বন্দর নগরীতে এবার ঈদে অস্থায়ী ৯টিসহ মোট ১২ পশুর হাট

চট্টগ্রামের একটি পশুর হাট। ছবি: স্টার ফাইল ফটো

ঈদুল আজহা উপলক্ষে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) বন্দরনগরীতে মোট ২৩টি অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর অনুমতি চাইলেও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন মাত্র ৯টি অস্থায়ী হাট বসানোর অনুমতি দিয়েছে।

সূত্র জানায়, জেলা প্রশাসন ১৪টি শর্তে ৯টি অস্থায়ী পশুর হাট স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছে। এসব শর্তের বেশিরভাগই স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা, জনসাধারণের উপদ্রব এড়ানো এবং সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সঙ্গে সম্পর্কিত।

এ ছাড়া, চসিকের ৩টি স্থায়ী গরুর হাটে কোরবানির পশু পাওয়া যাবে। অর্থাৎ চলতি বছরে চসিকের ব্যবস্থাপনায় মোট ১২টি পশুর হাট থেকে নগরবাসী কোরবানির পশু কিনতে পারবেন।

জানতে চাইলে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাকিব হাসান বলেন, 'এ বছর ঈদুল আজহা উপলক্ষে ২৩টি অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর জন্য চসিক কর্তৃপক্ষ অনুমোদন চেয়েছিল। সবকিছু বিবেচনা করে আমরা মোট ৯টির জন্য চসিককে অনুমতি দিয়েছি।'

তিনি বলেন, 'আমরা ১৪টি শর্তে এই হাটগুলো বসানোর অনুমোদন দিয়েছি।'

চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, 'অনুমোদন পাওয়া ৯টি হাটের ইজারা খুব শিগগির দেওয়া হবে।'

তিনি বলেন, 'আমরা ইতোমধ্যেই এর জন্য দরপত্র আহ্বান করেছি। দরপত্র সংগ্রহের শেষ সময় ১৭ জুন এবং দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ১৮  জুন। ১৮ জুন দরপত্রগুলো মূল্যায়নের জন্য খোলা হবে।'

সাধারণত ঈদুল আজহার ১০ দিন আগে কোরবানির পশুর হাট বসা শুরু হয় জানিয়ে তিনি বলেন, 'এ বছর ২০ জুন হাট শুরু হবে এবং ঈদের আগের দিন পর্যন্ত চলবে।'

৯টি অস্থায়ী পশুর হাট হলো—বাকালিয়ার নূরনগর হাউজিং এস্টেট মাঠ, পতেঙ্গার খেজুরতলা বাঁধ সংলগ্ন মাঠ, পতেঙ্গার হোসেন আহমেদ পাড়া সংলগ্ন টিএসপি মাঠ, পতেঙ্গায় মুসলিমাবাদ রোড, পাঁচলাইশের ওয়াজেদিয়া মোড়, আউটার রিং রোডে সিডিএ মাটির মাঠ, হালিশহর বড় পোলের গোডাউন এলাকা, সল্টগোলা রেলওয়ে ক্রসিং সংলগ্ন মাঠ এবং দক্ষিণ পতেঙ্গার বাটারফ্লাই পার্কের দক্ষিণে টিকে গ্রুপের খালি মাঠ।

এ ছাড়া, ৩টি স্থায়ী পশুর হাট হচ্ছে—সাগরিকা বাজার, বিবিরহাট বাজার ও পোস্তারপাড় ছাগলের হাট।

চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আলমগীর বলেন, 'কোরবানির পশুর হাটে সেবা দেওয়ার জন্য মোট ৩০টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। মেডিকেল টিম ক্রেতাদের কাছে কোরবানির পশুর স্বাস্থ্যের অবস্থা নিশ্চিত করবে।'

অস্থায়ী হাটের জন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ১৪টি শর্তের মধ্যে রয়েছে—অস্থায়ী পশুর হাট প্রধান সড়ক থেকে কমপক্ষে ১০০ গজ দূরে সুবিধাজনক স্থানে স্থাপন করতে হবে, যাতে কোনো অবস্থাতেই প্রধান সড়কে যান চলাচল ব্যাহত না হয়; পশুর বাজারের সীমানার বাইরে বা রাস্তায় কোনো পশু রাখা বা খুঁটি গাড়া যাবে না; সংক্রমণ রোধে পশুর হাটে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

এ ছাড়া, কোরবানির পশুর অস্থায়ী হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য একমুখী চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে। পাশাপাশি সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে, তা নিশ্চিত করতে হবে। বাজারে কোনো জটিলতা এড়ানোর বিষয়ে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে; বৃদ্ধ ও শিশুদের পশুর হাটে প্রবেশে নিরুৎসাহিত করতে হবে; পশুর হাটে ইজারাদারদের অবশ্যই তাদের নিজস্ব পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করতে হবে; সব বাজারে পশুর স্বাস্থ্য যাচাই করার জন্য পশুচিকিৎসক সার্জনের উপস্থিতি নিশ্চিত করাসহ মেডিকেল টিমের সার্বক্ষণিক উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে; বাজার এলাকা নিজ দায়িত্বে পরিষ্কার করতে হবে; পশুর হাটের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ইজারাদারদের সিসিটিভি ক্যামেরা বসাতে হবে।

রাস্তায় পশু পরিবহনের সময় ইজারা গ্রহীতা বা তার মনোনীত প্রতিনিধি পশু পরিবহনের যানবাহনকে রুট পরিবর্তন করতে কোনো প্রকার চাপ প্রয়োগ বা কোনো পশু বিক্রেতাকে তার নিজস্ব হাটে নিয়ে যেতে বাধ্য করতে পারবেন না।

Comments