পাসওয়ার্ড শেয়ারিং বন্ধের পর গ্রাহক বেড়েছে নেটফ্লিক্সে
পাসওয়ার্ড শেয়ারিং বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর নেটফ্লিক্সের প্রচুর সমালোচনা করেছিল গ্রাহকরা। তবে বাস্তবতা দেখা গেল ভিন্ন। ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মটি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে পাসওয়ার্ড শেয়ারিং বন্ধ করে দেওয়ার পর দেখা গেছে তাদের সাবসক্রাইবার সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ব্যাপক সমালোচনা ও উদ্বেগ থাকলেও আপাতত এই সিদ্ধান্তের সুফলই পাচ্ছে নেটফ্লিক্স।
নেটফ্লিক্সের সাম্প্রতিক পদক্ষেপের ফলে গ্রাহকরা তাদের পরিবারের বাইরে অন্য কারও সঙ্গে অ্যাকাউন্ট ভাগাভাগি করতে পারবেন না। সাবক্রিপশন অ্যানালিটিক্স প্রতিষ্ঠান অ্যান্টেনার তথ্য অনুসারে, এই সিদ্ধান্তের ফলে নেটফ্লিক্সের সাবসক্রিপশন ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
প্রকৃতপক্ষে, গত মাসে নেটফ্লিক্স তাদের পাসওয়ার্ড নীতি পরিবর্তন করার পর টানা ২ দিন নেটফ্লিক্সে যতসংখ্যক নতুন গ্রাহক যুক্ত হয়, তা ২০১৯ সালে অ্যান্টেনা কর্তৃক নেটফ্লিক্স গ্রাহকের তথ্য সংগ্রহ শুরু করার পর থেকে সর্বোচ্চ।
নেটফ্লিক্সের নতুন পাসওয়ার্ড-শেয়ারিং নীতিমালা অনুসারে, গ্রাহককে তাদের পরিবারের বাইরে দুজন ব্যক্তির সঙ্গে তাদের অ্যাকাউন্ট ভাগাভাগি করে ব্যবহারের জন্য প্রতি মাসে অতিরিক্ত ৭.৯৯ মার্কিন ডলার ব্যয় করতে হবে। নেটফ্লিক্স অবশ্য আগে থেকেই বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে রেখেছিল, এই নীতির ফলে অনেকেই একাউন্ট বাতিল করে দিতে পারে। তবে এখনো পর্যন্ত বাতিল করার চেয়ে নতুন যুক্ত হওয়া গ্রাহকের সংখ্যাই বেশি।
সাবসক্রাইবার সংখ্যার এত বিশাল উত্থান সবশেষ দেখা গিয়েছিল ২০২০ সালের এপ্রিল ও মে মাসে। তবে সম্প্রতি পাসওয়ার্ড শেয়ারিং বন্ধ করার পর সাবসক্রাইবার সংখ্যা ২০২০ সালের ওই সময়কেও ছাড়িয়ে গেছে।
কিছুটা অবাক লাগছে? ২০২০ সালের এপ্রিল ও মে মাসে করোনাভাইরাস সংক্রমণ চূড়ায় উঠেছিল। তখন প্রায় সবাই ঘরবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছিল এবং নেটফ্লিক্সের মতো স্ট্রিমিং সেবাগুলোর চাহিদাও তুঙ্গে উঠেছিল। হ্যাঁ, নেটফ্লিক্সের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত সাবসক্রাইবার সংখ্যার দিক থেকে সেই সময়কেও ছাড়িয়ে গেছে।
অ্যান্টেনার তথ্য অনুসারে, গত ২৬ ও ২৭ মে ২ দিনই প্রতিদিন নেটফ্লিক্সে ১ লাখেরও বেশি নতুন গ্রাহক যুক্ত হয়েছেন। নেটফ্লিক্স গত ২৩ মে থেকে ই-মেইল মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবহারকারীদের হালনাগাদকৃত পাসওয়ার্ড নীতি সম্পর্কে অবহিত করা শুরু করে। সাবসক্রাইবার সংখ্যার এই বৃদ্ধি গত ৬০ দিনের গড়ের তুলনায় ১০২ শতাংশ বেশি।
অ্যান্টেনার তথ্য অনুসারে, গত মাসের একই সময়ে অ্যাকান্ট বাতিলের হারও বৃদ্ধি পেয়েছিল। যদিও যত নতুন গ্রাহক প্ল্যাটফর্মটিতে যোগ দিয়েছেন, তা চলে যাওয়া গ্রাহকদের তুলনায় অনেক বেশি।
'মে মাসের ২৩ তারিখের পর থেকে নতুন সাবসক্রিপশন ও বাতিলের অনুপাত গত ৬০ দিনের তুলনায় ২৫.৬ শতাংশ বেশি।'
যদিও নেটফ্লিক্সের এই সিদ্ধান্তের চূড়ান্ত প্রভাব বুঝতে আরও সময় লাগবে। আপাতত প্রতিষ্ঠানটির জন্য এটি ইতিবাচক হলেও পরবর্তীতে এই ফলাফল অব্যাহত থাকবে কি না, সেটি সময়ই বলে দেবে। অন্যান্য স্ট্রিমিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোও নেটফ্লিক্সের এই সিদ্ধান্তের প্রভাব মূল্যায়ন করবে এবং সে অনুসারে ব্যবস্থা নেবে।
সূত্র: ম্যাশেবল, দ্য ভার্জ
গ্রন্থনা: আহমেদ হিমেল
Comments