‘নিজের জিনিসপত্র ও শরীরের নিরাপত্তা নিজেকেই নিতে হবে’

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন ড. খ. মহিদ উদ্দিন মাঝে)। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেছেন, নিজের সঙ্গে থাকা জিনিসপত্র ও শরীরের নিরাপত্তা নিজেকেই নিতে হবে।

আজ সোমবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন খ. মহিদ উদ্দিন।

তিনি বলেন, 'একটি বিষয় জানিয়ে রাখি, ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের যে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে তা আরও গতিশীল করা হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শকের নির্দেশনা রয়েছে এবং তা বাস্তবায়ন করছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার। গত ৪৮ ঘণ্টায় আমরা ১৪৫ জন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছি। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ১১৪ জন এবং এর আগের ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ৩১ জন।'

ডিএমপির এই অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, 'এবার ঈদে পরপর দুটি ঘটনা সবাইকে নাড়া দিয়েছে। এর মধ্যে একটি ঘটনা হচ্ছে—ঈদের দিন রাতে হাতিরঝিল এলাকায় একজন সাংবাদিক ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ে আহত হয়েছেন। আর অন্য আরেকটি হচ্ছে আমাদের একজন পুলিশ কনস্টেবল ছিনতাইকারীর হামলায় ফার্মগেট এলাকায় নিহত হয়েছেন। এই ২ ঘটনায় পুলিশ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ডিসি এবং সব থানার থানার ওসিদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার। এ ছাড়া, আরও ছোটখাট কিছু ঘটনা রয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'ছিনতাকারীদের গ্রেপ্তারের পর আবার তারা জামিন নিয়ে বের হয়ে সমাজের মূল স্রোতধারায় মিশে যায়। পুলিশ হিসেবে এখানে আমাদের কিছু করার নেই। আবার সমাজ সম্পূর্ণ অপরাধমুক্ত হবে, এটা বাস্তবে কঠিন। ইংল্যান্ডের মতো দেশে ১ থেকে ২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকার পর কী অবস্থা হয়েছিল, তা আমরা দেখেছি। ইউরোপের মতো দেশেও প্রচুর চুরি হচ্ছে। তাদের তো অন্ন-বস্ত্রের অভাব নেই। আবার মোবাইল ফোনের মতো জিনিসপত্রের নিরাপত্তায় প্রত্যেকের নিজের সজাগ থাকা দরকার।'

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, 'আমাদের একটা জিনিস বুঝতে হবে, পার্সোনাল বিলংগিংস বা ব্যক্তিগত ছোটখাটো জিনিসপত্র ও নিজের শরীরের নিরাপত্তা প্রত্যেককে তার নিতে হবে। রাষ্ট্রের অবশ্যই নিরাপত্তার দায়িত্ব আছে। কিন্তু কেউ যদি রাতের বেলায় মুঠোফোনে কথা বলে... অনেকে গাড়ির মধ্যে বসে কথা বলে, কিন্তু মুঠোফোনটি বাইরে রাখেন। এতে টান দিয়ে নেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।'

মহিদ উদ্দিন আরও বলেন, 'সাংবাদিককে আহত করার ঘটনায় জড়িত হামলাকারীদের আমরা শনাক্ত করে ফেলেছি। এ বিষয়ে খুব দ্রুত আমরা সুসংবাদ দিতে পারব বলে আশা করি। কনস্টেবল মনিরুজ্জামানের হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৩ ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছি। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটিও জব্দ করতে সক্ষম হয়েছি। এ ঘটনায় আরও কিছু কাজ আমাদের বাকি রয়েছে। তবে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তার করতে পেরেছি।'

তিনি বলেন, 'যেকোনো উৎসবকে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগর পুলিশের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকে। ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগর পুলিশ রাস্তাঘাট, মার্কেট, শপিংমল ও কোরবানির পশুর হাট কেন্দ্রিক নির্বিঘ্ন নিরাপত্তা ব্যবস্থার আয়োজন করে। তারপরও অ্যাবসোলুট সিকিউরিটি বলতে কোনো কিছু নেই। যদি অ্যাবসোলুট সিকিউরিটি বলতে কিছু থাকতো, তাহলে হয়ত সারা বিশ্বে আলাদা করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রয়োজন হতো না।'

তিনি আরও বলেন, 'ঢাকার যেসব এলাকায় ঘটনাগুলো ঘটেছে, সেখানে দায়িত্বরত পুলিশের গাফিলতি ছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ডিসি ও ওসিদের জবাবদিহি করতে হচ্ছে।'

Comments

The Daily Star  | English

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

9h ago