ডা. সংযুক্তার অধীনেই ভর্তি হয়েছিলেন আঁখি: সেন্ট্রাল হাসপাতাল
ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনেই মাহবুবা রহমান আঁখি ভর্তি হয়েছিলেন বলে জানিয়েছে ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
আজ বুধবার সকালে হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মো. মামুনুর রশীদ রাসেল এ কথা জানান।
তিনি বলেন, 'ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনেই মাহবুবা রহমান আঁখি সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ভর্তির আগে মাহবুবার স্বামী ইয়াকুব আলী ডা. সংযুক্তার পিএস ও গাড়িচালক মো. জমিরের সঙ্গে যোগাযোগ করে হাসপাতালে রাত ১২টার একটু পর পৌঁছান। এরপর ডা. সংযুক্তার অধীনেই তাকে ভর্তি করা হয়।'
'কিন্তু ডা. সংযুক্তা এর আগে রাত সাড়ে ৯টায় হাসপাতাল ত্যাগ করেন। হাসপাতাল ত্যাগ করার বিষয়টি তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানাননি। আমরা ভোর ৪টার দিকে বিষয়টি জেনেছি', যোগ করেন তিনি।
মামুনুর রশীদ রাসেল আরও বলেন, 'আমাদের কাছে সব ডকুমেন্ট আছে। তদন্ত শেষ করে আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাব।'
এর আগে গতকাল নিজ বাসায় করা সংবাদ সম্মেলনে ডা. সংযুক্তা সাহা বলেছিলেন, মো. জমির হাসপাতালের কর্মচারী।
মাহবুবা রহমান আঁখি ও তার নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছেন তিনি।
ডা. সংযুক্তার ভাষ্য, আঁখিকে যখন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, তখন তিনি হাসপাতালে ছিলেন না। তাকে না জানিয়েই ওই রোগীকে ভর্তি করা হয়েছে।
গত ৯ জুন সেন্ট্রাল হাসপাতালে সি-সেকশন সার্জারির সময় এক নবজাতকের মৃত্যু হয় এবং মায়ের অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। গতকাল সোমবার মাহবুবা রহমান আঁখি অপর একটি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
আঁখির স্বামী ইয়াকুব আলী চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় অবহেলা ও মিথ্যাচারের অভিযোগ এনে গত বুধবার ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন।
অভিযোগে বলা হয়, রোগী ও তার পরিবারকে সার্জারির আগে বলা হয়েছিল যে ডা. সংযুক্তা সাহা অপারেশন করবেন। হাসপাতালে তাকে ওই চিকিৎসকের অধীনে ভর্তি করা হলেও ডা. সংযুক্তা সাহা দেশেই ছিলেন না। অন্য চিকিৎসকের মাধ্যমে স্বাভাবিক প্রসবের চেষ্টা ব্যর্থ হলে তখন অস্ত্রোপচার করে বাচ্চা বের করা হয়। পরদিন মারা যায় শিশুটি।
এ ঘটনায় ঢাকার একটি আদালত হাসপাতালটির ২ চিকিৎসককে কারাগারে পাঠিয়েছেন। মামলার পর থেকে জমির পলাতক বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গত শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লিখিতে আদেশে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ডা. সংযুক্তাকে হাসপাতালে সেবা দেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
আজ বুধবার সকাল ১০টায় সংবাদ সম্মেলন করার কথা থাকলেও তা স্থগিত করেছে ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালটির পরিচালনা পর্ষদের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা. এমএ কাশেম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে তদন্ত শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা সংবাদ সম্মেলন করতে পারব না। তদন্ত কমিটি আরও ৭ দিন সময়ে চেয়েছে। আমরা তাদেরকে আগামী ৪ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে বলেছি।'
হাসপাতালের অভিযোগ বিষয়ে জানতে আজ দুপুর ১২টায় সংযুক্তা সাহাকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ধরেননি। ক্ষুদেবার্তা পাঠালেও জবাব দেননি।
Comments