টোকিওতে শিল্পী রওনক জাহানের চিত্র প্রদর্শনী ও কবিতার বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

রওনক জাহানের বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও একক চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন। ছবি: সংগৃহীত

আয়োজনটি ছিল ব্যতিক্রম এবং চমকপ্রদ। সাধারণত প্রবাসের কোনো আয়োজন মানেই তা গান-বাজনা নির্ভর। সম্প্রতি জাপানে টোকিওর মতো ব্যস্ততম নগরীতে একজন শিল্পীর চিত্র প্রদর্শনী এবং একজন কবির বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের সেই আয়োজনটি ছিল অভিনব।

বলে রাখা দরকার, এই চিত্রশিল্পী ও কবি একই ব্যক্তি। তিনি জাপান প্রবাসী রওনক জাহান। এই দুই পরিচয়ের বাইরেও তিনি একজন কণ্ঠশিল্পী। তার কণ্ঠে গান হয়ে ওঠে অসাধারণ।

জাপানে কণ্ঠশিল্পী, চিত্রশিল্পী, কবি রওনক জাহানের বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও একক চিত্র প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছিল তার আঁকা ১০০টিরও বেশি চিত্রকর্ম।

কণ্ঠশিল্পী, চিত্রশিল্পী, কবি রওনক জাহান। ছবি: সংগৃহীত

জাপানে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশিরা ছাড়াও জাপানিরা তার এই চিত্র প্রদর্শনী দেখতে আসেন।

কবি রওনক জাহান কবিতা লেখেন প্রকৃতি নিয়ে। শিল্পী রওনক জাহান আঁকেন প্রকৃতির চিত্র। প্রকৃতি তার প্রেম। তার কবিতা আর চিত্রকলার বিষয় কেবলই প্রকৃতি।

প্রকৃতি নিয়ে রওনক জাহানের এই আয়োজনে বাংলাদেশ থেকে আমন্ত্রিত হয়ে জাপানে গিয়েছিলেন চ্যানেল আইয়ের পরিচালক এবং প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু। চ্যানেল আইয়ের 'প্রকৃতি ও জীবন' অনুষ্ঠান দিয়ে তিনি দেশব্যাপী পরিচিতি পেয়েছেন। প্রকৃতিপ্রেমী মুকিত মজুমদার বাবু ছিলেন রওনক জাহানের বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও চিত্র প্রদর্শনীর প্রধান অতিথি। আয়োজনে বিশেষ অতিথি ছিলেন দ্য ডেইলি স্টার বাংলার সম্পাদক গোলাম মোর্তোজা।

জাপানের স্থানীয় প্রবাসী বাংলাদেশি সুধীজন, কবি, রাজনীতিবিদরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

বক্তব্য রাখছেন আয়োজনের প্রধান অতিথি ‘প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন’র চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু। ছবি: সংগৃহীত

অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী আয়োজনে প্রকৃতি বিষয়ে নিজের কাজ তুলে ধরে মুকিত মজুমদার বাবু বলেন, 'প্রকৃতিই আমাদেরকে বাঁচিয়ে রাখে, কাজেই প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। প্রকৃতিকে নিয়ে আমরা যত কাজ করবো, মানুষের সামনে তুলে ধরব, প্রকৃতির প্রতি বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ততই প্রেম জন্মাবে। সারা পৃথিবীর প্রকৃতিকে রক্ষা করতে হবে আমাদের।'

চিত্র প্রদর্শনী এবং বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান। ছবি: সংগৃহীত

গোলাম মোর্তোজা তার বক্তব্যে বলেন, 'বাংলাদেশের চিত্রকলা পৃথিবীর প্রথম শ্রেণীর শিল্পের সঙ্গে সামঞ্জস্যতা রেখে এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশের চিত্রকলা পৃথিবীর যেকোনো দেশের চিত্রকলার সঙ্গে তুলনীয়। বাংলাদেশের শিল্পীরা ইউরোপে অবস্থান করছেন, আন্তর্জাতিক পুরস্কার পাচ্ছেন। ফ্রান্স, স্পেনের মতো দেশে তারা জাতীয় পুরস্কার পাচ্ছেন।'

জাপানে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশিরা ছাড়াও জাপানিরা এই চিত্র প্রদর্শনী দেখতে আসেন। ছবি: সংগৃহীত

তিনি আরও বলেন, 'এমন একটি জায়গায় অবস্থান করে শিল্পী রওনক জাহান যে ছবি আঁকছেন, সেগুলো আন্তর্জাতিক মানের। পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের যেকোনো মানুষ এই ছবি দেখে মুগ্ধ হবেন। তিনি অত্যন্ত ইতিবাচক একটি কাজ করছেন।'

এ ছাড়া, অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জাপানের স্বরলিপি কালচারাল একাডেমির উপদেষ্টা মুন্সী একে আজাদ, ব্যবসায়ী নাসিরুল হাকিম, জাপানের মূলধারার অভিনয়শিল্পী ও মডেল জুয়েল এমকিউ, সাংবাদিক কাজী ইনসানসহ আরও অনেকে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন স্বরলিপি কালচারাল একাডেমির উপদেষ্টা মুন্সী একে আজাদ (বামে) ও নাসিরুল হাকিম (ডানে)। ছবি: সংগৃহীত

বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল টোকিওর একটি হলরুমে। হলরুম ভর্তি দর্শক এই আয়োজন উপভোগ করেছেন, যা একেবারেই ব্যতিক্রমী একটি ঘটনা। আয়োজনে আলোচনা অনুষ্ঠানে মুকিত মজুমদার বাবু, গোলাম মোর্তোজাসহ অন্যান্য বক্তারা রওনক জাহানের কবিতার প্রশংসা করেন।

সোমার উপস্থাপনায় এই আয়োজনে রওনক জাহানের কবিতা অসাধারণভাবে আবৃত্তি করেন জাপানপ্রবাসী বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি। আয়োজনের শেষাংশে রওনক জাহানের কণ্ঠে গান অতিথিদের মুগ্ধ করে। আপ্যায়নের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।

জাপানের স্থানীয় প্রবাসী বাংলাদেশি সুধীজন, কবি, রাজনীতিবিদরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ছবি: চ্যানেল আইয়ের সৌজন্যে

জাপানের প্রবাসী বাঙালি কমিউনিটিতে অনেক ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। কিন্তু, একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও চিত্র প্রদর্শন নিয়ে এত বড় আয়োজন জাপানে এই প্রথম।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh alleges border abuse by BSF

Those pushed-in allege torture, abuses in India

A Bangladeshi woman has alleged that India’s Border Security Force (BSF) tied empty plastic bottles to her and her three daughters to keep them afloat, then pushed them into the Feni river along the Tripura border in the dark of night, in a chilling account of abuse at the border.

6h ago