির মধ্যে চলছে সমালোচনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই নেতিবাচক মন্তব্য করে দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

লেখক:  মিশিগানপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক

Comments

The Daily Star  | English

Nowfel gained from illegal tobacco trade

Former education minister Mohibul Hassan Chowdhoury Nowfel received at least Tk 3 crore from a tobacco company, known for years for illegal cigarette production and marketing including some counterfeit foreign brands.

10h ago