টেকনাফ

অপহরণ যেখানে অপ্রতিরোধ্য

অপহরণ
প্রতীকী ছবি। স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা এলাকার রোহিঙ্গা ক্যাম্প ২৪-এর এক বাজার থেকে প্রায় ১৫-২০ জনের একটি দল এক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে পাশের পাহাড়ি জঙ্গলে নিয়ে যায়।

গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ঘটনাটি ঘটে।

বাজারের লোকজনকে ছত্রভঙ্গ করতে অপহরণের সময় ৪ রাউন্ড গুলিও ছোড়া হয়।

ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইউসুফ কালু (৪০) অপহরণের পর ৫ দিন পেরিয়ে গেলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখনো তার খোঁজ পায়নি।

এমনকি অপহৃত ইউসুফের স্বজনরাও তার নিরাপত্তার কথা ভেবে অপহরণের বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকার করেছেন।

ইউসুফ ছাড়াও একই উপজেলার হোয়াইকং ইউনিয়নের চকমারকুল এলাকার ক্যাম্প-২১ ও একই উপজেলার জাদিমোড়া এলাকার ক্যাম্প-২৬-এর আরও ৫ রোহিঙ্গা যুবক এখনো অপহরণকারীদের কাছে আছেন। তাদের মুক্তির জন্য অপরাধীরা মুক্তিপণ দাবি করছে।

এগুলো টেকনাফের ঘটনা। দিন দিন অপহরণ সেখানে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ মাসে এই উপজেলায় বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাসহ অন্তত ৭৯ জনকে অপহরণ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩ জনকে অপহরণকারীরা হত্যা করেছে এবং বাকিরা মুক্তিপণ দিয়ে মুক্তি পেয়েছেন।

সূত্র আরও জানায়, এসব ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩৯টি মামলা হয়েছে।

ক্যাম্প-২৪ থেকে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের অপহরণের বিষয়ে ক্যাম্প ২৪-এর পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাংলাদেশি ব্যবসায়ীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ অনেকের সামনে অপরাধীরা তুলে নিয়ে গেছে।'

'দিন দিন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় আমরা ক্যাম্পে সব সময় আতঙ্কের মধ্যে থাকি', যোগ করেন তিনি।

হ্নীলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলীর অভিযোগ, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাশে লেদা এলাকার বাসিন্দা ইউসুফকে অপহরণের সময় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা কাছাকাছি ছিল।

তিনি অভিযোগ করেন, তার এলাকার প্রধানত ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের লোকজন অপহরণের ভয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কাছে তাদের ফসলের জমিতে যেতে পারছেন না।

তিনি অপহরণের ঘটনার পেছনে রোহিঙ্গা অপরাধীদের দায়ী করেন।

অপহৃত ইউসুফের ভাই মোহাম্মদ হাসান সাংবাদিকদের জানান, অপহরণকারীরা তার ভাইয়ের মুক্তির জন্য ২৮ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে।

গত শুক্রবার রাত ৮টার দিকে শালবাগান-জাদিমোরা এলাকায় ২৬ নম্বর ক্যাম্পের ২ রোহিঙ্গা যুবক রবি আলম (২৬) ও মোহাম্মদ ইলিয়াসকে (২৩) ১০-১২ অস্ত্রধারী অপহরণ করে বলে ডেইলি স্টারকে জানান, ওই ক্যাম্পের পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান (প্রধান মাঝি) বদরুল ইসলাম।

গত বুধবার সন্ধ্যায় হোয়াইকং ইউনিয়নের চামারকুল এলাকা থেকে ২১ নম্বর ক্যাম্পের রাজিম উল্লাহ (২৫), রিয়াজ উদ্দিন (২১) ও মজিবুল্লাহকে (২৬) অপহরণ করা হয়।

পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে ক্যাম্প ২১-এর কমিউনিটি নেতা (মাঝি) মোহাম্মদ আজিজ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অপহরণকারীরা প্রত্যেক রোহিঙ্গা যুবকের মুক্তির জন্য ২ লাখ টাকা করে দাবি করেছে।'

তিনি আরও বলেন, 'অপহরণকারীরা ওই যুবকদের নির্যাতন করছে এবং মুক্তিপণের দাবি পূরণ না হলে তাদের হত্যার হুমকি দিয়েছে।'

ক্যাম্প ২১, ২৪ ও ২৬ ক্যাম্প আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী ১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের নিয়ন্ত্রণাধীন।

মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে ক্যাম্পের কমান্ডিং অফিসার অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. হাসান বারী নূর এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন।

Comments

The Daily Star  | English

BB keeps policy rate unchanged 

BB said the 10 percent policy rate would remain in place for the July-December period

42m ago